জনতার মাঝে ভোটপ্রচারে জুন মালিয়া। নিজস্ব চিত্র।
রূপোলি পর্দা থেকে সটান নেমে এসেছেন, বাস্তবের মাটিতে। ভরা চৈত্রে মেদিনীপুরে এখন রোজই পারদ চড়ছে ৩৫-৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে। সেই সঙ্গে চড়ছে নির্বাচনী উত্তাপও। দুই উত্তাপ গায়ে মেখে এই মার্চে ভোট প্রচারে মেদিনীপুর চষে বেড়াচ্ছেন জুন। জুন মালিয়া, মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী। যে কেন্দ্রে ২০১১ সাল থেকে বিধায়ক ছিলেন প্রয়াত মৃগেন মাইতি।
২৭ মার্চ প্রথম দফার নির্বাচনে ঝাড়গ্রাম এবং মেদিনীপুর কেন্দ্রে লড়ছেন তৃণমূলের দুই তারকা প্রার্থী। ঝাড়গ্রামে বিরবাহা হাঁসদা আর মেদিনীপুরে জুন। মেদিনীপুরের মাটিতে ভোট যুদ্ধে নেমে অন্যান্য তারকা প্রার্থীদের মতোই রূপোলি পর্দার ভাবমূর্তি ছেড়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন জুন। কলকাতা ছেড়ে এখন তিনি হয়েছেন মেদিনীপুর শহরের পাটনা বাজার এলাকার বাসিন্দা। বাড়ি বাড়ি প্রচারে বেরিয়ে কখনও হাত লাগাচ্ছেন হেঁসেলের কাজে। আবার কখনও সব দূরত্ব ঘুচিয়ে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন এলাকার মহিলামহলে। কখনও গাড়িতে, কখনও বাইকে আবার কখনও হেঁটে— মাস খানেকের বেশি সময় ধরে ‘মাস’ (জনগণ)-এর কাছাকাছি হয়ে ওঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জুন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি মানুষের হয়ে কাজ করতে চাই। মেদিনীপুর শহর আমার আর একটা বাড়ি হয়ে গিয়েছে। মেদিনীপুরের নেতৃত্ব যেমন নির্দেশ বা পরামর্শ দিচ্ছেন তাই করার চেষ্টা করছি।’’
অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলের সাথে যোগসূত্র রয়েছে জুনের। সে কথা উঠে এসেছে মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে। বৃহস্পতিবার জুনকে জয়ী করার আহ্বান জানিয়ে মেদিনীপুরের জনসভায় মমতা বলেন, ‘‘এখানে মৃগেন’দা ছিলেন। উনি প্রয়াত হয়েছেন। উনি চিরদিন দলের হয়ে কাজ করেছেন। মাটির মানুষ ছিলেন। তিনি নেই তাই তাঁর জায়গায় জুনকে দিয়েছি। জুন খুব ভাল মেয়ে। মহিষাদল রাজবাড়ির সঙ্গে ওর যোগ আছে।’’
রাজপথ থেকে গলিতে ঢুকে পড়েছেন জুন। কলকাতার পিচ ঢালা রাস্তা পেরিয়ে তিনি পা রেখেছেন মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের গেরুয়া ধুলোর গলিতে। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মেদিনীপুরের মাটি রায় দিয়েছিল তৃণমূলের পক্ষে। সে সময় বিজেপি ওই আসনে ছিল তৃতীয়। দ্বিতীয় স্থানে ছিল সিপিআই। কিন্তু তার বছর তিনেকের মাথায় উল্টো ছবি দেখা যায় ওই কেন্দ্রে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে, রাজ্যের অন্যান্য জায়গার মতো, ওই কেন্দ্রেও বামশিবিরকে দুর্বল করে সবল হয়ে ওঠে বিজেপি। সেই ফলাফল ধরলে প্রায় ২০ হাজার ভোটে ওই কেন্দ্রে পিছিয়ে তৃণমূল। আবার বিধানসভার ফল ধরলে মেদিনীপুরে অনেকটা এগিয়ে তৃণমূল। গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-র উত্থান বদল এনেছে এ রাজ্যের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে। আর তার প্রেক্ষিতে মেদিনীপুরের মতামতও যেন বাক্সবন্দি বেড়ালের মতো, কোন পক্ষে তা বোঝা দায়!
জুনের প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি-র শমিত কুমার দাশ। ইতিমধ্যেই সাক্ষাৎ হয়েছে দুই যোদ্ধার। তারকা প্রতিপক্ষ নিয়ে শমিতের মত, ‘‘এক জন অভিনেত্রীকে সামনে থেকে দেখেছি। উনি একই কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাই সৌজন্যমূলক পরিচয় হওয়াটা জরুরি।’’ আবার শমিতের কথা শুনে জুনের সহাস্য মন্তব্য, ‘‘দু’জনের রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন হতেই পারে। মেদিনীপুরের মানুষের সাথে দেখা করছি। ওঁর (শমিত) সঙ্গেও দেখা হয়েছে। সৌজন্য বিনিময়ও হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy