Advertisement
E-Paper

রাজের নাকি অনেক প্রেম! স্বয়ং ঈশ্বর নেমে এসে গঙ্গাজলে দাঁড়িয়ে এ কথা বললেও মানব না

“রাজ আমাদের বাবাকে যখন-তখন বলে, আরে দেবুদা, বৌয়ের ভয়ে তোমার দেখি হাঁটু কাঁপে! বাবা পাল্টা বললেই স্বীকার করে, বৌকে খুব ভয় পাই।”

এক ফ্রেমে দেবশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, রাজ চক্রবর্তী।

এক ফ্রেমে দেবশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, রাজ চক্রবর্তী। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

দেবশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:২০
Share
Save

ভাষা দিবসে আমাদের বাড়ির একমাত্র জামাই (এখনও পর্যন্ত) রাজ চক্রবর্তীর জন্মদিন। নানা কারণে নির্দিষ্ট দিনে ওকে নিয়ে কিছু লিখতে পারিনি। আনন্দবাজার অনলাইন জানতে চেয়েছিল, পরিচালক-প্রযোজক-বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীকে সকলেই চেনে, কিন্তু বাড়ির জামাই হিসেবে কেমন? কলম ধরে পিছনে তাকাতেই রাশি রাশি স্মৃতি। ভীষণ হুল্লোড়ে, খাদ্যরসিক, ‘মেছো বিড়াল’, আর বুদ্ধিমান ছেলে।

সে সব কথা আমার মতো করে ভাগ করছি আপনাদের সঙ্গে।

পরিচালক যখন প্রেমিক, নায়িকা তখন...

তাকে চোখে হারাবেই। যেমন, আমার বোন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। ওর ক্ষেত্রেও তাই-ই হয়েছে। বিয়ের আগে দেখেছি, প্রবল প্রেমিক রাজ। শুধুই প্রেমিক নয়, দায়িত্ববান প্রেমিক। বোনকে সারা ক্ষণ আগলে রাখত। সেই প্রেমিক সত্তা আজও বর্তমান। রাজ আজও শুভ-র সঙ্গে জম্পেশ প্রেম করে। একই সঙ্গে আগলে রাখে। আমার তো মনে হয়, ওর এই স্বভাব এক দিনের নয়। একই ভাবে বদলানোরও নয়।

স্বামী, মোটেই আসামি নয়

ভাল স্বামী হতে গেলে কিছু গুণ থাকা দরকার। যেমন, ভীষণ ঠান্ডা মাথা, অফুরন্ত ধৈর্য আর ইতিবাচক মানসিকতা। সঙ্গে অতিথি আপ্যায়নে পটু হতে হবে। বৌয়ের মন বুঝতে হবে। মনখারাপ হলে মন ভাল করে দিতে হবে। রাজ এই সব ক’টা পারে। নিজের মাকে আগলায়। স্ত্রী-সন্তানদের চোখে চোখে রাখে। তার পরেও রাগ করে না কখনও! ধরুন, আপনার খুব মনখারাপ। আধ ঘণ্টা রাজের কাছে বসুন। ওর সঙ্গে আড্ডা দিন। ভুলে যাবেন, কী কারণে মনটা এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল আপনার।

ও দেবুদা, এখনও বৌয়ের ভয়ে কাঁপো...?

রাজ আমাদের জামাই কম, ছেলে বেশি। এই জায়গাটা ও নিজেই আদায় করে নিয়েছে। যতটা নিজের মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, যত্নবান— ততটাই আমাদের মা-বাবার প্রতিও। মা-বাবার কিছু হলে নিজের কাছে নিয়ে গিয়ে রাখবে। রাতে যেতে দিতে চায় না। মা-বাবা উল্টে লজ্জা পায়। ওদের দাবি, মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে কেউ থাকে! রাজ মানবে না। মানেন না মাসিমা, মানে রাজের মা-ও। বরং হা-পিত্যেশ অপেক্ষা করেন, কবে আমাদের মা-বাবা যাবেন। মাসিমা আড্ডা দেবেন। মাসিমার তাগিদেই প্রায় প্রতি রবিবার দুপুরে গঙ্গোপাধ্যায় আর চক্রবর্তী পরিবার এক টেবিলে বসে আড্ডা দিতে দিতে ভাত খায়!

এ বার বলি বাবার সঙ্গে রাজের সম্পর্ক। পরিচালক জামাই তো নিজেকে শ্বশুরমশাইয়ের ‘বড় ভাই’ বলে দাবি করে! যখন-তখন বাবার নামের সঙ্গে ‘দাদা’ সম্বোধন। আর তুমুল রসিকতা, “ও দেবুদা, এখনও বৌয়ের ভয়ে তোমার হাঁটু কাঁপে!” বাবা হেসে ফেলে। মা লজ্জা পায়। শুভ তো হেসে গড়িয়ে পড়ে। বাবার সঙ্গে তাল মেলায় একরত্তি ইউভান। মজা করে বাবাকে ‘দেবুদা’ বলে ডেকে ওঠে! এক এক সময় বাবাও পাল্টা দেয়। বলে, “তোমারও তো একই অবস্থা।” সঙ্গে সঙ্গে অকপট স্বীকারোক্তি রাজের, “ঠিক বলেছ দেবুদা। আমার বৌকে আমি খুব ভয় পাই।”

কচিদের রাজ ‘চকো’...

নিজের ছেলে-মেয়ে হোক বা আমার ছেলে— সকলের বন্ধু রাজ। ইউভান বাবা বলতে অজ্ঞান। এখন ইয়ালিনিও। ভাগ্নিরা তো মামার কোলেপিঠে চেপে বড় হয়েছে। রাজের মেয়ের শখ খুব। চেয়েছিল, প্রথম সন্তান কন্যা হোক। হয়নি। কিন্তু দ্বিতীয় বার ঈশ্বর বিমুখ করেননি। অন্য দিকে, আমার ছেলে ওর ‘দোস্ত’। ‘রাজ চকো’ বলে ডাকে। সম্পর্কে মেসোমশাই। সে সম্বোধন করলেই খেপে ব্যোম। সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশ, “অ্যাই, মেসোমশাই কী? রাজ চকো বলে ডাক।” ছেলেকে প্রশ্রয়ও দেয়। আমাদের বাড়িতে দুর্গাপুজো হবে। ছেলে মোটা টাকা চেয়ে বসল। আমি বকছি। রাজ সঙ্গে সঙ্গে বলল, “দিদি, তুমি কি জানো, এই প্রজন্ম কত রকমের নেশা করে টাকা নষ্ট করে? ও তো পুজো করবে বলে টাকা চাইছে। অকারণ বেশি শাসন কোরো না।”

কখনও দেবু, কখনও দিদি

হ্যাঁ, আমি রাজের থেকে বয়সে ছোট। এ দিকে সম্পর্কে বড়। রাজের সম্বোধনও তাই বিচিত্র। কখনও ‘দেবু’, কখনও ‘দিদি’। আমাকেও শাসন করতে ছাড়ে না, সমান তালে আগলায়। কয়েক বছর আগে আমি ভুল লোককে বিয়ে করে বিশ্রী ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলাম। মাসিমার রাজকে কী বকুনি, “তুই থাকতে আমার মেয়ের সঙ্গে এ রকম হয় কী করে?” মাসিমার বিশ্বাস, ওঁর ‘রাজু’ সব পারে। আমারও তাই-ই বিশ্বাস। ওই জন্যই মাঝেমধ্যে বায়না করি, রাজের ছবিতে আমায় নেওয়ার জন্য। পরে নিজেই বুঝি, চরিত্রের সঙ্গে মানালে ঠিক আমায় ডেকে নেবে। মাঝেমধ্যেই আমায় বলে, “দিদি প্রেম করো। প্রেম করা খারাপ নয়। কিন্তু না বুঝে বিয়ে করে ফেলো না!”

রাজের নাকি প্রচুর প্রেম...!

আমায় এ রকম বলে, তার মানে কি রাজ বহু প্রেমে বিশ্বাসী? একদম নয়। ওর এক জনই প্রেমিকা, আমার বোন। এ দিকে রাজের নামে অকারণ রটনা, ও নাকি মুঠো মুঠো প্রেম করে। প্রায় সব নায়িকার সঙ্গেই কিছু না কিছু আছে! আমার কানে এ রকম কোনও কথা আসেনি। স্বয়ং ঈশ্বরও যদি নেমে এসে গঙ্গাজলে দাঁড়িয়ে এ কথা বলেন, বিশ্বাস করব না। রাজের যদি সে রকম স্বভাব হত তা হলে ওর জন্মদিনে পুরো ইন্ডাস্ট্রিকে ডাকত। সেখানে নায়িকাদের ভিড় জমত। বিনোদন ওর পেশা হলেও রাজ ভীষণ পারিবারিক। তাই ওর কাছে জন্মদিন মানে বাড়ির রান্না, সাত রকমের মাছের পদ। আমরা ওকে ‘মেছো বিড়াল’ বলি। শুভ জোর করে কেক কাটে। নইলে সেটাও রাজের প্রয়োজন পড়ে না।

Raj Chakrabarty Debashree Ganguly Birthday Celebration

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।