Advertisement
E-Paper

‘আমায় শুনতে হয়েছে, তুই ভাল অভিনয় করিস, কিন্তু তোকে নিলে পয়সা আসবে না’, ক্ষোভপ্রকাশ ঋষভের

পর্দায় ফর্সা অভিনেত্রীর ত্বকের রং গাঢ় করে শ্যামবর্ণ করা হয়। এই বিষয়টি নিয়েও ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন ঋষভ।

Actor Rishav Basu talks about Anasua Sengupta and Payal Kapadia and Bengali film industry

ঋষভ বসু। ছবি-সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৪ ১৯:৩৩
Share
Save

কান চলচ্চিত্র উৎসবে দেশকে গর্বিত করেছেন ভারতের দুই কন্যা অনসূয়া সেনগুপ্ত ও পায়েল কাপাডিয়া। প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী হিসেবে ‘আন সার্টেন রিগার্ড’ বিভাগে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন কলকাতার মেয়ে অনসূয়া সেনগুপ্ত। পরের দিনই পরিচালক পায়েল তাঁর ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ় লাইট’ সিনেমার জন্য গ্রাঁ প্রি পেলেন। স্বাভাবিক ভাবেই দু’জনকে নিয়েই সমাজমাধ্যমে উচ্ছ্বাসের শেষ নেই।

এই বিষয়টি নিয়ে সমাজমাধ্যমে মুখ খুলেছেন অভিনেতা ঋষভ বসু। সেই পোস্টে ঋষভের দাবি, আজ যাঁরা বলছেন যোগ্যতার দাম পেয়েছেন অনসূয়া বা পায়েলরা, তাঁরাই আসলে নতুন শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করতে চান না। এই লেখা দেখে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করলে ঋষভ বলেন, “এই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে জড়িত অনেককেই দেখছি নানা রকমের পোস্ট দিচ্ছেন। কেউ কেউ লিখেছেন, বিদেশিরা আমাদের দেশের প্রতিভা চিনতে পারছেন। অথচ এঁদের কাছে নতুন কেউ কাজ চাইলে এঁরা পাত্তা দেন না। এঁরা নিজেদের কাজের সঙ্গেও কতটা আপস করেন, সেটা আমি দেখেছি।”

নাম না করে এক জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালকের কথা বলেন ঋষভ। অভিনেতার কথায়, “এক জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালককে দেখেছি কী ভাবে আপস করেছেন। চিত্রনাট্য অনুযায়ী নায়িকার সালোয়ার-কামিজ় পরার কথা ছিল। কিন্তু প্রযোজনা সংস্থার দাবি অনুযায়ী নায়িকাকে স্কার্ট পরানো হল। কার দোষ-গুণ, সেই সব বলছি না। কিন্তু এই পরিস্থিতি নিয়ে আমি হতাশ। কারণ পরিচালক নিজেই নিজের ভিশন-এর সঙ্গে আপস করছেন। আর তাঁরাই যখন এই ধরনের পোস্ট করেন, তখন মনে হয় দ্বিচারিতা করছেন।”

পর্দায় ফর্সা অভিনেত্রীর ত্বকের রঙ গাঢ় করে শ্যামবর্ণ করা হয়। এই বিষয়টি নিয়েও ক্ষোভপ্রকাশ করে ঋষভ বলছেন, “ফর্সা মেয়েদের প্রসাধনীর মাধ্যমে শ্যামলা বানিয়ে অভিনয় করানো হয় কেন এখনও? বড়পর্দা-ছোটপর্দা উভয় ক্ষেত্রেই। তার মানে কি আমাদের শ্যামবর্ণের ভাল অভিনেত্রী নেই? এই তো অনসূয়াই ছিলেন। এত দিন কেউ কেন তাঁকে লক্ষ করেননি? যে হেতু এখন তিনি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, এ বার তাঁকে ছবিতে নেওয়ার জন্য সবাই হুড়মুড়িয়ে পড়বেন। অনসূয়া কতটা ভাল অভিনয় করেন তা নিয়ে এঁরা ভাবিত নন। তিনি কান-এ পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁকে ছবিতে নিলে প্রচার ভাল হবে, সবাই লেখালিখি করবে।”

নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা হিসেবে অভিনেতা বলেন, “প্রচুর পরিচালক-প্রযোজকদের থেকে শুনতে হয়েছে, ‘তোমার শেষ ছবি ‘ভটভটি’ তো চলেনি, তাই তোমায় নিয়ে ছবি করায় ঝুঁকি রয়েছে’।“ কিন্তু ঋষভ জানান, ছবি না চলার দায়িত্ব তাঁর নয়। তিনি প্রযোজক বা ডিস্ট্রিবিউটর নন। উল্টে তাঁকে শুনতে হয়েছে,

‘‘তুই খুব ভাল অভিনয় করিস। কিন্তু তোকে নিলে চ্যানেল পয়সা দেবে না।’’ ঋষভ যোগ করেন, ‘‘প্রযোজক অবশ্যই নিজের ব্যবসার কথা ভাববেন। কিন্তু এই পরিস্থিতিটার কথা বলছি আমি।’’

বাংলা ছবির প্রসঙ্গে কথা বলেছেন ‘শ্রীকান্ত’ ওয়েব সিরিজ়ের অভিনেতা। তাঁর কথায়, “আমি বিশ্বাস করি, কারও নামেই বাংলায় সিনেমা চলে না বা হল ভর্তি হয় না। কেউ যত বড় সুপারস্টারই হোন, শুধু তাঁর নামে হল ভরে না। যদি কোনও সুপারস্টার ভাল ছবি করেন, অবশ্যই মানুষ সেটা দেখে। সেটা শাহরুখ খানের জন্যও প্রযোজ্য। ‘পাঠান’ বা ‘জওয়ান’ যতটা সফল, ‘ডাঙ্কি’ কিন্তু তত সফল নয়।’’

বাংলায় সেই ভাবে উঠতি শিল্পীরা সুযোগ পান না বলেই মনে করেন ঋষভ। আর তাই অভিনেতা বলছেন, “কোনও শিল্পী বাইরে গিয়ে কিছু করলে সবাই নড়েচড়ে বসে। না হলে মৃত্যুর পরে মনে করা হয় তাঁকে। স্বয়ং ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গেই এমন হয়েছে। আমরা তো কিছুই না।”

২০০৯ সালে অঞ্জন দত্তের ছবি 'ম্যাডলি বাঙালি'-তে অভিনয় করেছিলেন অনসূয়া সেনগুপ্ত। তার এত বছর পরে ফের খবরে উঠে এসেছেন তিনি। এত দিন বাংলায় থেকেও বিদেশি ছবির জন্য সম্মানিত হলেন ও পরিচিতি পেলেন তিনি। এই দিকটি নিয়েও কথা বলেন ঋষভ। আর অঞ্জন দত্তের ছবির প্রসঙ্গে তিনি বলছেন, “এত দিন পরে অঞ্জন দত্তর ছবি 'চালচিত্র এখন'-কে এত ভাল বলছে সবাই। কারণ এই ছবিটা তিনি নিজের মতো করে বানাতে পেরেছেন। আমি ওঁর বড় ভক্ত। আমি খুব খুশি ওঁর ছবিতে শাওন অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু এখানেও যদি প্রযোজকরা নিজেদের পছন্দ মতো অভিনেতা নিতে বলতেন এটা হত না। তথাদার ‘পারিয়া’ বা অঙ্কুশের ‘মির্জ়া’— এই ছবিগুলিও ভাল হয়েছে, কারণ ওঁদের নিজের সৃজনশীল স্বাধীনতা ছিল, যেটা না থাকলে ভাল কাজ হয় না।’’

তেলুগু ছবিতে পা রেখেছেন ঋষভ। সেই ছবির কাজ শেষ হয়েছে কিছু দিন আগেই। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তাঁর ছবি ‘তাহাদের কথা’। এ ছাড়াও অগস্টে মুক্তি পাবে ঋষভ অভিনীত ও তথাগত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘গোপনে মদ ছাড়ান’। মুক্তি পাবে সায়ন্তন ঘোষালের পরিচালনায় ‘সরলাক্ষ হোম’। ‘শার্লক হোমস’-এর বাংলা সংস্করণ এই ছবি। মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন ঋষভ।

Rishav Basu Cannes Anjan Dutt

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।