পুরস্কার ফিরিয়ে প্রতিবাদী সুদীপ্তা চক্রবর্তী। গ্রাফিক্স: শৌভিক দেবনাথ।
স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় কুর্নিশ জানিয়েছেন তাঁকে। সম্মান জানিয়েছেন তাঁর সাহস, তাঁর প্রতিবাদকে। সোমবার ‘বন্ধু’ কাঞ্চন মল্লিককে ‘ত্যাগ দেওয়া’র পর মঙ্গলবার বাংলা বিনোদন দুনিয়ায় ‘অসামান্য অবদানের জন্য’ রাজ্য সরকারের দেওয়া ‘বিশেষ পুরস্কার’ ফিরিয়ে দিলেন সুদীপ্তা চক্রবর্তী। সেই খবর প্রথম স্বস্তিকা সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নিতেই সুদীপ্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। বুকের ভিতর জমে থাকা অভিমানই কি এই সিদ্ধান্ত নিতে প্রাণিত করল? প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে কান্নায় গলা বুজে এসেছে অভিনেত্রীর। ভেজা গলায় বললেন, “সকলে জানেন, কাউকে তোষামোদ করে নয়, নিজের যোগ্যতায় এই সম্মান পেয়েছিলাম। আজ সেই পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার ইমেল লিখতে কতটা কষ্ট হয়েছে, শুধু আমিই জানি।” আগুনে গলায় পাল্টা প্রশ্নও রেখেছেন, “অভিনেতাদের পাওয়া পুরস্কার-সম্মান নিয়ে ব্যঙ্গ করার সাহস কাঞ্চনের হয় কী করে?”
রবিবার এক ধর্নামঞ্চে সরকারি জুনিয়র চিকিৎসকদের বেতন-বোনাস নিয়ে কটাক্ষের পাশাপাশি উত্তরপাড়ার বিধায়ক-অভিনেতা ব্যঙ্গ করেন অভিনেতাদেরও। তাঁর তোপ, সরকারি পুরস্কারে সম্মানিত হয়েও তাঁরা সরকারের বিরুদ্ধে অনায়াসে পথে নামছেন। সোমবার তাই নিয়ে দিনভর বিতণ্ডা। কাঞ্চনকে কার্যত একঘরে করে দেন তাঁরই অভিনেতা-বন্ধুরা। সারা দিন ধিক্কার কুড়োনোর পরে রাতে এক ভিডিয়োবার্তায় তিনি ক্ষমাও চান প্রকাশ্যে। কিন্তু বরফ যে গলেনি, তার প্রমাণ হিসাবে মঙ্গলবার সকাল থেকে একে একে সম্মান-পুরস্কার ফেরাতে থাকেন শিল্পীরা। তালিকায় নাট্যকার চন্দন সেন, বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিনেত্রী সঞ্জিতা। এ দিন বিকেলে তালিকায় যোগ হয় সুদীপ্তার নাম।
অভিনেত্রীর কথায়, “কাঞ্চনের মুখ থেকে পুরস্কার নিয়ে কটাক্ষ শোনার পর থেকেই প্রচণ্ড অস্থির লাগছিল। স্বামী অভিষেক সাহাকে জানাই, পুরস্কার ফিরিয়ে দিতে চাই। ও সঙ্গে সঙ্গে রাজি। তার পরেই ঘরের যে দেওয়ালে পুরস্কারের ছবিটি ছিল, সরিয়ে দিয়েছি।” নিজের যোগ্যতায় অর্জিত পুরস্কার এক লহমায় ফিরিয়ে দিচ্ছেন প্রত্যেকে। সম্মান প্রত্যাখ্যান করে কি কোনও শূন্যতা তৈরি হবে অভিনেত্রীর মনে? সুদীপ্তার জবাব, “অভিনয়ের বাইরে কিছুই জানি না। আজীবন ওটাই করে যাব। দর্শকদের ভাল লাগলে দেখবেন। না হলে আমার অভিনয় শেখানোর প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দিন ঠিক চলে যাবে।”
কাঞ্চন যে ক্ষমা চাইলেন...! একটু দম নিয়ে ফের বিস্ফোরক সুদীপ্তা, “সকলের মুখে প্রথমে শুনে খুশি হয়েছিলাম। মনে হয়েছিল যাক, ঘরের ছেলে ঘরে ফিরছে। রাতে ভিডিয়ো দেখে মনে হল, আগের দিনের ধর্নামঞ্চের থেকেও খারাপ চিত্রনাট্য ওটা। ততোধিক খারাপ অভিনয় করেছে কাঞ্চন। ওই ভিডিয়ো নিয়ে যত কম কথা বলা যায়, ততই মঙ্গল।” বলতে বলতেই কণ্ঠস্বর রুদ্ধ। ভেজা গলাতেই জানালেন অভিনেত্রী, একরত্তি শাহিদা মায়ের গলা জড়িয়ে বসে ছোট্ট ছোট্ট হাতে চোখের জল মোছাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy