Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
CPM

West Bengal Election 2021: সন্ত্রাসের অভিযোগই অস্ত্র বিরোধীদের

বিরোধীদের অভিযোগ, লকডাউনের পরে সন্দেশখালির বহু মানুষ ভিন্‌ রাজ্য থেকে এলাকায় ফিরেছিলেন। ভেবেছিলেন গ্রামে কাজ পাবেন। কিন্তু তা হয়নি। বেশিরভাগই আবার ফিরতে বাধ্য হয়েছে বিদেশ-বিভুঁইয়ে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নবেন্দু ঘোষ 
সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২১ ০৫:২৫
Share: Save:

রাজনৈতিক হিংসার তালিকায় গত কয়েক বছরে বার বার নাম জড়িয়েছে সন্দেশখালি। কখনও তৃণমূল-বিজেপির মারামারিতে মৃত্যু, বিডিওকে মারধর, দুষ্কৃতী ধরতে গিয়ে পুলিশকর্মীর গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনা— এমন আরও নানা ঘটনায় এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এ বার ভোটে বিরোধীদের প্রচারের অস্ত্র হিসেবে উঠে আসছে এই সব প্রসঙ্গই। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কাজ বা আমপানের ক্ষতিপূরণ বিলি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ আছে। সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক, সিপিএমের নিরাপদ সর্দার বলেন, ‘‘সন্দেশখালির মানুষ নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝতে পারছেন, তৃণমূল কেমন। সেই সঙ্গে আমরা মানুষকে বোঝাতে চাইছি, বিজেপি কেমন। দেশে এবং অন্য রাজ্যে তারা কী করছে।’’ নিরাপদ আরও বলেন, ‘‘এলাকার উন্নয়ন কিছুই হয়নি। শুধু শাসক দলের নেতাদের উন্নতি হয়েছে। সন্দেশখালির সংস্কৃতি, ঐতিহ্য মাটিতে মিশে গিয়েছে গত পাঁচ বছরে।

বিরোধীদের অভিযোগ, লকডাউনের পরে সন্দেশখালির বহু মানুষ ভিন্‌ রাজ্য থেকে এলাকায় ফিরেছিলেন। ভেবেছিলেন গ্রামে কাজ পাবেন। কিন্তু তা হয়নি। বেশিরভাগই আবার ফিরতে বাধ্য হয়েছে বিদেশ-বিভুঁইয়ে।

আমপানের সময়ে ন্যাজাট ১ ও ২ পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ২০ কিলোমিটার নদী বাঁধ ভেঙে যায়। সন্দেশখালি ১ ব্লকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার বাঁধ ভাঙে। প্রচুর ক্ষতি হয়। বিরোধীদের দাবি, সন্দেশখালি ১ ব্লকের প্রায় ৩০ কিলোমিটার বাঁধের অবস্থা ভাল নয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেই বিপত্তির আশঙ্কায় থাকেন মানুষ। তবুও বিভিন্ন বিপজ্জনক অংশে কংক্রিটের বাঁধ নেই।

বিজেপির দাবি, বিধানসভা এলাকা জুড়ে শাসকদলের দুষ্কৃতীরা পুলিশকে ঢাল করে এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উপরে অত্যাচার চলছে। দলের বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তারক ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের কর্মী-সমর্থকেরা সন্দেশখালিতে স্বাধীন ভাবে ভয়মুক্ত হয়ে মিটিং-মিছিল করতে পারেন না। তৃণমূলের কার্যকলাপে সন্দেশখালির মানুষ অতিষ্ঠ।’’ এই বিধানসভা কেন্দ্র দীর্ঘ দিন ধরে বামেদের দখলে ছিল। ২০১৬ সালে তৃণমূল প্রার্থী সুকুমার মাহাতো জয়ী হন। তাঁর দাবি, গত পাঁচ বছরে সন্দেশখালির যা উন্নয়ন হয়েছে, তা অনেক বিধায়ক দশ বছরেও করতে পারেননি। নদীমাত্রিক এলাকায় ন্যাজাট, কালীনগর, ধামাখালি, তুসখালি, সন্দেশখালির মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘাটগুলিতে ভাসমান জেটি তৈরি হয়েছে। ভেসেলে করে মানুষ নিরাপদে নদী পারাপার করছেন। বিভিন্ন এলাকায় পানীয় জলের প্রকল্প হয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার অবস্থা খুবই ভাল। কলকাতায় যাতায়াত করতে অনেক সুবিধা হয়েছে। জেলিয়াখালি-সুখদুয়ানি সেতু তৈরি হচ্ছে। যদিও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অনেক দিন ধরে এই সেতুর কাজ কিছুটা হয়ে বন্ধ হয়ে আছে। এলাকার দুর্নীতির ও সন্ত্রাসের অভিযোগের বিষয়ে সুকুমার বলেন, ‘‘বিরোধীরা একটাও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ করতে পারবেন না। আর এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ থাকলে আমাদের আয়োজিত বিভিন্ন মেলা, অনুষ্ঠানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হত না।’’

ন্যাজাটের বাউনিয়ায় এক মাস হল কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে, ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলে জানালেন তিনি। আপাতত এক কিলোমিটার বাঁধ হবে। পরে আবারও অন্যান্য জায়গায় হবে দাবি সুকুমারের।

২০১৯ সালে সন্দেশখালির ভাঙিপাড়ায় বিজেপি-তৃণমূলের সংঘর্ষে প্রাণ যায় দু’পক্ষের তিনজনের। এখনও নিখোঁজ বিজেপি কর্মী দেবদাস মণ্ডল। তাঁর বাবা বাসুদেব বলেন, ‘‘ভোট আসছে। পুরনো রাজনৈতিক হিংসার কথা মনে পড়ছে। ভয়ে ভয়ে আছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC CPM West Bengal Assembly Election 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy