নরেন্দ্র মোদী ফাইল চিত্র।
নীলবাড়ির লড়াইয়ে মোট ২২টি জনসভা করার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। কিন্তু রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় শেষ দু’টি সফর বাতিল হয়। এর পরেও তিনি একদিনে ৪টি সমাবেশ করবেন ঠিক করেছিলেন। কিন্তু শেষে তাও বাতিল করে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন তিনি। মালদহ, মুর্শিদাবাদ, সিউড়ি ও দক্ষিণ কলকাতার সমাবেশ বাতিল হলেও বাংলার জন্য অনেকটাই সময় দিয়েছেন মোদী। সেই সঙ্গে অমিত শাহ, জে পি নড্ডা, যোগী আদিত্যনাথরা মিলেও শ’খানেক সভা বা রোড-শো করে ফেলেছেন।
কিন্তু মোদী যেখানে যেখানে এলেন, সেখানে বিজেপি কেমন ফল করল? উত্তর খুঁজতে গিয়ে যা দেখা যাচ্ছে তাতে সেই ফল মোটেও স্বস্তির নয় মোদীর কাছে। নীলবাড়ির লড়াইয়ে মোদীর প্রচার পর্ব শুরু হয়ে যায় ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশের অনেক আগেই। তাঁর প্রথম সভাটি ছিল ৭ ফেব্রুয়ারি হলদিয়ায়। সে দিন মূলত সরকারি কর্মসূচিতে এসেছিলেন তিনি। একগুচ্ছ প্রকল্প সূচনার পাশাপাশি একেবারে শেষ মুহূর্তে ঠিক হয় তিনি একটি দলীয় কর্মসূচিতেও যোগ দেবেন। সেই মতোই পাশাপাশি দু’টি মঞ্চে দলীয় ও সরকারি সভা হয়। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে ২৪ মার্চ আরও একটি সভা করেন মোদী। হলদিয়া আসনে বিজেপি জয় পেলেও জেলার বাকি আসনে আশাপূরণ হয়নি। কাঁথি উত্তর ও দক্ষিণ দুই আসনেই পরাজিত বিজেপি। নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীকে অল্পের জন্য জেতাতে পারেন মোদী।
এর পরে ওই মাসেরই ২২ তারিখ হুগলির সাহাগঞ্জে সভা ছিল মোদীর। হুগলিতে রীতিমতো খারাপ ফল বিজেপির। অধিকাংশ আসনে হার শুধু নয়, মোদী যেখানে সভা করেছিলেন সেই আসনে সাংসদ লকটে চট্টোপাধ্যায় পরাজিত। ওই সমাবেশ মূলত ছিল হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিধানসভা আসনগুলির জন্য। যার সবকটিতেই পরাজিত বিজেপি।
মার্চ মাসে মোট ৫টি বাংলা সফর ছিল মোদীর। শুরু ৭ মার্চ কলকাতার ব্রিগেডে সমাবেশে। এর পরে আর কলকাতায় আসেননি মোদী। তবে একের পর এক সভায় প্রায় গোটা রাজ্যে প্রচার চালিয়েছেন। ১৮ মার্চ পুরুলিয়ায়, ২০ মার্চ খড়্গপুরে, ২১ মার্চ বাঁকুড়ায়। কলকাতায় অনেক আশা করেও বলা যায় দাগ কাটতেই পারেনি গেরুয়াশিবির। আর গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এগিয়ে থাকা পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় বিজেপির ফল খুবই খারাপ। আর মোদীর সভাস্থল বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া আসনে জয়ী তৃণমূল। তবে মোদীর সমাবেশ করা খড়্গপুর সদর আসনে জয় পেয়েছে বিজেপি। যদিও পশ্চিম মেদিনীপুরের সার্বিক ফল বলছে তৃণমূল অনেক এগিয়ে।
দ্বিতীয় দফার দিনে ১ এপ্রিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর সভা করেন মোদী। কিন্তু এই জেলায় সে ভাবে দাগই কাটতে পারেনি বিজেপি। গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এই জেলায় কোনও আসনেই এগিয়ে ছিল না বিজেপি। তৃণমূলের গড় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জোড়াফুলের দখলেই রয়ে গেল। হাওড়া জেলায় দু’টি সভা করেন মোদী একটি উলুবেড়িয়ায় ও অপরটি ডুমুরজলায়। রবিবার ফল বলছে উলুবেড়িয়া উত্তর ও দক্ষিণ দুই আসনেই জয়ী তৃণমূল। এই জেলায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে আসা প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে অনেক ভরসা ছিল গেরুয়াশিবিরের। কিন্তু তিনিও ডোমজুড় আসনে পরাজিত।
বরং সফল বলা যেতে পারে শিলিগুড়ি, কোচবিহারে হওয়া মোদীর সভা। শিলিগুড়ি-সহ দার্জিলিং জেলায় সব আসনেই জয় পেয়েছে বিজেপি। অন্য দিকে কোচবিহার উত্তরে জিতলেও দক্ষিণে পরাজিত বিজেপি। আর জেলায় ৯ আসনের মধ্যে বিজেপি জয় পেয়েছে ৬ আসনে। নদিয়ার কৃষ্ণনগরেও সভা করেছেন মোদী। কৃষ্ণনগর উত্তরে মুকুল রায় জিতলেও বিজেপি হেরেছে দক্ষিণ আসনটি। এই জেলার কল্যাণীতেও সভা করেছেন মোদী। নদিয়ায় খুব ভাল ফলের আশা করা বিজেপি শেষ পর্যন্ত ১৭-র মধ্যে পেয়েছে ৮।
এ ছাড়াও মোদী সভা করেছেন পশ্চিম বর্ধমানে আসানসোলের কাছে তালিত ও উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে। আসানসোল দক্ষিণে বিজেপি জিতলেও হেরেছে উত্তরে। আর বারাসতেও পরাজিত বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy