ছবি: পিটিআই।
ইঙ্গিত ছিল দু’বছর আগে থেকেই। লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ১২ হাজার ভোটের ব্যবধানে ওই বিধানসভা এলাকা থেকে এগিয়ে ছিলেন তৃণমূলের অভিনেত্রী-প্রার্থী মিমি চক্রবর্তী। এ বার সেই ব্যবধানই আরও একটু বাড়িয়ে যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের দখল নিল তৃণমূল।
বামেদের ঘাঁটি হিসেবেই যাদবপুরের সাধারণ পরিচয়। তৃণমূলের জয়ে রবিবার যাদবপুর বামেদের হাতছাড়া হল ঠিকই। কিন্তু অন্য কারণে কিছু স্বস্তিও খুঁজে নিচ্ছেন বাম কর্মী-সমর্থকেরা। যে যাদবপুরে সব ধরনের বাম ছাত্র ও যুব সংগঠন প্রবল বিজেপি-বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলেছেন, সেখানে বিজেপি জয়ের রাস্তা খুঁজে পায়নি। স্বস্তি বলতে তাঁদের কাছে এইটুকুই।
কলকাতা পুরসভার এলাকার মধ্যে পড়ে, এমন সব অঞ্চলে যখন তৃণমূলের বিধায়ক হয়ে গিয়েছেন, তখনও একমাত্র লাল বিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছিল যাদবপুর। এ বারও প্রচার ও পরিশ্রমে কোনও ঘাটতি রাখেননি বাম কর্মী-সমর্থকেরা। তৃণমূলের দেবব্রত (মলয়) মজুমদার বা বিজেপির রিঙ্কু নস্করের চেয়ে কোনও কোনও ক্ষেত্রে বরং প্রচারে বেশি চোখে পড়ছিল বামেরাই। ফল ঘোষণার পরে এ দিনের যাদবপুর তুলনায় একেবারেই সুনসান। ভোটের পরে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বিদায়ী বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী। হাসপাতাল থেকে ফিরে অশক্ত শরীরে তিনিও আর বাইরে বেরোননি।
গত পাঁচ বছর বিধানসভায় বামেদের পরিষদীয় দলনেতা ছিলেন সুজনবাবুই। বলিয়ে-কইয়ে নেতা হিসেবে বিভিন্ন আন্দোলনে, প্রতিবাদে সামনের সারিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ব্যবহারে ‘ভাল মানুষ’, বিধায়ককে প্রয়োজনে ডাকলে পাওয়া যায়— এমন কথা বলার লোক অনেক ছিলেন এ বারের যাদবপুরে। তবু ভোটের ফল কেন অন্য কথা বলছে? সুজনবাবুর মতে, ‘‘সারা রাজ্যে যা হয়েছে, যাদবপুর তার থেকে আলাদা হয়নি। মানুষ মনে করেছেন, এরা ভাল মানুষ, ঠিক কথা বলছে কিন্তু এখন এরা থাক। বিজেপিকে রুখতে দরকার তৃণমূলকেই, এই ভাবনা থেকেই মানুষ ভোট দিয়েছেন বলে মনে হয়।’’
তৃণমূলের বিজয়ী প্রার্থী দেবব্রতবাবুর বক্তব্য, ‘‘মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে আস্থা রেখেছেন। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আস্থা রাখার মতো মুখ তৃণমূল নেত্রীই, এই ভোটের ফলে সেটাই প্রমাণিত।’’ পুর-রাজনীতিতে তাঁর দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা যাদবপুরের উন্নয়নের কাজে লাগাতে চান দেবব্রতবাবু।
দশ বছর আগে এই যাদবপুরেই প্রাক্তন আমলা এবং তৃণমূল প্রার্থী মনীশ গুপ্তের কাছে হেরে গিয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পরের বার মনীশবাবুকেই হারিয়ে যাদবপুর পুনরুদ্ধার করেছিলেন সুজনবাবু। এ বার আবার পরিবর্তন! গড়ফার বাসিন্দা এক পরিবহণকর্মীর সবিস্ময় মন্তব্য, ‘‘যাদবপুরে বিজেপি কোনও ভাবেই জিতবে না, জানতাম। তবে ভোট দেওয়ার দিনও ভাবিনি, ফল শেষ পর্যন্ত এই রকম হবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy