ভোটের সাজ। বহরমপুরে। ছবি: বিদ্যুৎ মিত্র
একুশের তাৎপর্যপূর্ণ বিধানসভা ভোটে অধীর গড়ে ভাগ বসাতে ঘুম উড়েছে তৃণমূলের জেলা নেতাদের। মুর্শিদাবাদকে ‘পাখির চোখ’ করে রাজ্য নেতারাও রাত জেগে প্রচার কৌশল তৈরি করছেন বলে সূত্রের দাবি। সেক্ষেত্রে জেলায় আরও বেশি সংখ্যক নির্বাচনী জনসভার ওপরেই তাঁরা জোর দিতে চাইছেন তাঁরা। সম্প্রতি ইমাম মোয়াজ্জেমদের সঙ্গে বৈঠকে “মুখ্যমন্ত্রী এই জেলা নিয়ে উদ্বিগ্ন” বলে জানিয়েছেন দলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান। তবে তাহের সে কথা স্বীকার করেননি। তবে রাজ্যে ক্ষমতা পেতে মুর্শিদাবাদের ২২টি বিধানসভা আসনই যে বড় ফ্যাক্টর হতে যাচ্ছে তৃণমূলের কাছে, জেলা সভাপতির বক্তব্যে তা পরিষ্কার বলে মনে করেন রাজনীতির ওয়াকিবহাল মহল।
বৈশাখের শুরুতেই নির্বাচনী জনসভা করতে জেলায় আসবেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে আসবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রার্থী ঘোষণা হওয়া ইস্তক বকলমে মুর্শিদাবাদ দলের দায়িত্বে থাকা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ইতিমধ্যে জেলার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভায় জনসভা করেছেন। সূত্রের খবর, ভোট প্রচারে রাজ্যস্তরের নেতাদের আরও বেশি করে মুর্শিদাবাদে আনা যায় কিনা তারজন্য জেলা নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করছেন রাজ্য নেতারা।
নির্বাচন শুরু হওয়ার পর থেকে ভোটের গরম হাওয়া বইছে রাজ্য জুড়ে। এই নির্বাচনে কোনও দলই স্বস্তিজনক অবস্থায় নেই বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা। এমনিতেই মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের কাছে একুশের নির্বাচনে অবশ্যই প্রেস্টিজ ফাইট। ২০১১ সালে রাজ্যের পালাবদলের সময় থেকে একুশের বিধানসভা ভোট পর্যন্ত দু’টি নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে জিতে আসা সর্বোচ্চ বিধায়ক সংখ্যা চার। ২০১৬ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের শরিক হতে” কংগ্রেস ও সিপিএম ছেড়ে বিধায়করা জোড়া ফুলে আশ্রয় নিলে জেলায় দলে ভারি হয় তৃণমূল। সুফলও মিলেছিল হাতেনাতে। দলবদলু নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে তৃণমূলের সাংসদের সংখ্যা দাঁড়ায় দুই। কিন্তু তার পরবর্তী সময়ে দলে গোষ্ঠী কোন্দল চরমে পৌঁছয়। আর তা সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় রাজ্য নেতাদেরও। রাজ্য জুড়ে নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে যাবার হিড়িক পড়লেও মুর্শিদাবাদ জেলাতে সেভাবে দলবদল করতে দেখা যায়নি নেতাদের।
সূত্রের দাবি, দলবদল না করলেও তুষের আগুনের উপর দাঁড়িয়ে একুশের ভোটযুদ্ধে নেমেছে তৃণমূল। ফলে ভোটে জেতার ক্ষেত্রে বিক্ষুব্ধ সেই সব নেতাদের অনেককেই ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ’এর ভূমিকায় দেখা যেতে পারে বলে শঙ্কিত জেলা তৃণমূল শিবির। সেই সুযোগে জেলায় বেশি আসনের স্বপ্ন দেখছে সংযুক্ত মোর্চা। পাশাপাশি তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে বিজেপিও।
সেই চক্রব্যুহে দাঁড়িয়ে তাই নয় বিধায়ক ও দুই সাংসদ নিয়েও অধীর গড়ে কিভাবে ফাটল ধরিয়ে নিজেদের পালে হাওয়া কেড়ে নেওয়া যায় সেই চিন্তায় দিন রাত এক করেছেন জেলা ও রাজ্য নেতারা।
তবে এ ব্যাপারে জেলা সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী জেলা নিয়ে উদ্বিগ্ন এমন কথা আমি বলিনি। শীতলকুচির ঘটনা উল্লেখ করে আমি বলেছি নির্বাচন কমিশন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাজকর্ম নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ভীষণ উদ্বিগ্ন।” জেলার বাইশটি আসন জেতা নিয়েও রাজ্য নেতাদের কোনও চাপ নেই বলেই জানান তাহের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy