শেষশয্যায় অভিনেত্রী। রবিবারে রাতে কেওড়াতলা শ্মশানে ঐন্দ্রিলা শর্মার শেষকৃত্য হয়। —নিজস্ব চিত্র।
রবিবার রাত পৌনে ৮টা নাগাদ শ্মশান থেকে বার হলেন অভিনেত্রীর পরিবারের সদস্য-সহ প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরী। শেষকাজের পর ঐন্দ্রিলার অস্থি বিসর্জন করা হবে। অস্থি নিয়ে ঘাটের দিকে রওনা দিয়েছেন তাঁরা।
কেওড়াতলা শ্মশানে ঐন্দ্রিলার শেষকাজ সম্পন্ন হল। চোখের জলে শেষ বারের মতো তাঁকে বিদায় জানালেন মা-বাবা, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবেরা। এবং অবশ্যই সব্যসাচী চক্রবর্তী। ক্যানসারের বিরুদ্ধে অভিনেত্রীর লড়াইয়ে সর্ব ক্ষণ যিনি সঙ্গে ছিলেন।
কেওড়াতলা শ্মশানে ঐন্দ্রিলার শেষকাজে তাঁর অনুরাগী বা সংবাদমাধ্যমের কোনও প্রতিনিধিরা ঢুকতে পারবেন না। অভিনেত্রীর শেষকৃত্যে একমাত্র তাঁর পরিবারের সদস্যরা এবং রাজ্যের মন্ত্রীরাই থাকতে পারবেন। এমনই জানিয়ে দেওয়া হল। কেওড়াতলায় পরিজনের সৎকারের জন্য যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা ঐন্দ্রিলার মরদেহ দেখতে ভিড় করেন। অভিনেত্রীকে শেষ বারের মতো দেখতে অনেকে মোবাইলে ভিডিয়ো কল করাও শুরু করে দেন।
টালিগঞ্জের স্টুডিয়ো ছেড়ে কেওড়াতলা শ্মশানে পৌঁছল ঐন্দ্রিলার মরদেহ। শেষ বিদায়ের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে।
ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই সত্ত্বেও দুর্গাপুজোর সময় উৎসবে মেতে থাকতেন ঐন্দ্রিলা। অক্টোবরে পুজোর সময়ও তিনি উপোস করেছিলেন। অভিনেত্রীর আবাসনের এক বাসিন্দা এমনই জানিয়েছেন।
ঐন্দ্রিলাকে কোনও দিন ভোলা যাবে না। অভিনেত্রীর আবাসনের বাইরে দাঁড়িয়ে এমনই বললেন তাঁর এক প্রতিবেশী। অভিনেত্রীর আচরণ তথাকথিত তারকাসুলভ ছিল না বলেও জানিয়েছেন তিনি। পুজোর সময় সকলে মিলে ভোগ খাওয়া থেকে শুরু করে উৎসবে মেতে থাকতেন ঐন্দ্রিলা। দুর্গাপুজোয় ঐন্দ্রিলার অভাব অনুভূত হবে বলেও মনে করেন ওই মহিলা।
শেষ বারের মতো ঐন্দ্রিলাকে দেখতে তাঁর কুঁদঘাটের আবাসনের বাইরে ভিড়। আইভরি টাওয়ারের বাইরে দাঁড়িয়ে বহু প্রতিবেশীই ফিরে গিয়েছেন ঐন্দ্রিলার ছোটবেলার কথায়। প্রতিবেশী সীমা দাস বলেন, ‘‘প্রতি দিন বিকেলে হাঁটতে নামত মেয়েটা। আমার সঙ্গে দেখা হত। দু’জনে একসঙ্গে হাঁটতাম। আমাকে দেখলেই বলত, ‘‘কাকিমা ফাইটব্যাক করতেই হবে। আপনাকে দেখে অনুপ্রেরণা পাই।’’ ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে হেরে গিয়েছেন ঐন্দ্রিলা। তবে সে লড়াইজয়ী সীমা তাঁকে বলতেন, ‘‘মা, তুমি নিশ্চয়ই পারবে।’’
রবিবার বিকেল সওয়া ৫টা নাগাদ ঐন্দ্রিলার কুঁদঘাটের বাড়িতে পৌঁছল তাঁর মরদেহ। ২৪ বছরের অভিনেত্রীর অকালমৃত্যুতে স্বাভাবিক ভাবেই বিষাদের ছায়া তাঁর পাড়ায়। কুঁদঘাটের আইভরি টাওয়ারে থাকতেন ঐন্দ্রিলা। রবিবার বিকেলে ওই আবাসনের বাইরে এলাকার মানুষজনের ভিড় উপচে পড়েছে। তত ক্ষণে খবর ছড়িয়ে পড়েছে, ঐন্দ্রিলা আর নেই। প্রত্যেকেই অপেক্ষা করছেন, ছোট্ট মেয়েটাকে শেষ বারের মতো কাছ থেকে দেখতে।
অভিনেত্রীর মরদেহ নিয়ে কুঁদঘাটের পথে রওনা দিয়েছে শোভাযাত্রা। রবিবার ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছে যান পরিচালক রাজ চক্রবর্তী-সহ টলিপাড়ার কলাকুশলী। পৌঁছন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। হাসপাতালের বাইরে ভিড় করেন ঐন্দ্রিলার অনুরাগীরা।
হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বার করে আনা হল ঐন্দ্রিলা শর্মার দেহ। রবিবার বিকেল ৪টে নাগাদ হাসপাতাল থেকে তাঁর মরদেহ নিয়ে রওনা দেন অভিনেত্রীর মা-বাবা এবং পরিবারের সদস্যেরা। ঐন্দ্রিলার শেষযাত্রা শুরু হওয়ার আগে থেকে হাসপাতালে ছিলেন তাঁর প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরী। ছিলেন ঐন্দ্রিলার বন্ধুবান্ধব-সহ টলিপাড়ায় তাঁর অসংখ্য অনুরাগী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy