‘‘বাবা গো, মা গো, জ্বলে যাচ্ছে! চোখে-মুখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে দিয়েছে!’’— যাদবপুরের রায়পুরে একটি স্কুলের বুথে সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তীকে ঢুকতে দেখেই চেঁচিয়ে উঠলেন নির্দল প্রার্থীর বুথ এজেন্ট। তাঁর চিৎকারে যেন অনেকটাই ম্রিয়মাণ সিপিএমের বুথ এজেন্ট। এর পরে অবশ্য খানিক ধাতস্থ হয়ে একই অভিযোগে চিৎকার শুরু করলেন তিনিও। ওই বুথে যিনি বিজেপির এজেন্ট, তিনিও চেঁচিয়ে বললেন, ‘‘সুজনদা, আমাদেরও ছিটিয়েছে। সুজনদাই আমাদেরটাও দেখে দেবেন।’’
হলও তা-ই। তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি-সিপিএম এবং নির্দলের সম্মিলিত ‘লঙ্কাগুঁড়ো প্রতিবাদের’ মুখ হয়ে উঠলেন সুজনই। এ নিয়ে হুলস্থুল চলল আরও কিছু ক্ষণ। দরজা ঠেলে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ঢোকার চেষ্টা, মৃদু ধাক্কাধাক্কি, কেন্দ্রীয় বাহিনীর চোখরাঙানি— চলল সবই। শেষে অবশ্য প্রতিবাদী হয়ে উঠলেন ভোটদাতারাই। তত ক্ষণে ঘটনাস্থলে চলে এসেছেন যাদবপুরের তৃণমূল প্রার্থী দেবব্রত (মলয়) মজুমদার। এক ভোটার চেঁচিয়ে বললেন, ‘‘অনেক ক্ষণ তো নাটক হল। এ বার আমাদের ভোটটা দিতে দিন। যা কিছু প্রতিবাদ, ভোটকেন্দ্রের বাইরে গিয়ে করুন।’’ এক তরুণীর আবার মন্তব্য, ‘‘প্রচারের সময়ে এত কুৎসা করেও হয়নি? ভোটের দিনও কেউ কাউকে ছাড়বেন না? কে ভাল, কে খারাপ, এ বার আমাদের বিচার করতে দিন।’’ হাওয়া বিপক্ষে যাচ্ছে বুঝে কোনও পক্ষই অবশ্য ওই এলাকায় আর বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।
শনিবার চতুর্থ দফার ভোটে এই লঙ্কাগুঁড়ো-কাণ্ড ছাড়া যাদবপুরের ভোট মোটের উপরে ছিল শান্তিপূর্ণই। এর মধ্যেও কিছু জায়গায় অবশ্য এজেন্টকে মেরে তুলে দেওয়ার চেষ্টা, বিক্ষিপ্ত কিছু ইভিএম বিভ্রাটের অভিযোগ এসেছে। বিকেলের দিকে এক অধ্যাপক আবার ভোটই দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘ভোট দিতে গিয়ে দেখি, আমার ভোট পড়ে গিয়েছে।’’ বিজেপি প্রার্থী রিঙ্কু নস্করের আবার দাবি, ‘‘কিছু জায়গায় চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে হয়েছে। না হলে এ ভাবে অনেক ভোটই পড়ে যেত।’’ দেবব্রতবাবুরও দাবি, ‘‘ঠিক সময়ে বুথ সামলাতে পেরেছি বলেই এ বার সফল হব।’’
সব নেতার মুখে এই আত্মবিশ্বাসের কথা থাকলেও ছিল না করোনা-সতর্কতার কথা। এ দিনও কোনও প্রার্থীর মুখেই ছিল না মাস্ক। উদাসীন ছিলেন বেশ কিছু ভোটারও। বিনা মাস্কে থাকা ভোটারদের নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক মহিলা কর্মীকে আবার শুনতে হয়েছে, ‘‘বন্দুক রেখে আগে মাস্ক পরুন। ভোটের উপহার হিসেবে করোনা দিয়ে যাবেন নাকি?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy