প্রতীকী ছবি।
টেবিলের উপরে ডাঁই করে রাখা ফাইল। তার ভিতরে ভোটের ডিউটি করতে না-চাওয়ার হাজার হাজার আবেদনপত্র। একটা একটা করে সেই আবেদন পত্র খতিয়ে দেখছেন জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক। তাঁর ঘরের বাইরেও কয়েক জন দাঁড়িয়ে আছেন দেখা করার জন্য। তাঁরাও ভোটের কাজ থেকে অব্যহতি চাইতে এসেছেন।
প্রতি বছরই ভোটের ডিউটি করতে না-চেয়ে আবেদন জমা পড়ে। বিভিন্ন কারণ দেখান আবেদনকারীরা। কিন্তু জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার সেই আবেদনের সংখ্যাটা অনেকটাই বেশি। এখনও পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের কাছে ভোটের ডিউটি করতে না-চেয়ে প্রায় সাড়ে সাত হাজার আবেদনপত্র জমা পড়েছে, যার বেশির ভাগেরই কারণ অযৌক্তিক।
অনেকেই মনে করছেন, এ বার অনেক বেশি সংখ্যক মহিলাকে ভোট কর্মী হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষকদেরও এ বার প্রথম বার ভোট কর্মী হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এঁদের অনেকেরই কখনও ভোটের ডিউটির অভিজ্ঞতা নেই এবং প্রথমবারই হয়তো প্রিসাইডিং অফিসার হয়ে গিয়েছেন। তাতে তাঁরা ভয় পেয়ে গিয়েছেন বা ঘাবড়ে গিয়েছেন। তার উপর দলমত নির্বিশেষে যেমন ‘খেলা হবে’-র হুঙ্কার উঠছে তাতেও অনেকে ভোটের ডিউটি করার সাহস পাচ্ছেন না গোলমালের মাঝে পড়ে যাওয়ার ভয়ে। তাই ভোটের ডিউটি এড়াতে অদ্ভুত সব যুক্তি দিচ্ছেন।
এক জনের আবেদন পত্রে যেমন লেখা আছে, তাঁর সন্তান বুকের দুধ খায় বলে তাঁর পক্ষে সন্তানকে বাড়িতে রেখে ভোটের ডিউটি করা সম্ভব না। কিন্তু সেই শিক্ষিকার সন্তানের বার্থ সার্টিফিকেট খতিয়ে দেখে হতভম্ব হয়ে যান আধিকারিকেরা। জন্ম ২০১০ সাল। অর্থাৎ, এখন ১১ বছর বয়স!
আর এক জন জানিয়েছেন, তিনি অত্যন্ত শোকার্ত। কারণ, তাঁর শ্বশুর দু’বছর আগে মারা গিয়েছেন! এক স্কুল শিক্ষিকা আবার জানিয়েছেন যে, এক জায়গায় বেশিক্ষণ বসে কাজ করলে তাঁর মাথা কাজ করে না। কিছু মনে পড়ে না! এক শিক্ষক জানিয়েছেন যে, ২৮ ফেব্রুয়ারি তাঁর বিয়ে। কেনাটাকাটা করতে হবে। তাই তাঁকে ভোটের ডিউটি থেকে ছাড় দেওয়া হোক।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “কর্তব্য করতে না চাওয়াটাও এক ধরনের অনৈতিকতা।” জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, “ভোটের ডিউটি করতে না-চেয়ে অনেকেই আবেদন করছেন। আমরা প্রতিটি আবেদনপত্রই অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছি, তার পর সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy