অফিসে তিলক চক্রবর্তী (বাঁদিকে)। বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজস্ব চিত্র
করোনার সংক্রমণ বাড়ুক, বা নিজের কেন্দ্রে ভোট মিটে হোক— প্রচার মিটছে না রাজনৈতিক দলগুলির প্রার্থীদের
পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল বিধানসভা কেন্দ্রে গত ১ এপ্রিল ভোট মিটে গিয়েছে। কিন্তু এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অন্য জেলার ভোট প্রচারে ঘুরছেন বাইরে। তৃণমূল এবং সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীরা এলাকাতেই রয়েছেন। তবে তারা কেউ ঘরে বসে নেই। ভোটের ফলাফলের আগে নিজেদের মতো করে সেরে ফেলছেন জনসংযোগ।
মহিষাদলের বিদায়ী বিধায়ক এলাকার বাসিন্দা ছিলেন না। এ নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভ ছিল দীর্ঘদিনের। ওই অভিযোগকে মাথায় রেখেই তৃণমূল এবং বিজেপি— দু’টি রাজনৈতিক দলই এবার এই বিধানসভা এলাকায় ভূমিপুত্রদের প্রার্থী করে। তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন প্রার্থী তিলক চক্রবর্তী এবং বিজেপি’র প্রার্থী বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিলক এলাকায় পরিচিত মুখ। দীর্ঘদিন দলের ব্লক সভাপতি হিসাবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতিও। ভোট মিটে গেলেও প্রতিদিন তাঁর বাড়িতে বিভিন্ন প্রয়োজনে মানুষজন আসেন। প্রাতঃরাশ করতে করতেই বাড়িতে আসা লোকজনের সঙ্গে কথাবার্তা সেরে নেন তিনি। দুপুরের খাবার খেয়ে রওনা দেন পঞ্চায়েত সমিতিতে। সন্ধ্যায় চলে যাচ্ছেন দলীয় ব্লক কার্যালয়ে। এরপর রাত পর্যন্ত দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে চলে আলোচনা। জনসংযোগ বাড়াতে করোনা কালেও মহিষাদলের বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন তিলক।
জেতার ব্যাপারে আশাবাদী এই তৃণূল প্রার্থী হাজার ব্যস্ততার মধ্যেও স্ট্রং রুমের খোঁজখবর নিতে ভুলছেন না। তিনটি শিফটে দলীয় কর্মীদের স্ট্রং রুমে থাকার নির্দেশ দিয়েথেন। সেখানের পরিস্থিতি বুঝতে মাঝেমাঝেই কর্মীদের ফোন করছেন। তিলক বলেন, ‘‘ভোট চলে যাওয়া মানেই মানুষের সম্পর্ক সঙ্গে সব সম্পর্ক নষ্ট করে দেওয়া নয়। যেমন ভাবে মানুষের পাশে ছিলাম, তেমন ভাবেই পাশে থাকব।’’
বিজেপি প্রার্থী বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় মহিষাদল ব্লকের লক্ষ্যা-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা। মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা। বর্তমানে নদিয়ায় ভোট প্রচার করছেন। তবে যখন এলাকায় থাকেন, তখন সকালে বাড়িতে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এখনের কর্মসূচি মতো দুপুরের খাওয়া বেশিরভাগ দিনই খেতে হয় ঘরের বাইরে। বিকালে চলে যান দলীয় অফিসে। ভোটের পরে দলীয় কর্মী রাজনৈতিক হিংসার শিকার হয়েছেন। বেতকুন্ডু গ্রাম পঞ্চায়েতের শুকলালপুরের আহত ওই কর্মীকে উদ্ধার করতে গিয়ে বিশ্বনাথ নিজেও আক্রান্ত হয়েছেন। এই বিজেপি প্রার্থীর আক্ষেপ, ‘‘আমি সৌজন্যের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। তিলকবাবু যখন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, তখন ফোন করে তাঁর খোঁজখবর নিয়েছি। কিন্তু আমি যথন আক্রান্ত হয়েছি, তখন তিনি আমার খোঁজ নেননি। আসলে উনি সৌজন্যের বোধের তোয়াক্কা করেন না। বিজেপি অশান্তির পক্ষে নয়, শান্তির পক্ষে। নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে ১০০ শতাংশ আশাবাদী।’’
মহিষাদলের সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী বিক্রম চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘আমপান ও লকডাউনে বামেরাই মানুষের পাশে ছিল। তখন তৃণমূল ও বিজেপিকে দেখা যায়নি। মানুষ সেটা মনে রেখেছে। সেজন্য জেতার ব্যাপারে একশ ভাগ আশাবাদী।’’
যে দলের প্রার্থীই জয়ী হন না কেন, এক জন ভূমিপুত্র বিধায়ক হবেন জেনে খুশি মহিষাদলবাসী। তাঁদের একাংশের কথায়, ‘‘বিধায়কের শংসাপত্র পাওয়ার জন্য তো আর মাসের নির্দিষ্ট একটি দিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে
হবে না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy