Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

'একে অপরের প্রেম, কেরিয়ারে নাক গলাই না'

দুই বোনের মধ্যে কতটা মিলমিশ, কতটাই বা আলাদা তাঁরা?দুই বোনের মধ্যে কতটা মিলমিশ, কতটাই বা আলাদা তাঁরা?

চিত্রাঙ্গদা-ঋতাভরী।

চিত্রাঙ্গদা-ঋতাভরী।

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৮ ০১:০১
Share: Save:

ঋতাভরী যেমন অনর্গল, চিত্রাঙ্গদা আবার পছন্দমতো লোক না পেলে কথাই বলেন না। প্রথম জনের পিআর স্কিল দুর্দান্ত হলে, দ্বিতীয় জন ভীষণই সোজাসাপ্টা। আনন্দ প্লাসের চ্যাটে চিত্রাঙ্গদার পরনে ছিল ফ্লোরাল মোটিফের অফ শোল্ডার শর্ট ড্রেস। আর ঋতাভরী ছিলেন সাদা-হলুদ সালোয়ার-কামিজে। পোশাকের মতোই দুই বোনের স্বভাবের বৈপরীত্যও কিছু ক্ষণের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে গেল...

দুই বোনের ভীষণ ভাব, না কি ঝগড়া, না কি কেউ কাউকে নিয়ে চিন্তিতই নন? প্রথমে জবাব দিলেন ঋতাভরী, ‘‘আমাদের মধ্যে তিনটে জিনিসই আছে। এখন ভাবটাই বেশি। ও মুম্বইয়ে, আমি কলকাতায় বলে হয়তো প্রচুর কথা হয় না। ঝগ়়ড়া হতো ছোটবেলায়।’’ সায় দিলেন চিত্রাঙ্গদাও, ‘‘আমরা ঝগড়া করতাম ঠিকই, কিন্তু ওকে কেউ কিছু বললে সে আমার কাছে মার খেত। ওর কত বয়ফ্রেন্ডকে মেরেছি!’’ ঋতাভরীর বুঝি ছোট থেকেই প্রচুর বয়ফ্রেন্ড? ‘‘আমরা দু’জনেই ছোট থেকে ছেলেদের অ্যাটেনশন পেতাম। স্কুলে খুব পপুলার ছিলাম আমরা,’’ প্রশ্নের প্যাঁচ এড়িয়ে ঋতাভরীর জবাব।

দুই বোনের কেরিয়ারও আলাদা খাতে বয়েছে। চিত্রাঙ্গদা মডেলিং দিয়ে শুরু করেন। তার পর মুম্বই গিয়ে থিয়েটারে মন দেন। বলছিলেন, ‘‘ভাল কাজ করতে চাই বলে থিয়েটার করছিলাম। সিনেমায় তখন ভাল কাজ পেলে করতাম।’’ সুমন মুখোপাধ্যায়ের ‘শেষের কবিতা’ করেছেন। তাঁর ছবি ‘টিকলি অ্যান্ড লক্ষ্মী বম্ব’ আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রাপ্ত। প্রতীম দাশগুপ্তর ‘আহা রে মন’-এ চিত্রাঙ্গদার অভিনয় প্রশংসা পেয়েছে। প্রতীমের সঙ্গে ‘ইঙ্ক’-এও কাজ করলেন তিনি। মুম্বইকে নিজের ঘাঁটি করে নিলেও কাজের প্রয়োজনে কলকাতায় আসতে দ্বিধা নেই।

ঋতাভরী সম্পর্কে চিত্রাঙ্গদা

• ভীষণ বুদ্ধিমান

• এন্টারপ্রাইজ়িং

• খুব ভাল কথা বলতে পারে

• বন্ধুদের জন্য সব পারে

ঋতাভরী আবার উল্টো। ধারাবাহিক দিয়ে শুরু করেছিলেন। বলছিলেন, ‘‘কাজের জন্য মুম্বইয়ে গেলেও কলকাতা ছাড়তে পারব না। এখানে আমার আর মায়ের (শতরূপা সান্যাল) প্রযোজনা সংস্থার পুরো দায়িত্বটা আমার।’’

চিত্রাঙ্গদা বছর খানেকের বড়। তবে বোনের কাণ্ড দেখলে সেটা মনে হবে না! ‘‘এটা স্কুল থেকে হয়ে আসছে। আমাকে সকলে বড় ভাবে। আর আমার মধ্যে একটু লিডারগিরি করার অভ্যেসও আছে,’’ অকপট স্বীকারোক্তি ঋতাভরীর। ‘আহা রে মন’-এ চিত্রাঙ্গদাকে টিনএজারের চরিত্রে দেখা গিয়েছে। হাসতে হাসতে বলছিলেন, ‘‘অনেকে ভাবে আমার মেরেকেটে কুড়ি হবে। আসলে তিরিশ হতে চলল। মুম্বইয়ে দেখি মেয়েরা বয়স কমিয়ে বলে। ছেলেরা অবশ্য তা নয়।’’ পাশ থেকে ঋতাভরীর টিপ্পনী, ‘‘টলিউডের ছেলেদের দেখিসনি। কারও বয়স ৩৫ পেরোয় না!’’ দুই বোনের হাসি আর থামতেই চায় না!

চিত্রাঙ্গদা সম্পর্কে ঋতাভরী

• কোনও ভনিতা নেই

• খুব ভাল রান্না করে

• কখনও মোটা হয় না

• নিজের পিআরটা ভাল করে করা উচিত

দুই বোনের বয়ফ্রেন্ড নিয়ে কখনও সমস্যা হয়েছে? প্রশ্ন শেষ হতে না হতেই ঋতাভরী বলতে শুরু করে দিলেন, ‘‘আমাদের চয়েস অব মেন আলাদা। কোনও দিন মেলেনি। মিলবেও না।’’ প্রেম সম্পর্কে দু’জনের চিন্তাধারাও আলাদা। চিত্রাঙ্গদার কথায়, ‘‘আমি লং টার্ম প্রেমে বিশ্বাসী। টিকবে না জেনেও কিছু সম্পর্কে সময় দিয়েছি! বোন আমার মতো নয়,’’ চিত্রাঙ্গদা অনেক দিন ধরেই একটা সম্পর্কে আছেন। ব্যক্তিগত বিষয় আড়ালে রাখতে চান বলে নাম উল্লেখ করলেন না। জানালেন, তিনি ইন্ডাস্ট্রির কেউ নন।

কলেজে পড়ার সময়ের একটা সম্পর্কের কথা বলছিলেন ঋতাভরী, ‘‘ওই সম্পর্ক আমার জীবনে বড় শিক্ষা। এখন কারও জন্য নিজেকে বদলাতে পারব না। ও যেমন একটা সম্পর্কে অনেক দিন রয়েছে। আমার সেটা হয়নি। তবে কাউকে কখনও চিট করিনি।’’ কোনও সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এলেও সেই ব্যক্তিকে নিয়ে নেতিবাচক কথা বলার বিরোধী ঋতাভরী। ‘‘সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছে বলে, তাঁকে নিয়ে খারাপ কথা বলব? একটা সময়ে আমিই তো তাকে বেছে নিয়েছিলাম। তার নিন্দে করা মানে আমি নিজের দিকেই আঙুল তুলছি,’’ মত ঋতাভরীর। এটাও বলতে ভুললেন না যে, তিনি এখন সিঙ্গল। চিত্রাঙ্গদা তাঁর কাছের মানুষটির সঙ্গে সব কিছু শেয়ার করেন। ঋতাভরী আবার উল্টো। ‘‘আমি নিজের স্পেস নিয়ে বড্ড সচেতন। তোমাতে আমাতে সব... এটা হবে না।’’

এমন কখনও হয়েছে দু’জনের কাছেই ছবির প্রস্তাব এল, কিন্তু পেলেন এক জন? ‘‘হ্যাঁ, ‘পরি’র সময়েই হয়েছে। মুম্বইয়ে থাকা বাঙালি অভিনেত্রী হিসেবে আমাকে প্রথমে ডাকা হয়েছিল। অডিশনের পর ওরা জানায়, চরিত্রের বয়স আন্দাজে আমার বয়স অনেক কম লাগছে। তার পর ওরা বোনের অডিশন নেয়। আর ও সিলেক্টেড হয়। বুঝুন তা হলে! তবে কাজ নিয়ে আমাদের মধ্যে কখনও সমস্যা হবে না,’’ মন্তব্য চিত্রাঙ্গদার।

কেরিয়ার, প্রেম নিয়ে দুই বোনের মধ্যে যতই অমিল থাক, সমস্যায় পড়লে তাঁরা যে পুরো ‘এক দুজে কে লিয়ে’, সেটা জানিয়ে দিতে ভুললেন না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy