অভিনেত্রী আলেকজ়ান্দ্রা টেলর। ছবি: সংগৃহীত।
বসন্তের পড়ন্ত বিকেলে টলিপাড়ার বিদেশিনির বাড়িতে হাজির আনন্দবাজার অনলাইন। আলেকজ়ান্দ্রা টেলর। জন্মসূত্রে আইরিশ ও ব্রিটিশ। সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় সেরার শিরোপা। অভিনয় নিয়ে ইংল্যান্ডে সাত বছর পড়াশোনা। বয়স যখন কুড়ি, কলকাতায় পাড়ি দিলেন। ছোটবেলার গল্প বলতে গিয়ে বিষাদের ছায়া ধরা পড়ল চোখেমুখে। অভিনেত্রী জানালেন, “আমার কখনও কোনও বন্ধু ছিল না, জানি না কেন! আমার মনে হয় ইংল্যান্ডের সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই নই আমি। এই কথাটা আমি কোথাও প্রকাশ করি না, বিব্রত লাগে।”
সদাহাস্য, মিষ্টভাষী আলেকজ়ান্দ্রার বন্ধু নেই কেন? কিছু ক্ষণ নীরব থেকে অভিনেত্রীর উত্তর, “ওখানে লোকজন ঠোঁট চেপে রাখে সব সময়, নাকউঁচু, অহংকারী। আমি এ ধরনের মানুষ নই। আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাতে করে খাবার খেতে পারি স্বাচ্ছন্দ্যে। ছোট চায়ের দোকানে চা খেতে পারি অনায়াসে। কিন্তু আমি জানি ওখানে আমার পরিচিতেরা কোনও দিন এই সব করবে না।”
কফি সহযোগে চলল কথোপকথন। কোনও বাঙালি অভিনেতার সঙ্গে প্রেম হয়েছে? তাঁর সলজ্জ উত্তর, “মিথ্যে বলব না, যখন এসেছিলাম তখন বেশ কয়েকটা ডেটে গিয়েছিলাম। কফি খেতে গিয়েছিলাম একসঙ্গে।” তবে অভিনেতাদের নাম খোলসা করতে নারাজ অভিনেত্রী। বললেন, “সহ-অভিনেতাদের কথা প্রকাশ্যে বলতে চাইছি না। অধিকাংশ সহ-অভিনেতা তো সম্পর্কে রয়েছেন! প্রেমের কথা কেন জিজ্ঞেস করা হচ্ছে। কলকাতায় বন্ধু হলে ভালই লাগে। প্রেম হলে অবশ্যই জানাব, কথা দিচ্ছি। তবে আমি বাঙালি পুরুষকেই বিয়ে করতে চাই। ভবিষ্যতে কলকাতায় থাকতে চাই।”
কলকাতায় মানিয়ে নিতে অসুবিধার মুখোমুখি হতে হয়নি। বরং খুব কম সময়ে শহরের এক জন করে তুলেছেন নিজেকে। “ব্যক্তি হিসেবে আমি আকর্ষণীয়, দয়ালু ও আবেগপ্রবণ। কলকাতায় আমি ভাল ভাবে মানিয়ে নিতে পেরেছি। কারণ বাঙালিরাও একটু আবেগপ্রবণ, আমিও তাই। আমি বাংলা জানি না, কিন্তু শিখছি। আমি কলকাতা ভালবাসি,”।
কাজ আর পোষ্য নিয়ে দিব্য দিন কাটছে তাঁর। অহরহ মিষ্টি খেতে ভালবাসেন। “শহরতলির একটি রেস্তরাঁয় একসঙ্গে দশটি গোলাপ জামুন খেয়েছিলাম আমি। দেখেছেন, এখন আর বিদেশিনি নই আমি। চমচম, রসগোল্লা, গোলাপ জামুন খেতে ভাল লাগে।” তবে শুধু মিষ্টিতেই মজে থাকেন না। “আলুসেদ্ধ, ফুচকা, দোসা, পাওভাজি সবই ভাল লাগে। কিন্তু আমি জানি, পাওভাজি বাঙালিদের পদ নয়,” বললেন অভিনেত্রী।
প্রায়শই পাড়ি দিচ্ছেন মুম্বইয়ে। ঘটনা কী? “বনি কপূর ডেকেছিলেন। বলিউডে দু’টি ছবির কথা চলছে। তবে এই মুহূর্তে বিশদে কিছু বলতে পারব না।” কথার ফাঁকে সহসা উত্তেজিত আলেকজ়ান্দ্রা, “জানেন, মাকড়সায় আমি খুব ভয় পাই। কিন্তু কলকাতায় এসে এখনও পর্যন্ত একটাও মাকড়সা চোখে পড়েনি।”
জীবনে অনেকটা জায়গা জুড়ে রয়েছেন তাঁর মা। তাঁর কথায়, “মাকে ছাড়া আমার চলবে না। সাক্ষাৎকারে মায়ের কথা বলিনি এটা জানতে পারলে মা আমাকে মেরে ফেলবে। আমার বেঁচে থাকার কারণ মা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy