ঋদ্ধি সেন। ছবি: রণজিৎ নন্দী
নির্ধারিত দিনের সপ্তাহখানেক আগে হঠাৎ ফোন ঋদ্ধি সেনের। সাক্ষাৎকারের সময় বদলাতে হবে। পরদিনই মুম্বই যেতে হবে। অকস্মাৎ মুম্বই-যাত্রার দু’টো কারণ। এক, সঞ্জয় দত্তর যে কামব্যাক ছবিতে তিনি অভিনয় করছেন, সেই ছবির ডাবিং। আর দুই, নতুন এক হিন্দি ছবির জন্য প্রযোজকের সঙ্গে মিটিং।
প্র: মুম্বইতে কেউ পাকা বাচ্চা বলেছে?
উ: (হেসে) নাহ, বরং উল্টোটাই শুনতে হয়েছে। অনেকেই বলেছে আমি কেন কোনও কিছুতে নাক গলাই না!
প্র: এ বারের পুজো তো আপনার জন্য জমে গেল?
উ: যা বলেছেন। এক তো ফেলুদার ওয়েব সিরিজ আসছে। সঙ্গে ‘ভূমি’ ছবির রিলিজ। আমার প্রথম কমার্শিয়াল হিন্দি ছবি। জমে যাওয়ার অবশ্য আরও একটা কারণ রয়েছে। অষ্টমীর পরেই বাবা, মা আর আমি ঘুরতে যাচ্ছি রাজস্থান। ‘পার্চড’-এর সময় এত ঘুরেছি। আমিই গাইড হয়ে দেখাব ওই
সব জায়গা।
আরও পড়ুন: ‘আই ওয়ান্ট টু বি অ্যাট দ্য টপ’
প্র: ‘চিলড্রেন অফ ওয়ার’, ‘চৌরঙ্গা’, ‘পার্চ়ড’ হিন্দি ছবি হলেও ‘ভূমি’র মতো বড় মাপের ছিল না। এমন বড় ব্যানারের ছবি এত অল্প বয়সে কলকাতা থেকে...
উ: তখন ‘পার্চড’ রিলিজ করেছে। একদিন প্রযোজক সন্দীপ সিংহের ফোন এল। বললেন, ওঁরা ছবিটা দেখে মুগ্ধ। পরিচালক উমঙ্গ কুমার কথা বলতে চান। পরের দিন ফেসটাইমে ফোন উমঙ্গের। গল্পটা শুনিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আমি আগ্রহী কি না? আমি বললাম, বলছেন কী! রিভেঞ্জ ড্রামা। তার উপর সঞ্জয় দত্তর সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ। এমন সুযোগ কেউ ছাড়ে!
প্র: সেটে সঞ্জয় দত্ত কী বললেন?
উ: সে দারুণ অভিজ্ঞতা। অনেকে বলেন, উনি খুব মুডি। আমি পুরো উল্টো দেখলাম। দু’টোয় কল টাইম থাকলে দু’টো বাজতে দশে সেটে চলে আসতেন। আমার বাড়ির কথা জিজ্ঞেস করতেন। কলকাতার কথা শুনতেন। নিজে থেকেই জেলের নানা অভিজ্ঞতার কথা বলতেন। নিজের জীবন সম্বন্ধে ভীষণ খোলামেলা। একদিন গিরগাঁও বলে এক জায়গায় শ্যুটিং হচ্ছে। হঠাৎ বললেন, এই জায়গা থেকে ড্রাগ কেক এনে খেতেন! ভাবুন একবার! একদিন তো আমার একটা সিনের পর জড়িয়ে ধরলেন। বললেন, সাবাস।
প্র: কিন্তু বাংলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে না কেন?
উ: হুমমম... আমি তো আগেও বলেছি, টাকা রোজগারের তাড়া নেই। তাই স্ক্রিপ্টের ব্যাপারে আমি চুজি। (হেসে) আর সত্যি বলতে, এই ক’বছরে যত বাংলা ছবির অফার পেয়েছি, তার চেয়ে হিন্দি ছবির অফার পেয়েছি বেশি। নিজেও বাংলার কমফোর্ট জোন থেকে বেরোতে চাইছিলাম। বলিউডে কাজ পেতে তো আর বাবা-মায়ের পরিচয় দিতে হয়নি। বরং বাবা-মা এখন খুশি হন, যখন মুম্বইয়ের কেউ ওঁদের বলে ‘ঋদ্ধির বাবা-মা’।
প্র: টলিউডে কি দলাদলি বেশি?
উ: রাজনীতি বা দলাদলি তো এখন সব শিল্প মাধ্যমেই ঢুকে গিয়েছে। ওটা শুধু টলিউডের আলাদা সমস্যা নয়। নিজের মনের কথা বলে অনেককেই কাজ হারাতে দেখেছি। বাবা-মায়ের ক্ষেত্রেই হয়েছে। তবে এটুকু জানি, নিজের কাজটা ঠিকঠাক করতে পারলে বাকি সব কিছু সঠিক জায়গায় বসে যায়। বাংলায় কাজ নেই, তা তো নয়। ‘ফেলুদা’ সিরিজ আছে। পুজোর পর ‘সমান্তরাল’ রিলিজ করবে।
প্র: কিছু দুষ্টু লোক কিন্তু বলছে, তোপসের মধ্যে ইনোসেন্সের অভাব...
উ: শিল্প তো একটা তুলনামূলক মাধ্যম। এটা তো স্পোর্টস নয়। দৌড়ে যে জোরে ছোটে, সে প্রথম হয়। ছবির ক্ষেত্রে তেমনটা নয়। উডি অ্যালেন বলেছিলেন, সেরা সিনেমা বলে কিছু হয় না, প্রিয় সিনেমা হয়। তাই প্রত্যেকের আলাদা আলাদা মনে হতেই পারে। আমার শুধু একটাই বক্তব্য, তোপসে কিন্তু বোকা নয়। প্রত্যেকটা কেসে তোপসেরও কিছু না কিছু কনট্রিবিউশন আছে।
প্র: আচ্ছা। এই যে অনেকে দেখছে আপনাকে আর সুরঙ্গনাকে স্কুটারে ঘুরতে। সেটার কী কনট্রিবিউশন?
উ: হা হা হা। আরে, সে তো ‘ভূমি’তে অদিতি রাও হায়দারিকে স্কুটারে নিয়ে ঘুরতে হবে বলে প্র্যাকটিস করছিলাম। আরও অনেককে নিয়েও চালিয়েছি... (প্রায় ছ’মিনিট ধরে অনেকের নাম করলেন। ঋদ্ধিকে বলে দেওয়া হয়েছিল এটা এডিট করা হবে)
প্র: সুরঙ্গনার সঙ্গে পুজোর প্ল্যান কী আপনার?
উ: কলকাতার অংশটায় ও আছে। অনেকে বলে, অষ্টমীর বান্ধবী নবমীর প্ল্যান জানে না। (হেসে) আমার ক্ষেত্রে অবশ্য ব্যাপারটা তেমন নয়। সুরঙ্গনা আসলে একটা স্পেস দেয় যেখানে আমি আমার মতো থাকতে পারি। কোনও ইমেজ মেনটেন করতে হয় না। সেই কমফোর্ট জোনটা ওর থেকে পাই। আমি কিন্তু এটাকে প্রেম বলি না।
প্র: আর কেরিয়ারের প্ল্যান?
উ: একটা বলিউড ছবির কথা চলছে। মুম্বই গিয়ে প্রযোজকের সঙ্গে বসব। আর এ বছরের শেষে মৃত্যু নিয়ে একটা স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবির সিরিজ পরিচালনা করব ঠিক করেছি। জানেন, কিছু দিন ধরে এডিটিং নিয়ে খুব আগ্রহ জন্মেছে। ইচ্ছে আছে সেটা নিয়ে দেশে বা বিদেশে একটা ডিপ্লোমা করার।
লোকেশন সৌজন্য: স্টোরি, এলগিন রোড
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy