রসিকপুরে তৃণমূলের এই কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের রোড-শো চলাকালীন বিজেপি-তৃণমূল গোলমালে তেতে উঠল বর্ধমান। মঙ্গলবার বিকেলে শহরের রসিকপুরে তৃণমূলের একটি ওয়ার্ড কার্যালয় বিজেপি কর্মীরা ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। সে নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ইট-বৃষ্টি, মারপিট হয়। প্রতিবাদে তৃণমূল রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে। রাতে থানা ঘেরাও করা হয়। বিজেপির পাল্টা দাবি, তৃণমূল মিছিল বার করে তাদের কয়েকজন সমর্থকের দোকানে হামলার চেষ্টা করে। পুলিশ তা রুখে দেয়। পুলিশ জানায়, এলাকায় টহল চলছে।
এ দিন বিকেল সওয়া ৫টা নাগাদ শহরের পাওয়ারহাউস এলাকা থেকে দিলীপবাবুর নেতৃত্বে র্যালি বেরোয়। ছিলেন বর্ধমান দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থী সন্দীপ নন্দী ও দলের জেলা (বর্ধমান সদর) সভাপতি অভিজিৎ তা। মিছিলের সামনে ছিল রকমারি বাজনা। শেষের দিকে টোটোয় ভোটের প্রচার করা হচ্ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের দাবি, র্যালিটি যাওয়ার সময়ে, রসিকপুর মোড়ে একটি চায়ের দোকানে বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী খোকন দাসের সমর্থনে টাঙানো বড় ব্যানার বিজেপির কিছু কর্মী ছিঁড়ে দেন। তখন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন বিজেপির একটি টোটো আটকে ব্যানার ছিঁড়তে শুরু করে ও ‘গো ব্যাক’ ধ্বনি দেয়। অভিযোগ, এর পরেই বিজেপির কয়েকজন যুবক এসে তৃণমূল কার্যালয়টি ভাঙচুর করে। সে নিয়ে দু’পক্ষের মারপিট শুরু হয়ে যায়।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের অভিযোগ, ‘‘শীতলখুচির ঘটনার পরে দিলীপবাবু উত্তেজক বক্তব্য রাখছেন। এখানেও তাঁর উস্কানিতেই আমাদের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর হয়েছে বলে মনে করি। নির্বাচন কমিশনের নজরে আনা হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বিজেপি যত সন্ত্রাস করবে, মানুষ তত আমাদের সমর্থন করবেন।’’ তৃণমূলের অভিযোগ, কার্যালয়ে ভাঙচুরের পরে পাড়ার ভিতরে ঢুকেও তাণ্ডব চালায় বিজেপি। তিনটি দোকান ভাঙচুর করা হয়। এক প্রবীণা-সহ দু’জন জখম হন। প্রতিবাদে ওই এলাকার বাসিন্দা, জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল রবের নেতৃত্বে রসিকপুর মোড়ে অবরোধ শুরু হয়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘পুলিশের সামনে গোটা ঘটনা ঘটল। পুলিশ নিষ্ক্রিয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বাসিন্দারা প্রতিবাদ না করলে আরও বড় ঘটনা ঘটতে পারত।’’
বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, রসিকপুর মোড়ে দাঁড়িয়ে কয়েকজন তৃণমূল কর্মী তাদের রাজ্য সভাপতিকে কালো পতাকা দেখায়। র্যালি এগিয়ে যেতেই একটি টোটো আটকে মারধর-ভাঙচুর করে। প্রতিবাদ করতে গিয়ে জেলার বিজেপি নেতা শ্যামল রায়-সহ দু’জন জখম হন। তখন প্রতিরোধ গড়ে উঠতেই তৃণমূল ইট ও লাঠি হাতে হামলা চালায় বলে বিজেপি নেতাদের অভিযোগ।
র্যালি শেষে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করেন, ‘‘তৃণমূলের আমলে বর্ধমান শহরে দুষ্কৃতী-রাজ শুরু হয়েছে। রোড-শোয়ে হামলা চালিয়েছে তৃণমূল। যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে, সেখানেই কিছু দিন আগে বোমা বিস্ফোরণে এক বালকের মৃত্যু হয়েছে। আমি বর্ধমানবাসীর কাছে জানতে চাই, রাস্তায় বাচ্চারা বেরোলে পায়ে বোমা লাগুক, স্টেশন চত্বর গুন্ডায় ভর্তি থাকুক, এমনটা কি আপনারা চান?’’ তাঁর দাবি, ‘‘সিপিএম চলে গিয়েছে, তৃণমূলেরও যাওয়ার দিন চলে এসেছে। তাই আমরা চাই, নির্বিঘ্নে নির্বাচন হোক। নির্বাচন কমিশন আছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে। কয়েকজন দুষ্কৃতী বর্ধমানের ভোট বানচাল করতে পারবে না।’’
পুলিশ নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ মানতে চায়নি। পুরো এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে,পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy