‘পরিবার’কে পাশে সরিয়ে দেবের আপাতত ‘অ্যাকশন’-এ মন। ‘খাদান’ থেকে শুরু। আগামী ছবি ‘রঘু ডাকাত’-এও সে ধারা অব্যাহত। তাই বলে কি ‘বিয়ে’, ‘সংসার’— এ সব একেবারেই ভুলে গিয়েছেন? মোটেও না। জি বাংলায় শ্রীজিৎ রায়ের নতুন ধারাবাহিক ‘তুই আমার হিরো’র প্রচার-ছবির শুটিংয়ে এসেছিলেন সাংসদ-অভিনেতা। ধারাবাহিকের নায়ক রুবেল দাসের সঙ্গে তাঁর পূর্বপরিচয় ছিল। রুবেল যে তাঁর ‘প্রজাপতি’ নায়িকা শ্বেতা ভট্টাচার্যকে বিয়ে করেছেন, সে খবরও রেখেছেন দেব! মুখোমুখি হতেই নায়ককে ডেকে বলেছেন, “বিয়ে করে কেমন আছ? শ্বেতা কেমন আছে?” রবিবার ছুটির আমেজ নিয়েই ফোনে আনন্দবাজার ডট কমকে জানালেন ছোট পর্দার ‘হিরো’।
কার মাথায় প্রথম এসেছিল, ধারাবাহিকের প্রচারে দেব থাকবেন? কেনই বা মনে হল?
জানেন না রুবেল। তবে দেবের সঙ্গে কিছু ক্ষণ কাটিয়ে তিনি চনমনে। দেবকে বিয়ের টিপ্স দিলেন নাকি? পাল্টা প্রশ্ন রাখতেই রুবেলের গলায় কি ঈষৎ জড়তা? অল্প হেসে যেন বিষয়টি হালকা করতে চাইলেন। জানালেন, তিনি দেবকে বিয়ের পরামর্শ দেবেন! এ সব নিয়ে আর কোনও কথাই হয়নি তাঁর। বরং দেব এ দিন যেন সাংবাদিকের ভূমিকায়। একের পর এক প্রশ্ন করে গিয়েছেন ধারাবাহিকের নায়ক ‘শাক্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়’ ওরফে রুবেলকে। যেমন, কত বছর ধরে মেগা ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন রুবেল? কী রকম ছুটি পান? ৩০ দিন কাজ থাকে শুনে ভীষণ অবাক বাংলার বর্তমান ‘সুপারস্টার’। শুটিং শেষ হতেই রুবেলকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে তাঁর নতুন ধারাবাহিকের সাফল্য কামনা করেছেন।
আপ্লুত রুবেলের দাবি, আগের মতোই আছেন দেব। একটুও বদলাননি। এটা অভিনেতার ইতিবাচক দিক।

‘তুই আমার হিরো’ ধারাবাহিকে রুবেল দাস, মোহনা মাইতি। ছবি: সংগৃহীত।
এর আগে প্রসেনজিৎ একাধিক ধারাবাহিক প্রযোজনা করেছেন। প্রচারেও যোগ দিয়েছেন। দেব ছোট পর্দায় নাচের রিয়্যালিটি শো-তে বিচারকের আসনে বসেছেন। প্রচার-ছবিতে এই প্রথম। কোনও ভাবে দেবের জীবন এই ধারাবাহিকে জায়গা করে নিচ্ছে? জবাব দিতে বেশি দেরি করেননি রুবেল। তাঁর কথায়, “বিশেষ কারও জীবন দেখানো হচ্ছে না। বাংলায় একাধিক সুপারস্টার রয়েছেন। কিছু সাধারণ বিষয় তাঁদের জীবনে আছে। যেমন, তাঁরা সাধারণ থেকে অসাধারণ হয়েছেন। খুব পরিশ্রম করে উচ্চতায় পৌঁছেছেন। জনপ্রিয়তা এখন আর তাঁদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা খেতে দেয় না। বন্ধুদের সঙ্গে কাদামাটি মেখে ক্রিকেট বা ফুটবল খেলতে দেয় না।” অভিনেতার দাবি, সেগুলিই ধারাবাহিকের চরিত্র ফুটিয়ে তুলবে। এই প্রজন্ম দেবকে একডাকে চেনে। তাই তিনি প্রচারে।
রুবেলও সাধারণ ঘরের ছেলে। অনেক পরিশ্রম, অপমান সহ্য করে ছোট পর্দার জনপ্রিয় নায়ক। তিনিও কি পারেন আগের মতো ফুচকা খেতে, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে? জবাব এল, “ভীষণ ভাবে পারি। আমি এগুলো এখনও ধরে রেখেছি। কারণ, দীর্ঘ দিন নিজেকে এক জায়গায় ধরে রাখতে গেলে মাটিতে পা রেখে চলতেই হবে।” তাই তিনি এখনও পাড়ায় ফুটবল খেলেন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা খান। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান। তিনি জানেন, এটাই প্রকৃত জীবন। এটাই তাঁর সঙ্গে থেকে যাবে। তাই খাতায়-কলমে কাউকে অনুকরণ করছেন না। তবে বাংলার চার খ্যাতনামী নায়কের চলন-বলন-উচ্চারণ হয়তো তাঁর সংলাপ উচ্চারণে শুনতে পাবেন দর্শক। বলতে বলতেই রুবেল অনায়াসে পর পর মিঠুন, প্রসেনজিৎ, জিৎ, দেবের ভঙ্গিতে কথা বলে উঠলেন! এমনিতেই অভিনেতা দক্ষ নৃত্যশিল্পী। চরিত্র জীবন্ত করতে নতুন করে সে সবে শান দিচ্ছেন। অ্যাকশনটাও অভ্যাস করে নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন:
ফোন রাখার আগে দেবের প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি, বিয়ের পর কেমন আছেন রুবেল?
এ বার কপট অভিমান মিশল কণ্ঠস্বরে! বললেন, “ভেবেছিলাম, শুরুতেই জানতে চাইবেন। তা না করে সব শেষে!” পর ক্ষণেই ঝলমলে রুবেল। উচ্ছ্বসিত হয়ে জানালেন, ভাল আছেন। খুব যে কিছু বদল ঘটেছে, তা নয়। তবে আগে শ্বেতা বাড়ি চলে যেতেন। এখন নায়কের সঙ্গে এক ছাদের নীচে। ঘুম থেকে কাজ— সব একসঙ্গে হচ্ছে। হাসতে হাসতে বললেন, “কাকতালীয় ভাবে একই স্টুডিয়োয় আমাদের শুটিং হচ্ছে। আলাদা থাকার কোনও সুযোগই নেই।”