মেজিয়ার সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
নন্দীগ্রামে দুর্ঘটনার পর সোমবার থেকেই প্রচার শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দিনভর পশ্চিম মেদিনীপুরে তিনটি সভার পর মঙ্গলবার বাঁকুড়ায় তৃণমূল নেত্রী। শালতোড়া বিধানসভা এলাকার মেজিয়া হাইস্কুল মাঠের জনসভায় একাধিক ইস্যুতে বিজেপি-র বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অমিত শাহের বিরুদ্ধে তুললেন নির্বাচন কমিশনের কাজে হস্তক্ষেপের অভিযোগ। এ ছাড়া দলীয় নেতাদের গ্রেফতার করতে কলকাতায় বসে অমিত শাহ পরিকল্পনা করছেন বলেও অভিযোগ তুলেছেন মমতা।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্র অমিত শাহ সোমবার অসম থেকে কলকাতায় ফিরে এসে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু মমতার অভিযোগ, কলকাতায় বসে তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে হেনস্থা করার পরিকল্পনা করছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘হোম মিনিস্টার কলকাতায় বসে পরিকল্পনা করা করছেন, কাকে গ্রেফতার করা হবে, কাদের পিছনে ইডি-সিবিআই লাগানো হবে।’’
একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কাজে শাহের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ তুলে মমতা বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন কে চালাচ্ছেন? অমিত শাহ চালাচ্ছেন না তো? আমরা চাই নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। কিন্তু অমিত শাহ নির্বাচন কমিশনের কাজে হস্তক্ষেপ করুক, এটা আমরা কিছুতেই মানব না।’’
এই সভার পর আরও দু’টি সভা রয়েছে মমতার। ছাতনা বিধানসভা এলাকার অনুকূল ঠাকুর আশ্রম মাঠ এবং রাইপুর বিধানসভার রাইপুর সাবু সঙ্ঘের মাঠেও জনসভা করবেন তিনি।
মমতার বক্তব্য:
১.১৮: একটা করে ভোট, একটা খেলা। ২৭ তারিখ কিন্তু খেলা খেলতে হবে। বিজেপি ভেবেছে আমার একটা পা ভেঙে দিলে সুবিধা হবে। কিন্তু মনে রাখবেন, সুস্থর চেয়ে আহত বাঘ আরও ভয়ঙ্কর। আমার মা-বোনেদের দুটো পা আছে, তাঁদের পায়ে দাঁড়াব। আমরা ছাত্র-যৌবনের দুটো পা, তাঁদের পায়ে দাড়াব।
১.১৫: তুমি বিপদে পড়লে একটা মানুষকে খেতে দাও না, আর ভোটের সময় টাকা দিয়ে দেখবেন ভোট কেনার চেষ্টা করবে। সেই টাকা ওদের টাকা নয়, আপনার টাকা। সেই টাকা দিতে এলে কী করতে হবে, আমি বলব না।
১.১৪: যখন রক্তদান হয়, আমরা কি মনে রাখি, ওটা কার রক্ত। সেই রক্ত যখন অন্য কারও শরীরে মিশে যায়, সেটা কি আর আলাদা করা যায়? খাদ্যসাথী থেকে শুরু করে, স্বাস্থ্যসাথী থেকে শুরু করে, বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দেব।
১.১১: রেশনে বিনা পয়সায় খাবার দেওয়া হচ্ছে। এ বার রেশন দোকানে যেতে হবে না। বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে যাবে। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বছরে চিকিৎসার জন্য যে ৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়, সেটা চলবে। আমার খাবার এনে দেয় যে, সে কিন্তু বাউরি মেয়ে। আমি বিজেপি-র মতো পাঁচতারা হোটেলের খাবার খেয়ে দেখাই না। আমার ভাইেয়র বউ তফশিলি সম্প্রদায়ের। আমাদের পরিবার এ ভাবেই চলে। কোনও ভেদাভেদ নেই।
১.০৯: চাষিদের কৃষকবন্ধু প্রকল্পের টাকা যেমন দেওয়া হচ্ছে, সেটা চলবে। বড়জোড়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে শুরু করে কোলিয়ারি, কোনও কিছুই বন্ধ করা যাবে না। আমরা আন্দোলন করব। রেল, বিমা, ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ করতে দেব না।
১.০৬: বহিরাগত গুন্ডা এনে এ রাজ্যে ভোট করতে দেব না। আমি তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের বলি, আপনারা আগে ১২ ঘণ্টা কাজ করলে এখন ১৮ ঘণ্টা কাজ করুন।
১.০৪: হোম মিনিস্টার কলকাতায় বসে পরিকল্পনা করা করছেন, কাকে গ্রেফতার করা হবে, কাদের পিছনে ইডি-সিবিআই লাগানো হবে। নন্দীগ্রামে যাঁরা আন্দোলন করেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এখন মামলা করা হচ্ছে। সংবাদ মাধ্যম কে চালাচ্ছেন। নির্বাচন কমিশন অমিত শাহ চালাচ্ছেন না তো? আমরা চাই নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। কিন্তু অমিত শাহ নির্বাচন কমিশনের কাজে হস্তক্ষেপ করুক, এটা আমরা কিছুতেই মানব না। বন্যা হলে আসে না, ঝড় হলে আসে না, কোভিড হলে আসে না। আর নির্বাচনের সময় আসলে বলে বাংলা চাই।
১.০১: সারা ভারতে বিজেপির জমানায় পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়ানোয় সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে। গ্যাসের দাম বাড়ানোয় সমস্যা বাড়ছে। আপনারা বিজেপিকে বলুন, আমরা বিনা পয়সায় খাবার দিচ্ছি। আপনারাও বিনা পয়সায় গ্যাস দিন। কেন দেবেন না। আপনাদের হাতে গ্যাস রয়েছে। আজ থার্মাল পাওয়ার, ব্যাঙ্ক, রেল, বিমাকে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে ব্যাঙ্কে টাকা রেখেও আপনারা ফেরত পাবেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
১২.৫৮: আমি মাথায় অনেক বার আঘাত পেয়েছি, মাথায় পেয়েছি, কোমরে পেয়েছি। সব আঘাত সহ্য করেছি। কিন্তু মানুষের পায়ে আঘাত লাগলে দাঁড়াতে না পারার যে যন্ত্রণা, তা যাঁরা পেয়েছেন, তাঁরাই বুঝবেন। চিকিৎসকরা আমাকে নিষিদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু আমি বাইরে বেরিয়েছি এই কারণে যে, আমি ঘরে বসে থাকলে বিজেপি যে যন্ত্রণা মানুষকে দেবে, তা থেকে মানুুষ নিস্তার পাবেন না। আমার যন্ত্রণা হলেও মানুষের যন্ত্রণা যাতে না হয়, তার জন্য়ই এই সিদ্ধান্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy