Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Mamata Banerjee

Bengal Polls: ঘরে ঘরে রেশন পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কমিশনের নজরে মমতা, চাওয়া হল রিপোর্ট, ভিডিয়ো

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এমনিতেই সকলে বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছেন। ’২১-এ ক্ষমতায় এলে দোরগোড়াতেই রেশন পৌঁছে দেবে তাঁর সরকার।

কমিশনের নজরে মমতা।

কমিশনের নজরে মমতা।

সংবাদ সংস্থা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২১ ২৩:০৫
Share: Save:

বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছনোর প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে পদক্ষেপ করতে উদ্যত হল নির্বাচন কমিশন। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম এমনটাই জানিয়েছে। নির্বাচনী আদর্শ আচরণ বিধি চালু হয়ে যাওয়ার পরেও প্রকাশ্য জনসভায় মমতা কোনও জনকল্যাণমূলক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কি না, তা নিয়ে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে তারা। সোম এবং মঙ্গলবার পুরুলিয়ার যেখানে যেখানে সভা করেন মমতা, সেখানকার জনসভার বক্তৃতা কোনও ভাবে বিকৃত না করে কমিশনের হাতে তুলে দিতে হবে বলেও জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নন্দীগ্রামে আহত হওয়ার পর সোমবার থেকে ফের জেলাসফরে বেরিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। গতকাল পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডি এবং বলরামপুরে জনসভা করেন তিনি। বাঘমুণ্ডির সভাতেই বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। মমতা জানান, তাঁর সরকার এমনিতেই সকলে বিনামূল্যে রেশন দিচ্ছে। ’২১-এ ক্ষমতায় এলে এ বার আর রেশন দোকানে গিয়ে চাল-ডাল সংগ্রহ করতে হবে না সাধারণ মানুষকে। বরং তাঁদের দোরগোড়ায় সবকিছু পৌঁছে দেবে সরকার। মঙ্গলবার শালতোড়া বিধানসভা এলাকার জনসভা থেকেও বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। তৃণমূল সূত্রে খবর, বুধবার দলের ইস্তাহারে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পের উল্লেখ থাকছে। জেলাসফরে সে কথারই উল্লেখ করেছেন মমতা। কিন্তু বিষয়টি যে কমিশনের নজর এড়ায়নি, তা বোঝা গেল বিকেল গড়াতেই।

এ নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও, এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত তাঁদের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে গোটা ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীকে ‘ঝামেলা’ পোহাতে হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সংবিধান বিশেষজ্ঞ বিশ্বনাথ চক্রবর্তীর মতে, এখনও মুখ্যমন্ত্রী পদে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘ পদে থেকে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে কোনও প্রকল্পের কথা ঘোষণা করতে পারেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়।’’

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশ করে কমিশন। সেই দিন থেকেই রাজ্যে আদর্শ আচরণ বিধি চালু হয়ে যায়। সেই অনুযায়ী, ভোটপর্ব চলাকালীন নতুন প্রকল্প ঘোষণার অনুমতি নেই রাজ্য সরকারের। মমতা সেই বিধি লঙ্ঘন করেছেন কি না, নিজে থেকেই তা খতিয়ে দেখছে কমিশন। বিশ্বনাথের মতে, কমিশন যদি মমতার কথায় বিধি লঙ্ঘিত হয়েছে বলে মনে করে, সে ক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হতে পারে। দিনের অর্ধেক সময়ের জন্য তাঁর প্রচারের উপর বসানো হতে পারে নিষেধাজ্ঞা। আবার শুধুমাত্র সতর্ক করে দেওয়াও হতে পারে। তা নিয়ে কৈলাসের বিরুদ্ধে কমিশনের দ্বারস্থও হন ফিরহাদ হাকিম।

নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়ার পর এর আগে, একাধিক বার রাজ্যে প্রচারে এসে একাধিক প্রতিশ্রুতি দিতে দেখা গিয়েছে বিজেপি নেতৃত্বকে। রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে ষাটোর্ধ্ব কীর্তন শিল্পীরা পেনশন পাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তা নিয়ে কৈলাসের বিরুদ্ধে কমিশনের দ্বারস্থ হন ফিরহাদ হাকিম। এ ছাড়াও, সোমবার পুরুলিয়ায় মমতার সভার দিনই বাঁকুড়ার রানিবাঁধে প্রচারে গিয়ে আদিবাসীদের ঘরে শংসাপত্র পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলে সপ্তম বেতন কমিশন চালু হবে, শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। আদিবাসী মানুষের হাতে নগত ১৮ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার আবার বাঁকুড়ায় গিয়ে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা প্রতিশ্রুতি দেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে রাজ্যের মাহিষ্য-তিলিদের সংরক্ষণের আওতায় আনা হবে। তবে বিশ্বনাথের মতে, কৈলাস, শাহ, নড্ডা, এঁরা কেউই রাজ্যের ক্ষমতাসীন সরকারের অংশ নন। তাঁদের ক্ষেত্রে আচরণ বিধি খাটে না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE