Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

মহিলারা নিপুণ হাতে সামলালেন বুথও

ভোটারদের লম্বা লাইন। বন্দুক উঁচিয়ে হাজির কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। ভেসে আসছে ইভিএমের চিরপরিচিত ‘বিপ’ আওয়াজ। বুথের ভিতরে যাঁরা ভোটকর্মী, তাঁরা প্রত্যেকেই মহিলা। আর গোটা বুথেই গোলাপি রঙের ছোঁয়া।

শান্তিপূর্ণ মহিলা পরিচালিত বুথ। সাঁইথিয়ায়। (ডান দিকে) তিলপাড়ার গ্রামে ভোট দেখতে ভিড় খুদেদের।

শান্তিপূর্ণ মহিলা পরিচালিত বুথ। সাঁইথিয়ায়। (ডান দিকে) তিলপাড়ার গ্রামে ভোট দেখতে ভিড় খুদেদের।

দয়াল সেনগুপ্ত
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৪২
Share: Save:

ভোটারদের লম্বা লাইন। বন্দুক উঁচিয়ে হাজির কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। ভেসে আসছে ইভিএমের চিরপরিচিত ‘বিপ’ আওয়াজ। বুথের ভিতরে যাঁরা ভোটকর্মী, তাঁরা প্রত্যেকেই মহিলা। আর গোটা বুথেই গোলাপি রঙের ছোঁয়া। কোথাও গোলমাল নেই। নির্বিঘ্নে হাসিমুখে ভোট করাচ্ছেন ভোটকর্মীরা।

জেলার প্রায় তিন হাজার বুথের মধ্যে শুধুমাত্র মহিলা পরিচালিত ৫০টি ভোটকেন্দ্র ছিল। কিন্তু, গোলাপী রং কেন? ভোটকর্মীরা জানালেন, নারীশক্তি বিকাশের প্রতীক গোলাপি রং। সে কারণেই গোলাপি রং ব্যবহার বলে জানিয়েছে জেলা নির্বাচনী দফতরও। মাসখানেক আগে জেলা মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক তথা জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলেছিলেন, ‘‘গোলাপি রঙের ছোঁয়া থাকবে সর্বত্র। পোলিং থেকে প্রিসাইডিং এমনকী নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মহিলা পুলিশ কর্মীর পোশাকও হবে গোলাপি।’’

পরিকল্পনা যদিও সম্পূর্ণ হল না। জেলা নির্বাচনী দফতরের কর্তারা বলছেন, মোট ২৫২ জন মহিলা ভোট কর্মীর সঠিক মানের পোশাক বানানোর সমস্যা এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান দিয়েই নির্বাচন করাতে হচ্ছে বলে নিরাপত্তার দায়িত্বে মহিলা পুলিশ কর্মীদের ব্যবহার ও পোশাক পরিকল্পনা বাদ দিতে হয়। তা সত্বেও মহিলা পরিচালিত বুথগুলিতে গেলে অন্য অনুভূতি হচ্ছিল, এমনটা বলছেন ওই এলাকার ভোটাররাই।

দুবরাজপুরের দুটি স্কুলে মোট পাঁচটি মহিলা পরিচালিত বুথে ঘুরে তেমনই মনে হল। তিনটি মহিলা পরিচালিত বুথ হয়েছিল দুবরাজপুর আরবিএসডি উচ্চ বিদ্যালয়ে। চারদিকে গোলাপি ও সাদা বেলুন দিয়ে সাজানো ছিল ভোটকেন্দ্র। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের অনুরোধ উপক্ষা করে মহিলা ভোট কর্মীদের কাছে পৌঁছনো যায়নি। তবে ভোট দিয়ে নতুন ভোটার মধুরিমা মিশ্র এবং গৃহবধূ ইন্দ্রানী ভট্টাচার্যরা বলছেন, ‘‘খুব ভাল লাগল।’’ অন্য দিকে, দুবরাজপুর সারদেশ্বরী বিদ্যামন্দির ফর গার্লসের দুটি বুথে সাজগোছের ছবিটাও বেশ ভাল ছিল।

সকাল থেকে লম্বা লাইন পড়লেও পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের (যেহেতু ওই স্কুলের মধ্যেই ক্যাম্প হয়েছে) মহিলা ভোটকর্মীরদের দক্ষতায় সব কিছুই চলছিল ঠিকঠাক। পাশাপাশি দুটি বুথে প্রিসাইডিং অফিসারের দয়িত্ব সামলাচ্ছিলেন সুকন্যা সামন্ত এবং মান্তু ঘোষেরা। দু’জনেই শিক্ষিকা। সুকন্যাদেবী দুর্পুরের বাসিন্দা। ইলামবাজারের একটি স্কুলে পাড়ান। অন্য দিকে, মান্তু ঘোষ নিজের স্কুলেই ভোটের দায়িত্ব পেয়েছেন। উভয়েই জানালেন, ‘‘দারুন কাটালাম। কোনও সমস্যা হয়নি।’’ একই বক্তব্য পোলিং অফিসারদেরও। এমনকী একজন করে অতিরিক্ত প্রিসাইডিং অফিসার হিসাবে রয়েছেন, তাঁদেরই একজন সুস্মিতা সাহা। তিনি বলছেন, ‘‘সত্যিই খুব ভাল পরিবেশ।’’ ভোটার সহায়তা কেন্দ্রের রিঙ্কি ঘোষ, বাণী মুখোপাধ্যায়রাও বললেন, ‘‘প্রথম এমন কাজ করলাম। ভাল লাগল।’’

বসার জায়গা, শেডের মধ্যে দাঁড়ানোর জায়গা, অসুস্থ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য হুইল চেয়ার, পর্যাপ্ত পানীয় জল, সাজানো গোছানো পরিবেশ পেয়ে খুশি ভোটাররাও। বেলা ১১টায় নাগাদই দুটি বুথে প্রায় ৫০ শতাংশ ভোট হয়ে গিয়েছিল। দায়িত্ব থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা বলেই ফেললেন, ‘‘এমন ভোট সব জায়গায় হলে আর সমস্যা হতো না!’’ ছবি: অনির্বাণ সেন

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016 Women managed booth
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy