আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা টালিগঞ্জের প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়।
নীলবাড়ির লড়াই শেষে ক্ষমতায় এলে রাজ্যের প্রধান সচিবালয়কে নবান্ন থেকে ফের মহাকরণে ফিরিয়ে আনতে চায় বিজেপি। দলের তরফে এমন ভাবনার কথা আগেই জানানো হয়েছে। কিন্তু নবান্নের কী হবে? তা নিয়ে কোনও কথা বলা হয়নি এখনও। আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা টালিগঞ্জের প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় নবান্ন নিয়ে তাঁর ইচ্ছের কথা জানিয়ে ফেললেন নেট মাধ্যমে। তাঁর মতে, নীলবাড়িকে গরিব মানুষের জন্য হাসপাতাল বা বৃদ্ধাশ্রম বা ছাত্রাবাস করে ফেলা উচিত।
আনন্দবাজার ডিজিটাল এ বারের বিধানসভা নির্বাচনকে ‘নীলবাড়ির লড়াই’ শিরোনামে সামনে এনেছে। সেই ‘নীলবাড়ির লড়াই’-এর লোগো ফেসবুকে তুলে বাবুল লিখেছেন, কেন এই নির্বাচনকে ‘নীলবাড়ির লড়াই’ বলা হচ্ছে তা তাঁর জানা নেই। তাঁর প্রশ্ন, ‘বিজেপি কি কখনও বলেছে যে, সরকার গড়ে নীলবাড়িটিকেই হেডকোয়ার্টার করবে’? এর পরেই বিজেপি সাংসদ তাঁর মত জানিয়েছেন। লিখেছেন, ‘আমি তো বরঞ্চ মনে করি, ওই নীলবাড়িটিতে বসে চরম জনবিরোধী ও একান্তই নিষ্ঠুর ও অনৈতিক যে সব কাজকর্ম করেছেন মাননীয়া মমতা ব্যানার্জী, তাতে ওই বাড়িটি বাংলার ইতিহাসে একটি অভিশপ্ত বাড়ি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থেকে যাবে’! বাবুলের মতে, ‘নীলবাড়িটির শাপমুক্তি হতে পারে একমাত্র যদি ওটিকে একটি গরিব মানুষের হাসপাতাল বা মনোরম একটি বৃদ্ধাশ্রম বা গ্রামগঞ্জের যে সব ছাত্র কলকাতায় পড়তে আসে, তাদের জন্য একটি ছাত্রাবাসে রূপান্তরিত করা হয়’!
এর আগে রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য দাবি করেছিলেন, মহাকরণের সঙ্গে বাঙালির আবেগ এবং সুপ্রাচীন ঐতিহ্য জড়িয়ে রয়েছে। সেই আবেগকে সম্মান জানাতেই তাঁরা মহাকরণে প্রশাসনের প্রধান কার্যালয় ফিরিয়ে আনতে চান। বাবুল যদিও মহাকরণে ফেরার প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে, তিনি নবান্নে কী হওয়া উচিত তা নিয়েই নেটমাধ্যমে সরব হয়েছেন।
স্বাধীনতার পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সদর দফতর ছিল মহাকরণ। ১৭৭৬ সালে মূলত ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রাইটার (করণিক)-দের থাকার জন্য তৈরি হয়েছিল এই ভবন। আর সেই কারণেই লালদিঘি পাড়ের ভবনটির নাম হয় রাইটার্স বিল্ডিং। সেই থেকেই পরে মহাকরণ। ২০১১-য় রাজ্যে পালাবদলের কিছু দিন পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার মহাকরণ সংস্কারের জন্য রাজ্য প্রশাসনের মুখ্য সচিবালয় গঙ্গার ও পারে হাওড়ার নবান্নে সরিয়ে নিয়ে যায়। ওই বহুতলটি হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স (এইচআরবিসি)-এর। বাবুলের পোস্ট বলছে, বিজেপি ক্ষমতায় এলে নবান্নে আর থাকবে না রাজ্যের প্রশাসনিক সদর দফতর। কিন্তু সরকার বদল হলেই প্রশাসনিক সদর দফতর বদলানো কি উচিত? দিল্লিতে বাবুলের দল যখন নতুন ভাবে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসে, তখন কিন্তু প্রশাসনিক সদর দফতর সাউথ ব্লক বা নর্থ ব্লক থেকে সরিয়ে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়নি। দীর্ঘ দিন ধরেই ওই দুই ব্লক কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশাসনিক সদর দফতর হিসেবেই রয়েছে।
যদিও বাবুলের এই পোস্টকে গুরুত্ব দিতে চান না তৃণমূলের প্রবীণ নেতা তথা সাংসদ সৌগত রায়। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘বাবুল একটা পাগল। বাবুলের কথায় কী এসে যায়! বাবুল কী ওঁর দলের সর্বভারতীয় সভাপতি! ওঁকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে একটা জায়গার বিধায়ক পদপ্রার্থী করে দেওয়া হয়েছে। তাতেই বোঝা যায়, দলে ওঁর অবস্থান কী! ওঁর কথায় গুরুত্ব দিতে যাব কেন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy