বিয়ের বয়স মাত্র এক। “বছরটা যেন হুশ করে উড়ে গেল! বুঝতেই পারলাম না কোথা দিয়ে সময় কেটে গেল”, প্রথম বিবাহবার্ষিকীর দিন উজ্জয়িনী থেকে আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন শ্রীময়ী চট্টরাজ। শনিবার তিনি কাঞ্চন মল্লিককে নিয়ে মধ্যপ্রদেশ পৌঁছেছেন। আশপাশ ঘুরে দেখেছেন। শনিবার সকাল সকাল স্নান সেরে লাল পাড় সাদা শাড়িতে সেজে পুজো দিয়েছেন মহাকাল মন্দিরে। মায়ের কাছে রেখে এসেছেন একরত্তি কন্যা কৃষভিকে। জানিয়েছেন, মেয়ের দৌলতেই তাঁরা বুঝতে পারেননি, বছর ঘুরে গেল।
একের পাশে কটা শূন্য বসাতে চান? প্রশ্ন শুনে ফোনের ও পারে মৃদু হাসি। শ্রীময়ী বললেন, “দুটো শূন্য বসাতে খুব মন চাইছে। জানি না, অত বছর বাঁচব কি না। আমার ঠাকুমা অবশ্য শতবর্ষ পেরিয়েছেন। তাই আশা, আমিও হয়তো তাঁর মতোই দীর্ঘায়ু হব।” একটু দম নিয়ে ছেলেমানুষি প্রশ্ন করেছেন, “তা হলেই কাঞ্চনের সঙ্গে ১০০ বছর কাটিয়ে যেতে পারব, কী বলেন?” এ দিন নানা মন্দিরে ঘুরবেন, ঈশ্বরের আশীর্বাদ নেবেন, নিরামিষ খাবেন— আপাতত এই পরিকল্পনা কাঞ্চন-শ্রীময়ীর।

মহাকাল মন্দিরে ঈশ্বরের আশীর্বাদ নিলেন কাঞ্চন-শ্রীময়ী। ছবি: ফেসবুক।
আজকের দিনে অতীত ফিরে দেখে কী মনে হচ্ছে, স্মৃতি তুমি বেদনার? না সুখের?
ফোনের ও পার থেকে কাঞ্চনের গলা ভেসে আসছে। বয়সে ২০ বছরেরও বেশি ছোট বৌকে তাড়া দিচ্ছেন, তৈরি হয়ে বেরোনোর জন্য। তাঁকে সাড়া দিয়ে শ্রীময়ী জবাব দিলেন, “বিয়ে করব, এক ছাদের নীচে বসবাস করব, পছন্দের পুরুষের সন্তানের মা হব— এই ভাবনা নিয়ে সম্পর্কে জড়াইনি। ভালবাসার মানুষকে ভাল রাখব, এটাই ছিল শর্ত। সেই শর্ত পূরণ করেছি।” বদলে শুনতে হয়েছে, নিজের ভবিষ্যৎ গোছাতে বয়সে অনেক বড় এক পুরুষের ঘরনি হয়েছেন। যাঁর জীবনে আপনি তৃতীয়! আপনিই ঘর ভেঙেছেন তাঁর...
বরাবরই অকপট শ্রীময়ী। এ বারেও স্পষ্টভাষী, “আমি মনের দিক থেকে ভীষণ সাহসী। বিয়ে না করেও কাঞ্চনের সন্তানের মা হতে পারতাম। আপনারা সেটা মানতে পারতেন না। তাই আনুষ্ঠানিক বিয়ে। যদিও বিয়ের আগে কাঞ্চনকে একাধিক বার জিজ্ঞেস করেছি, ওর কোনও আপত্তি নেই তো? আমায় বিয়ে করতে বাধ্য করছি না তো? কাঞ্চন মন থেকেই আমায় স্ত্রী হিসেবে চেয়েছে।” একটু থেমেছেন। গুছিয়ে নিয়েছেন নিজেকে। বিধায়ক-পত্নী আবারও অনর্গল, “বরাবর আমি বয়সে বড় বর চেয়েছি। কারণ, সমবয়সি বা অল্প ফারাকের বিয়ের পরিণতি যে কী— সেটা রোজ সকলেই দেখছি। বরং বয়সে বড় হলে সে আমায় আগলে রাখবে। কাঞ্চন যা করে।” এ প্রসঙ্গে তিনি উদাহরণ দিয়েছেন নিজের দাদু-দিদা, মা-বাবার। জানিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের বয়সের ফারাক অনেক। কিন্তু তাঁরা সুখী। সাফ বলেছেন, “স্ত্রীর প্রতি প্রেম থাকলে বিবাহিত পুরুষের কখনও অন্য নারীতে আসক্তি আসে না। কাঞ্চনের অতীত নিয়ে কথা বলতে চাই না। আমার বিশ্বাস, সাদা বা গোলাপি— যিনিই ছিলেন, তিনি যদি সত্যিই থাকতেন তা হলে কাঞ্চন আমার দিকে ফিরেও দেখত না।”
আরও পড়ুন:
ও পাশ থেকে কাঞ্চন ফের তাড়া দিতে শুরু করেছেন। পুজোর সময় বয়ে যাচ্ছে। বয়সের তফাত থাকলে স্বামীর বার্ধক্য আগে আসে। স্ত্রী তখনও অল্পবয়সি। তখন কি শারীরিক বা মানসিক অতৃপ্তি জন্ম নেয়? হোটেলের ঘর থেকে বেরোতে বেরোতে শ্রীময়ী পাল্টা প্রশ্ন রাখলেন, “১০০ বছর একসঙ্গে থাকতে থাকতে আমারও বয়স বাড়বে। চামড়া কুঁচকে যাবে। চোখের নীচে কালি পড়বে। চুলের ফাঁকে রুপোলি ঝিলিক...
তা হলে কাঞ্চন কি তখন আর আমায় ভালবাসবে না?”