ফাইল চিত্র।
সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা ভোটে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ১৫টি আসনের মধ্যে ১৩টিতেই জিতেছে তৃণমূল। প্রাপ্ত ভোট-শতাংশের নিরিখে এর মধ্যে ৬টি কেন্দ্রে শাসক দলের ফল রীতিমতো নজরকাড়া। ওই কেন্দ্রগুলিতে তারা পেয়েছে প্রদত্ত ভোটের ৫০ শতাংশেরও বেশি।
সার্বিকভাবে রাজ্যে তৃণমূল পেয়েছে ৪৭.৯৪ শতাংশ ভোট, বিজেপি ৩৮.১৩ শতাংশ ভোট। অর্থাৎ, জেলার ওই ৬টি কেন্দ্রে রাজ্যের গড়ের থেকেও বেশি ভোট পেয়েছে তৃণমূল। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মানছেন, কোনও কেন্দ্র থেকে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাওয়া সহজ নয়। ‘জমি’ খুব শক্তপোক্ত না থাকলে এমনটা হয় না।
ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, মেদিনীপুর, কেশিয়াড়ি, খড়্গপুর (গ্রামীণ), দাসপুর, শালবনি এবং কেশপুর— এই ৬টি কেন্দ্রে ৫০ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়েছে তৃণমূল। মেদিনীপুর কেন্দ্রে ২৪,৩৯৭ ভোটে জিতেছেন তৃণমূলের জুন মালিয়া। ৫০.৭২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন জুন। কেশিয়াড়িতে ১৫,৩৩০ ভোটে জিতেছেন তৃণমূলের পরেশ মুর্মু। ৫০.০১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন তিনি। খড়্গপুরে (গ্রামীণ) ৩৬,২৩০ ভোটে জিতেছেন তৃণমূলের দীনেন রায়, পেয়েছে ৫৪.৮৫ শতাংশ ভোট। দাসপুর থেকে ২৬,৮৪২ ভোটে জিতেছেন তৃণমূলের মমতা ভুঁইয়া। তাঁর ঝুলিতে এসেছে ৫১.৫৮ শতাংশ ভোট। শালবনি থেকে ৩২,৬৪৪ ভোটে জিতেছেন তৃণমূলের শ্রীকান্ত মাহাতো। ৫০.৫৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন শ্রীকান্ত। কেশপুর থেকে ২০,৭২০ ভোটে জিতেছেন তৃণমূলের শিউলি সাহা। ৫০.৮১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন শিউলি। কেশপুরে অবশ্য বরাবরই বিপুল ভোট যায় শাসক দলের ঝুলিতে। তুলনায় এ বার প্রাপ্তি খানিক কম। পাঁচ বছর আগে এখান থেকে ১ লক্ষেরও বেশি ভোটে জিতেছিলেন শিউলি।
জেলার অন্য কেন্দ্রগুলির মধ্যে পিংলায় তৃণমূল পেয়েছে ৪৯.১৭ শতাংশ ভোট, দাঁতনে ৪৮.১৩ শতাংশ, খড়্গপুরে (সদর) ৪৪.২৫ শতাংশ, নারায়ণগড়ে ৪৬.৩৩ শতাংশ, সবংয়ে ৪৭.৪৬ শতাংশ, ডেবরায় ৪৬.৭৯ শতাংশ, ঘাটালে ৪৬.৫২ শতাংশ, চন্দ্রকোনায় ৪৮.৮৭ শতাংশ, গড়বেতায় ৪৫.৭১ শতাংশ ভোট পেয়েছে শাসক দল। ফলাফলে স্পষ্ট, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশেই থেকেছেন সংখ্যালঘু ভোটাররা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই ভোটারেরাই হয়ে উঠেছেন তৃণমূলের এত ভাল ফলের অন্যতম কারিগর। শাসক দলের এক জেলা নেতা মানছেন, ‘‘গড়বেতা, খড়্গপুর (গ্রামীণ), ডেবরার মতো কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটের সমীকরণে ভাল ফল করেছে দল। এই সমীকরণেই কেশপুরে জয়ের ব্যবধান ২০ হাজার হয়েছে। না- হলে আরও কমত।’’
অনুমান, মহিলা ভোটের বড় অংশও শাসক দল পেয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উন্নয়নের পাশে থেকেছেন।’’
দেখা যাচ্ছে, গ্রামাঞ্চলে বিপুল ভোট পেয়েছে শাসক দল। কেন এমন ভরাডুবি? বিজেপির জেলা সভাপতি সৌমেন তিওয়ারি বলেন, ‘‘দলের খারাপ ফলের কারণ অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।’’ সার্বিক ফলে তৃণমূল এবং বিজেপি— এই দুই শক্তিধরের লড়াইয়ের মাঝে তৃতীয় পক্ষের কোনও উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। বেশিরভাগ কেন্দ্রে বাম-কংগ্রেস জোট পেয়েছে ৪-৫ শতাংশ ভোট। সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায় বলেন, ‘‘ফলাফল পর্যালোচনা করা হবে।’’ দলের এক জেলা নেতার পর্যবেক্ষণ, ‘‘বিজেপিকে ঠেকাতে মানুষ তৃণমূলকে সমর্থন করেছেন। মেরুকরণের ভোট হয়েছে। তাই
এমন ফল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy