খুন আর গণধর্ষণের হুমকি পাচ্ছেন দেবলীনা।
গরুর মাংস খাওয়া নিয়ে একটি চ্যাট শোয়ে মতামত দেওয়ায় অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত খুন আর গণধর্ষণের হুমকি পাচ্ছেন। বাদ পড়েনি তাঁর মা। তাঁকে নিয়েও চলছে ন্যাক্কারজনক মন্তব্য। আজ বিকেলেই সমস্ত স্ক্রিনশট নিয়ে যাদবপুর থানায় এফআইআর করবেন অভিনেত্রী দেবলীনা।
ঘটনার সুত্র এবিপি আনন্দের একটা টক শো। দেবলীনা বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করার সময় গায়ক,পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের কথার সূত্র ধরে জানান, নিরামিষভোজী হলেও প্রয়োজনে তাঁর বাড়িতে গিয়ে নবমীর দিন দেবলীনা গরুর মাংস রান্না করে দিতে পারন। তিনি মনে করেন, খাদ্য খাদ্যাভাস এবং ধর্ম বিষয়ে তিনি এতটাই ছূৎমার্গহীন। সে দিনের পর থেকেই এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ধুন্ধুমার অশ্লীল আক্রমণ শুরু হয়ে যায়। অভিনেতা তথাগত মুখোপাধ্যায় ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় এবং আমার স্ত্রী দেবলীনা দত্তের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ তারা গোমাংস খেতে পারেন,রান্নাও করতে পারেন সে বিষয়ে টেলিভিশনে কেন কথা বলবেন?”
এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার ডিজিটালকে দেবলীনা বললেন, “এখন দেখছি এটাই রেওয়াজ। কোনও মহিলা অন্য স্বরে কথা বললেই তাঁকে গণধর্ষণ আর গলা কেটে দেওয়ার হুমকি দেওয়া যায়? বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, গায়ক ও অভিনেতা বাবুল সুপ্রিয় এক ইন্টারভিউতে বলেছিলেন তিনি কলেজ লাইফে বহূ বার বিফ বা গরুর মাংস খেয়েছেন, তা নিয়ে কিন্তু কোনও প্রশ্ন করা হয়নি যে উনি কেন গোমাংস খেলেন? অথচ সেই বিজেপি কর্মী পেশায় উকিল তরুণজ্যোতি তিওয়ারি আমাকে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য হুমকিই নয়,আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দেন। তিনি কেমন উকিল যার পোস্টের তলায় একজন মহিলাকে তাঁর মাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হচ্ছে আর তিনি চুপ!”
পরিচালক, গায়ক, সুরকার অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়কে এই নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “কোনও রাজনীতি থেকে নয়, একজন নাগরিক হিসেবে আমি আমার কথা বলেছিলাম। তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যা লেখা হচ্ছে ভাবতেই পারিনি। ভোট আসছে। তার আগে অনেক বিষয় নিয়ে কথা হয়। এই যে মানুষ কমেন্ট করছেন তাঁদেরও স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে মত প্রকাশের অধিকার আছে। তবে এই যে মানুষ ধরে নিয়েছেন আমি রাজনীতির জায়গা থেকেই বলছি। এই ধরে নেওয়াটা ভয়ঙ্কর।”
আরও পড়ুন: অনিলের এই এক বিশ্বাসঘাতকতাই মাধুরীর ডুবতে বসা কেরিয়ারকে বাঁচিয়ে দেয়
মানুষের ওঠা বসা খাওয়া সব বিষয়কে ধর্ম দিয়ে কেন দেখা হবে? দেবলীনা বললেন, “যে বাড়িতে আমি আর তথাগত থাকি সে বাড়িতে ইদের দিন এবং সাধারণ অন্য যে কোনও দিন শুয়োর রান্না হয়েছে বা বাইরে থেকে আনানো হয়েছে। আমার মুসলিম বন্ধু ও সহকর্মীরা সানন্দে তা খেয়েছেন, কোনও আলোচনা ছাড়াই। কারণ কাজ বা আড্ডা দূটোর সময়েই কী খাচ্ছি মুরগি না ছাগল,গরু না শুয়োর সেটা নিয়ে আলোচনা অবান্তর। যদিও হিন্দু ধর্ম মতে শুয়োর অর্থাৎ বরাহ স্বয়ং বিষ্ণুর অবতার তবুও শুয়োরের মাংস খাওয়ার বিরোধিতা কেউ করেননি। আমরাও করিনি, কারণ আমরা খাওয়ার জন্য বাঁচি না বাঁচার জন্য খাই।”
১৭ জানুয়ারি রাত্রি থেকে সোশাল মিডিয়াতে ‘রেপ থ্রেট,মাথা কেটে ফেলার হুমকি,গণধর্ষণ,প্রকাশ্যে চাবকানো,নগ্ন করে নাচানো’ হুমকির বিরুদ্ধে যাদবপুর থানায় এফ আই আর করবেন দেবলীনা।
তিনি জানালেন তাঁর ফেসবুক, ইনস্টা এবং ইউটিউব চ্যানেলে, যাঁরা এই ধরনের কমেন্ট করছেন তাঁদের প্রোফাইল পিকচারে কারুর রাম সীতা,কারুর শিব স্বয়ং।
আরও পড়ুন: ধর্মযুদ্ধ বনাম কর্মযুদ্ধ— সায়নী ও তথাগতর যুদ্ধে দু’ভাগ টলিপাড়া
গতকাল তরুণজ্যোতি তিওয়ারি দেবলীনা দত্তকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকির পাশাপাশি জানিয়েছেন যে যারা অভিনয় করে তারা নাকি টাকার বিনিময়ে ‘বাঁদর নাচ নাচে’। এ কথা উনি ওঁর ফেসবুক পোস্টেও লিখেছেন। দেবলীনা উল্লেখ করেন, রিমঝিম আর রূপাঞ্জনা মিত্র তাঁর সহকর্মী কিন্তু বিজেপি পার্টিতে যোগদান করেছেন। তাঁরাও সুপ্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী। এঁরা কি প্রত্যেকেই বাঁদর নাচ করেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy