Advertisement
E-Paper

শিবু মেজাজ হারালেও, নন্দিতাদি সব সময় শান্ত! তবে ওঁরা পরস্পরের পরিপূরক

শিবু সামনে থেকে কাজ করে। ও ভাল কথা বলে। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। দিদি আবার মানুষ হিসেবে খুবই শান্ত। অভিনেতার থেকে দিদি কী চান, তা খুব ধীরস্থির ভাবেই বোঝান।

Actress Aparajita Auddy writes about Nandita Roy on her birthday

নন্দিতা রায়ের জন্মদিনে লিখলেন অপরাজিতা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

অপরাজিতা আঢ্য

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:৩০
Share
Save

নন্দিতাদির সঙ্গে কত বছরের চেনা পরিচিতি! প্রথম দেখা ‘টাকা না সোনা’র সময়ে। তখন ২০০০ সাল। প্রথম দেখাতেই একগাল হেসে আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। নন্দিতাদি বরাবর মায়ের মতো। দিদিকে সহজেই সব বলা যায়। খুব ধীরস্থির মানুষ। শিল্পীকে সহজে বুঝতে পারার ক্ষমতা রয়েছে ওঁর। ‘টাকা না সোনা’র পরে আবার দিদির সঙ্গে ‘বেলাশেষে’ ছবিতে কাজ করেছিলাম। মনে আছে, আমি প্রথমে বলেছিলাম, “সময় নেই।’’ এ কথা শুনে মুচকি হেসেছিলেন দিদি।

ছবি পরিচালনার ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে তো নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের কোনও তুলনা হয় না। অনেক সময়ে শিবু মাথা গরম করে। কিন্তু দিদি সব সময় মাথা ঠান্ডা রাখেন। তার মানে এই নয় যে, অভিনয় পছন্দ না হলেও তিনি ছেড়ে দেন। পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি যথেষ্ট কড়া। যেটা চান, অভিনেতাকে দিয়ে ঠিক সেটা করিয়ে নেন। কিন্তু ওঁর ব্যবহারের মধ্যেই যেন একটা মাতৃস্নেহ রয়েছে। তাই দিদির সঙ্গে কাজ করার সময়ে খুব আরাম লাগে। মানুষ হিসেবে তিনি এতই মিষ্টি, কাজ করতে ভাল লাগবেই। এটা একজন অভিনেতার কাছে বিরাট পাওয়া।

শিবু সামনে থেকে কাজ করে। ভাল কথা বলতে পারে। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। দিদি আবার মানুষ হিসেবে খুবই শান্ত। অভিনেতার থেকে দিদি কী চান, তা খুব ধীরস্থির ভাবেই বোঝান। শিবু অভিনয় করলেও একই ভাবে পরিচালনা করেন। আমাকে ‘মুখার্জিদার বৌ’ ছবির প্রস্তাব দেওয়া হলে, আমি প্রশ্ন করেছিলাম, “এত ছোট চরিত্রে আমি কেন অভিনয় করব?” আমাকে খুব শান্ত ভাবে বুঝিয়ে নন্দিতাদি বলেছিলেন, “অপরাজিতা, এই চরিত্রটা একদম নুনের মতো। ছবিটা রান্না হলে, তোমার চরিত্র নুনের কাজ করবে। হয়তো এটা প্রধান চরিত্র নয়। তবে এটা তুমি ছাড়া অন্য কেউ করতে পারবে না। অন্য কেউ ভাল অভিনয় করলেও, আমি জানি তুমিই সবচেয়ে ভাল করবে এই চরিত্রে।”

শিবু খুব ভাল বক্তব্য রাখতে পারে ঠিকই। তবে নন্দিতাদি খুব শান্ত ভাবে সবটা বুঝিয়ে বলতে পারেন। ওঁর থেকে একটা বিষয় শিখেছি— নীরবে এত ভাল কাজ করো, যাতে কাজ প্রকাশ পেলে হইহই পড়ে যায়।

নন্দিতাদিকে আমি কখনও শুটিং সেটে রেগে যেতেও দেখেনি। হয়তো কখনও চিৎকার করে বলেছেন, “এটা কী হচ্ছে! আর কত ক্ষণ লাগবে?” এটুকু তো স্বাভাবিক। এর বেশি কখনও কিছু বলেননি। তবে অভিনয় পছন্দ না হলে হাল ছেড়ে দেন না তিনি। যতক্ষণ না পছন্দ হচ্ছে, অভিনেতাকে দিয়ে একশো বার অভিনয় করাবেন। এই দিকে কিন্তু নন্দিতাদি কড়া। নতুনদের নিয়ে কাজ করতেও খুব ভালবাসেন নন্দিতাদি। নতুনেরা কী ভাবে আরও ভাল কাজ করবে, সেই বিষয়ে উৎসাহ দিতে থাকেন তিনি। শিবুও সেই দিক দিয়ে খুবই ভাল। তাও শিবু মাঝেমধ্যে ধৈর্য হারায়। কিন্তু নন্দিতাদি সব সময় ঠান্ডা থাকেন। তবে ওঁদের দু’জনের মধ্যে অদ্ভুত একটা সমতা রয়েছে। প্রথম থেকেই ওঁদের ভাবনাচিন্তার বোঝাপড়া খুব ভাল। ওঁরা দু’জন পরস্পরের পরিপূরক। ওঁরা দু’জনে মিলে একটা শক্তি।

জন্মদিনে নন্দিতাদিকে বলব, তুমি সুস্থ থাকো। ভাল থাকো। অনেক ছবি উপহার দাও। তবে আমি কিন্তু খুব অভিমান করে আছি। অনেক দিন তোমাদের সঙ্গে কোনও কাজ করিনি। একটা বিজ্ঞাপনে একসঙ্গে কাজ করেছি ঠিকই। তবে খুব তাড়াতাড়ি ছবিতে আরও ভাল ভাল করতে চাই।

Nandita Roy sibaprasad mukherjee Aparajita Auddy

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}