লকেট চট্টোপাধ্যায়।
আগেরটা ছিল লোকসভা নির্বাচন। এটা বিধানসভা। তবু চুঁচুড়ায় নিজের রেকর্ডই নিজে ভাঙতে চান লকেট চট্টোপাধ্যায়। রাজনৈতিক জীবনে খুব কম সময়ে অনেক পথ পার করেছেন। গত বিধানসভা নির্বাচনে পদ্ম-প্রার্থী লকেট ময়ূরেশ্বরে হেরেছিলেন। আর এ বার নীলবাড়ির লড়াইয়ে তিনি প্রার্থী হুগলির চুঁচুড়া কেন্দ্রে। মাঝের সময়টায় তিনি বিজেপি-র মহিলার মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী থেকে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। হুগলি থেকে লোকসভায় সাংসদ হয়েছেন। সেই লোকসভা আসনেরই একটি বিধানসভা কেন্দ্র চুঁচুড়া।
২০১৬ সালের নির্বাচনের হিসেব দেখলে অবশ্য এই আসনে বিজেপি-র কোনও আশা করাই উচিত নয়। সে বার ৫০.২৩ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃণমূলের অসিত মজুমদার জিতেছিলেন। ব্যবধান ছিল ২৯,৬৮৪। আর বিজেপি-র চম্পা চক্রবর্তী পেয়েছিলেন ২৫,১২০ ভোট। পদ্মের ভোট প্রাপ্তির হার ছিল ১০.৬৪ শতাংশ। এ বারও বিজেপি-র লড়াই তৃণমূলের অসিতের সঙ্গেই। কিন্তু গত ৫ বছরে গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। গঙ্গাপারের চুঁচুড়ায় তাই দল ‘সুবিধাজনক’ বলেই মনে করছে গেরুয়াশিবির।
এই ‘মনে করা’র পিছনে অনেকটাই হাত রয়েছে লকেটের। ২০১৯ সালে প্রবল মোদী-হাওয়া থাকলেও হুগলি আসন নিয়ে তেমন আশাবাদী ছিল না বিজেপি। কিন্তু ফল ঘোষণার দিন দেখা যায় অন্য ছবি। হুগলির ৭টি বিধানসভার মধ্যে ৫টিতেই এগিয়ে যান লকেট। সিঙ্গুর, বলাগড়, সপ্তগ্রামে বড় ব্যবধান থাকলেও চুঁচুড়া লকেটকে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে দেয়। তৃণমূলের চেয়ে বিজেপি-র ঝুলিতে ২১,০১৬ ভোট বেশি ছিল। এ বার সেই রেকর্ডই ভাঙতে চান লকেট। প্রচার শেষে ভোটগ্রহণ পর্বের অপেক্ষায় থাকা লকেট শুক্রবার বললেন, ‘‘আমি নিশ্চিত এ বার আরও বেশি মানুষের আশীর্বাদ পাব। লোকসভা নির্বাচনে বড় এলাকা ছিল। সব জায়গায় যেতে পারিনি। এ বার একই জায়গায় একাধিকবার গিয়েছি। কর্মীদের উৎসাহ এ বার আরও বেশি। সর্বত্র দেখেছি যে, মানুষও রাজ্যে বিজেপি সরকার গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন।’’
প্রচারে যে লকেট কোনও কিছুই ছাড়েননি সেটা অবশ্য সত্যি। মহিলাদের দিয়ে আলতায় পোস্টার লেখা থেকে গরুর গাড়িতে চেপে রোড-শো করতে দেখা গিয়েছে। মাঝে স্কুটিতে এবং সাইকেল চেপেও প্রচার করেছেন। একেবারে শেষের দিকে টিকিট কেটে উঠে পড়েছেন লোকাল ট্রেনে। শুধু লেডিজ বগিই নয়, জেনারেল কোচেও প্রচার করতে দেখা গিয়েছে লকেটকে। তাঁর প্রচার নিয়ে হুগলি জেলা বিজেপি-র সভাপতি গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘লকেটদি, খুবই পরিশ্রমী। প্রচুর সময় দিয়েছেন প্রচারে। সেই সঙ্গে কর্মীদের উপরে কোথাও কোনও হামলা হলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি সেখানে পৌঁছে যান। একেবারে সামনে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছেন। আমরাও জানি, জেলার অন্যান্য আসন তো জিতবই, সঙ্গে চুঁচুড়ায় রেকর্ড ভোটে জয় আসবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy