n প্রার্থী ‘অপছন্দ’। জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে তৃণমূল। শুক্রবার, আমডাঙায়। নিজস্ব চিত্র।
গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তর ২৪ পরগনায় যে দু’টি আসন তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছিল, তার মধ্যে ব্যারাকপুর অন্যতম। ভোটের ফল প্রকাশের পরে রাজ্যের আর কোনও এলাকায় এমন হানাহানি হয়নি। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছিল একাধিক পুরসভাও। পরে সেগুলি পুনরুদ্ধারও হয়েছে। সেই পুনরুদ্ধারের কাজে সামনের সারিতে ছিলেন যাঁরা, প্রার্থী তালিকায় তাঁদের ঠাঁই দিয়ে বিজেপিকে কড়া বার্তাই দিল তৃণমূল। তারই মধ্যে চমক ব্যারাকপুরে রাজ চক্রবর্তী।
হালিশহরের ভূমিপুত্র রাজ নিজেকে ‘ঘরের ছেলে’ বলে ভাবলেও এলাকায় তাঁকে নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত শাসক শিবির। তাঁকে ‘বহিরাগত’ প্রার্থী হিসেবেই দেখছে স্থানীয় তৃণমূলের একাংশ। অন্তর্দ্বন্দ্বে বিরক্ত দলীয় নেতা-কর্মীদের অন্য অংশ ‘সেলিব্রিটি’ প্রার্থী পেয়ে খুশি। প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার পরেই ‘বেসুরে’ বাজতে শুরু করেছেন ব্যারাকপুরের বিদায়ী পুরপ্রধান উত্তম দাস। তিনি নিজে এখানকার প্রার্থী পদের দাবিদার ছিলেন।
এ দিন পুরসভায় উত্তমবাবু বলেন, “দল আমাদের বুঝিয়ে দিল, এখানে যোগ্য প্রার্থী নেই। যদিও আমি দলের কর্মী ছিলাম, থাকব। তবে আগে বাইরে থেকে যাঁদের প্রার্থী করা হয়েছিল, সেই শীলভদ্র দত্ত, দীনেশ ত্রিবেদীরা মিরজাফর হয়ে দল ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আবার কোন মিরজাফরকে দেওয়া হচ্ছে, আমি জানি না। মানুষকে তো জোর করে কিছু করা যাবে না।” বিদায়ী বিধায়ক শীলভদ্রবাবু বিজেপিতে যাওয়ার আগেই অভিযোগ করেছিলেন, গত বিধানসভা ভোটে তাঁকে হারাতে অন্তর্ঘাত হয়েছিল। রাজকে প্রার্থী করে সেই অন্তর্ঘাত ঠেকানো যাবে কি না, তা নিয়ে দলেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
গত লোকসভা ভোটের পরে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় পুরসভা থেকে শুরু করে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের দখল রাতারাতি চলে গিয়েছিল বিজেপি-র হাতে। সেই অবস্থা থেকে এলাকায় দলকে পুনরুদ্ধারে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন হালিশহরের সুবোধ অধিকারী। একের পর এক পুরসভা ফের তৃণমূলের হাতে ফিরিয়ে আনার পিছনে তাঁর ভূমিকা অনেকটাই। যদিও তা নিয়ে বিতর্কও রয়েছে। তবে ‘পুরস্কার’ হিসেবেই তিনি বীজপুরের প্রার্থী পদ পেলেন বলে দলীয় সূত্রে খবর।
একই ভাবে ভাটপাড়ায় অর্জুন সিংহের সঙ্গে শেয়ানে শেয়ানে টক্কর দিয়ে দলীয় কর্মীদের আগলে রাখতে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন ওই এলাকার সোমনাথ শ্যাম। পরশ দত্তকে সরিয়ে জগদ্দলে তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে। গত বার জেল থেকে লড়ে কামারহাটিতে হেরেছিলেন মদন মিত্র। সেই সময়েও অন্তর্ঘাত নিয়ে দলে বিতর্ক হয়েছিল। মাঝে ভাটপাড়া আসনে উপনির্বাচনে হেরেছেন তিনি। এ বার কামারহাটি ফিরিয়ে তাঁর উপরে আস্থা রেখেছে দল।
অমিত মিত্র যে এ বার খড়দহে প্রার্থী হচ্ছেন না, তা আগেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল। খড়দহ পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান কাজল সিংহ ছাড়া আর কারও নাম এখানে গত কয়েক দিনে আলোচনাতেই আসেনি। এলাকায় তাঁর জনপ্রিয়তার উপরে দল ভরসা রেখেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।
তৃণমূলের টিকিটে জেতা নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিংহ বিজেপিতে যাওয়ায় পুরনো মুখ মঞ্জু বসুর প্রত্যাবর্তন ঘটেছে এই আসনে। অর্জুন সিংহ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে মঞ্জুর স্বামী, এক সময়ের ডাকাবুকো তৃণমূল নেতা বিকাশ বসুর খুন হওয়া নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে এলাকায়। মঞ্জু প্রার্থী হওয়ায় সেই চর্চা আরও জোরদার হবে বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
এ দিকে, আমডাঙার বিদায়ী বিধায়ক রফিকুর রহমানকে প্রার্থী না করে মুস্তাক মোর্তাজাকে প্রার্থী করায় শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সড়ক আটকে বিক্ষোভ দেখান রফিকুরের অনুগামীরা। প্রথমে ভাবা হয়েছিল, এক সময়ের দেগঙ্গার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক-মন্ত্রী মোর্তাজাকে প্রার্থী করা হয়েছে। এই মোর্তাজা অবশ্য আমডাঙারই ভূমিপুত্র। সেই ভুল ভাঙলেও বিক্ষোভ থামেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy