উলুবেড়িয়ায়। ছবি: সুব্রত জানা।
১৬-০।
সবুজ ঝড়ে হাওড়া জেলায় সব ক’টি আসনে বিজেপি ধূলিসাৎ তো হলই, রক্ষা পেলেন না আমতার কংগ্রেস প্রার্থী অসিত মিত্রও।
স্বচ্ছ ভাবমূর্তির ওই প্রবীণ কংগ্রেস নেতা আমতার বিদায়ী বিধায়ক ছিলেন। এ বারেও প্রার্থী হয়েছিলেন। তৃণমূলের কাছে খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়ে তিনি তৃতীয় হয়েছেন। মূল লড়াই সীমাবদ্ধ থেকেছে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে।
শুধু আমতাই নয়, জেলার ১৬টি কেন্দ্রেই এ বার বাম, কংগ্রেস ও আইএসএফ জোটের প্রার্থীদের তৃতীয় স্থানে সরিয়ে দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি। যদিও, ২০১৬ সালে তারা ছিল তৃতীয় স্থানে।
জেলার মোট ১৬টি আসনের মধ্যে ৬টি (বালি, ডোমজুড়, হাওড়া উত্তর, হাওড়া মধ্য, হাওড়া দক্ষিণ ও শিবপুর) আছে শহরে। আসনগুলি ২০১৬ সালেও ছিল তৃণমূলের হাতে। গ্রামীণ এলাকার ১০টি (সাঁকরাইল, পাঁচলা, জগৎবল্লভপুর, উদয়নারায়ণপুর, আমতা, উলুবেড়িয়া উত্তর, উলুবেড়িয়া পূর্ব, উলুবেড়িয়া দক্ষিণ, শ্যামপুর এবং বাগনান) আসনেও ও বার দাঁত ফোটাতে পারেনি বিজেপি।
২০১৬ সালে আমতা ছাড়া বাকি ৯টি আসন ছিল তৃণমূলের হাতে। এ বারে তারা আমতাও ছিনিয়ে নিয়েছে। উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রে প্রাক্তন ফুটবলার বিদেশ বসুকে প্রার্থী করা নিয়ে নির্বাচনের আগে তৃণমূলে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। তিনি ‘বহিরাগত’ এই যুক্তিতে দলীয় নেতা আব্বাস খান তৃণমূল ছেড়ে আইএসএফে যোগ দিয়ে এই কেন্দ্রে প্রার্থী হয়ে যান। তিনি দাবি করেছিলেন ‘ভূমিপুত্র’ হিসেবে জিতবেন। কিন্তু তিনি শুধু হারেননি, তৃতীয় হয়েছেন। তৃণমূল ছেড়ে আইএসএফ এ যোগ দেওয়া আরও দুই নেতা, পাঁচলার আব্দুল জলিল এবং জগৎবল্লভপুরের সাবির আহমেদও এই দুই কেন্দ্রে প্রার্থী হন। দু’জনেই হেরেছেন। পাঁচলারই আর এক তৃণমূল নেতা মোহিত ঘাঁটি দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন ও প্রার্থী হন। তিনিও পরাজিত। শ্যামপুর ও উলুবেড়িয়া দক্ষিণে বিজেপির দুই তারকা প্রার্থী, যথাক্রমে তনুশ্রী চক্রবর্তী এবং পাপিয়া অধিকারীকেও খালি হাতে ফিরতে হয়েছে।
জেলায় এ বারের নির্বাচনের ফল অনেকটা ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের মতোই হয়েছে। সে বার হাওড়া সদর এবং উলুবেড়িয়া— এই দুই লোকসভার অধীন ১৬টি বিধানসভাতেই তৃণমূল এগিয়ে ছিল বিপুল ভাবে। দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিল বিজেপি। এ বারেও তাই ঘটল। তবে, লোকসভা নির্বাচনে বেশিরভাগ আসনে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের ভোটের যে ব্যবধান ছিল, তা এ বারে নেই। কিছু ক্ষেত্রে কমেছে। কিছু আসনে ব্যবধান বাড়িয়ে নিয়েছে তৃণমূল। যদিও এ সব নিয়ে এখন তাঁরা ভাবছেন না বলে জেলা তৃণমূল নেতারা জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, দল জিতেছে এটাই বড় কথা। এটা উন্নয়নের জয় বলেও দাবি করেছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy