গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নীলবাড়ির লড়াইয়ে ষষ্ঠ দফায় বৃহস্পতিবার ভোট ৪ জেলার ৪৩টি বিধানসভা আসনে। যার মধ্যে ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে একটিতে না জিতলেও ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে চমকপ্রদ উত্থান ঘটেছিল বিজেপি-র। ২০১৬-য় তৃণমূলের সঙ্গে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলেও তিন বছরের মাথায় ২০১৯-এ আলাদা লড়ে তাদের জনসমর্থন তলানিতে ঠেকেছিল।
ষষ্ঠ দফায় উত্তর দিনাজপুরের ৯টি বিধানসভা আসনের সবগুলিতেই ভোট হবে। এ ছাড়া দক্ষিণবঙ্গের তিন জেলা— উত্তর ২৪ পরগনার ৩৩টির মধ্যে ১৭, নদিয়ার ১৭টির মধ্যে ৯ এবং পূর্ব বর্ধমানের ১৬টির মধ্যে ৮ আসনে ভোট রয়েছে বৃহস্পতিবার।
২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে এই ৪৩টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জিতেছিল ৩২টিতে। জোট বেঁধে লড়ে কংগ্রেস ৭ এবং বামেরা ৪টি আসনে জেতে। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি এই আসনগুলির একটিতেও জিততে পারেনি। পরবর্তী কালে উপনির্বাচনে কংগ্রেসের জেতা উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর, কালিয়াগঞ্জ এবং উত্তর ২৪ পরগনার নোয়াপাড়ার মতো আসন ছিনিয়ে নিয়েছিল তৃণমূল। আবার অর্জুন সিংহের দলবদলের জেরে উপনির্বাচনে বিজেপি-র কাছে উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়া খোয়াতে হয় তৃণমূলকে।
৩ বছর পরে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিধানসভা ভিত্তিক ফলের হিসেবে তৃণমূল ৪ জেলার ওই ৪৩টি আসনের মধ্যে ২৪টিতে এগিয়ে রয়েছে। ১৯টি আসনে এগিয়ে থেকে প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি। আলাদা ভাবে লড়ে বাম এবং কংগ্রেস একটি আসনেও প্রথম স্থানে যেতে পারেনি। কেন্দ্রওয়াড়ি ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, পূর্ব বর্ধমান এবং নদিয়ায় অগ্রগতি তুলনায় কম হলেও অন্য ২ জেলায় অর্থাৎ উত্তর দিনাজপুর এবং উত্তর ২৪ পরগনায় চমকপ্রদ উত্থান ঘটেছে পদ্ম শিবিরের।
২০১৬-য় ওই ৪৩টি আসন মিলিয়ে তৃণমূল পেয়েছিল ৪৪.৮৯ শতাংশ ভোট। বিজেপি ১০.৭৪ এবং বাম-কংগ্রেস জোট ৩৯.২৪ (২৭.৫৩+১১.৭১) শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূলের ভোট সামান্য কমে হয়েছে ৪২.৫৮ শতাংশ। বিজেপি-র প্রায় ৪ গুণ বেড়ে হয়েছে ৪০.৮৫ শতাংশ। আলাদা লড়ে বামেরা ৯.৭৫ এবং কংগ্রেস ৩.৭১ শতাংশ ভোট পেয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, লোকসভা ভোটের দু’বছর বাদে ফের জোট করার পরে বাম-কংগ্রেসের সামনে প্রাসঙ্গিকতা ফিরিয়ে আনাই এ বার মূল চ্যালেঞ্জ।
উত্তর দিনাজপুর জেলার ৯টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ২০১৬-য় তৃণমূল জিতেছিল ৪টিতে। বাম-কংগ্রেস জোট ৫টি। এর মধ্যে কংগ্রেস ৩, সিপিএম ১ এবং ফরওয়ার্ড ব্লক ১টি আসন দখল করেছিল। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিধানসভা ভিত্তিক ফল জানাচ্ছে, তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে ৫টিতে। অন্য দিকে, কংগ্রেসের জেতা আসন রায়গঞ্জ-সহ ৪টি আসনে এগিয়ে গিয়েছে ৩ বছর আগে জেলার খাতা খুলতে না পারা বিজেপি।
ষষ্ঠ দফায় ভোট হতে যাওয়া নদিয়ার ৯টি আসনের মধ্যে ২০১৬-য় তৃণমূল জিতেছিল ৮টিতে। কালীগঞ্জ গিয়েছিল কংগ্রেসের ঝুলিতে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের হিসেবে বলছে, কংগ্রেসের জেতা কালীগঞ্জে তৃণমূল এগিয়ে গেলেও কৃষ্ণনগর-উত্তর, কৃষ্ণনগর-দক্ষিণ এবং তেহট্টে পয়লা নম্বর দল হয়ে গিয়েছে বিজেপি। অর্থাৎ ওই ৯টি আসনের মধ্যে তৃণমূল এগিয়ে ৬টিতে। বিজেপি ৩।
৩ বছরের ব্যবধানে পাশের জেলা উত্তর ২৪ পরগনার ১৭টি বিধানসভা আসনে পরিবর্তনের স্রোত ছিল আরও তীব্র। বৃহস্পতিবার ভোট হতে যাওয়া এই আসনগুলির মধ্যে ২০১৬-য় তৃণমূল জিতেছিল ১৩টিতে। কংগ্রেস ৩ এবং সিপিএম ১টিতে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিধানসভাভিত্তিক ফল জানাচ্ছে, তৃণমূল ৭ এবং বিজেপি ১০টি-তে এগিয়ে। ব্যারাকপুর, বীজপুরের মতো শিল্পাঞ্চলের পাশাপাশি বাগদার মতো গ্রামীণ কেন্দ্রেও জোড়াফুলকে পিছনে ফেলেছে পদ্ম।
পূর্ব বর্ধমানের ৮টি আসনে ৩ বছরের ব্যবধানে ভোট বেশ কিছুটা বাড়লেও আসন সংখ্যার হিসাবে বিজেপি-র অগ্রগতি তুলনায় কম। ওই আসনগুলির মধ্যে ২০১৬-য় ৭টিতে জিতেছিল তৃণমূল। পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রে সিপিএম জেতে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিধানসভাভিত্তিক হিসাব বলছে পূর্বস্থলী উত্তর-সহ ৬ আসনে তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে। কিন্তু ২০১৬-য় তৃণমূলের জেতা কাটোয়া এবং গলসিতে প্রথম স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy