সংস্কার চলছে জগন্নাথ মন্দিরের। নিজস্ব চিত্র।
মাথা তুলেছে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল ভবন। সওয়া ছ’শো শতকের পুরনো জগন্নাথের রথযাত্রার ইতিহাসসমৃদ্ধ মাহেশকে ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র হচ্ছে। ডেনিশ আমলের বিভিন্ন ঐতিহ্যশালী ভবন জরাজীর্ণ অবস্থা থেকে পুনঃসংস্থাপিত হয়েছে ওই দেশের সরকারের সহযোগিতায়। সে দেশের সংসদীয় দল এসে প্রশংসা করেছেন এই কাজের। বহু প্রতিশ্রুত বাসস্ট্যান্ড হয়েছে। রিষড়ায় চালু হয়েছে মাতৃসদন।
এক নজরে শ্রীরামপুর বিধানসভা কেন্দ্রে গত কয়েক বছরে কাজ কম হয়নি। তবুও নানা অপ্রাপ্তির অভিযোগ ঘুরছে মানুষের মুখে। অধিকাংশই কর্মসংস্থানকে ঘিরে। বাম আমলে বন্ধ হয়ে যাওয়া একাধিক বড় শিল্পের জমিতে গজিয়ে উঠেছে কংক্রিটের জঙ্গল। শিল্প আসেনি। কয়েক হাজার মানুষের রুজিরুটি যে ইন্ডিয়া জুটমিল, সেটি প্রায় তিন বছর বন্ধ। ওয়েলিংটন জুটমিলে আর্থিক সঙ্কট। বন্ধ কল-কারখানার তালিকায় কয়েক মাস আগে যুক্ত হয়েছে শ্রীরামপুর শহরের মাদুরা কোটস। তার আগে এই শহরেরই মদ তৈরির কারখানা। ফলে, বর্তমান প্রজন্মের জন্য বিদায়ী সরকার কতটা ভাল করতে পেরেছে, প্রশ্ন উঠছেই।
বিদায়ী বিধায়ক সুদীপ্ত রায় এ বারেও তৃণমূলের প্রার্থী। ২০০৯ সালে উপ-নির্বাচনে জিতে শ্রীরামপুরের বিধায়ক হন সিঁথির বাসিন্দা সুদীপ্তবাবু। শ্রীরামপুরে পা দিয়েই তিনি বলেছিলেন, রাজ্যের দ্বিতীয় প্রাচীন হাসপাতাল ওয়ালশের পরিষেবা যথাসম্ভব আধুনিক করতে চান। প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে সুপার স্পেশ্যালিটি ভবন হয়েছে সেখানে। বেশ কিছু পরিষেবাও মিলছে।
তবে বিরোধীদের অভিযোগ, ঝাঁ-চকচকে ভবনই সার, পরিষেবা তিমিরেই। ভাল মানের চিকিৎসক নেই। সব চিকিৎসা হয় না। বহু ক্ষেত্রেই রোগীকে কলকাতায় স্থানান্তরই দস্তুর। এ ছাড়াও, দুর্নীতির অভিযোগ, পরিকাঠামোগত উন্নয়ন নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।
শহরে ভাল মানের সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্র নেই বলে সাংস্কৃতিক কর্মীদের অনুযোগ। ক্রীড়াপ্রেমীদের খেদ, আধুনিক মানের স্টেডিয়াম না-থাকায়। আধুনিক প্রেক্ষাগৃহ বা স্টেডিয়ামের অভাবের কথা সুদীপ্তবাবু মানছেন। তবে অন্যান্য ক্ষেত্রে অভিযোগ তিনি উড়িয়ে দিচ্ছেন। পাল্টা উন্নয়নের ধ্বজা ওড়াচ্ছে তাঁর দল তৃণমূল।
ইন্ডিয়া জুটমিল পয়লা এপ্রিল থেকে খুলছে। শুরু হয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ। এই মিল খুলতে মালিকপক্ষের জমি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করেছে রাজ্য সরকার। এ জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানির কাছে দরবার করেছিলেন সুদীপ্তবাবু। তাঁর বক্তব্য, কল-কারখানায় সমস্যা হলে মধ্যস্থতা করে খোলার চেষ্টা করা হয়েছে। ওয়েলিংটন জুটমিলে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন না থাকলেও সেই চেষ্টা জারি থেকেছে। রিষড়া বা দিল্লি রোডের ধারে প্রচুর কারখানা রয়েছে, যা বহু লোকের কর্মসংস্থানের ঠিকানা। মৃতপ্রায় সরকারি স্পিনিং মিলের পুনরুজ্জীবন হয়েছে। এই শিল্পকে যে ভাবে ঘুরে দাঁড় করানো হয়েছে, তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে সুদীপ্তবাবুর দাবি।
সাধারণ মানুষের খেদ, ২০১১ সালে তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পরে রিষড়া সেবাসদন হাসপাতাল রাজনীতির আবর্তে পড়ে বন্ধই হয়ে যায়। বিভিন্ন সময়ে পুনরুজ্জীবনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা হয়নি। সম্প্রতি অবশ্য প্রশাসনের তরফে কিছুটা উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। হাসপাতালটি ওয়ালশের সঙ্গে সংযুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন সুদীপ্তবাবু। শ্রীরামপুরে দু’টি ফেরিঘাট পাকা হচ্ছে। পানীয় জল সরবরাহ পরিকাঠামো ঢেলে সাজা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy