প্রতীকী ছবি।
‘মঙ্গলে উষা বুধে পা, যথা ইচ্ছা তথা যা’। খনার বচন যাই বলুক, নীলবাড়ির লড়াইয়ে তিন প্রতিপক্ষের কাছেই শুভ ক্ষণ যেন শুক্রবারে। তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বরাবরই ‘লাকি’ বার শুক্র। তিনি নিজেও অনেক বার এ কথা উল্লেখ করেছেন। অতীতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা শুক্রবার দেখেই করেছেন তিনি। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের জন্য তেমনই এক শুক্রবারই বেছেছেন মমতা। দুপুরে কালীঘাটে হতে পারে সাংবাদিক বৈঠক। সেখানেই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার কথা। ঘটনাচক্রে একই দিন প্রার্থী তালিকা সামনে আনতে পারে বিজেপি এবং বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ (আব্বাস সিদ্দিকির দল) জোট। তবে ফারাক একটাই। শুক্রবার ১০০ শতাংশ আসনের প্রার্থীর নামই তৃণমূল জানিয়ে দিতে পারে। সেখানে বিজেপি ও বাম-জোট শুধুই প্রথম দু’দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে পারে।
রাজ্যে ভোটগ্রহণ এ বার ৮ দফায়। এর মধ্যে প্রথম দুই দফার ভোট গ্রহণ যথাক্রমে আগামী ২৭ মার্চ ও ১ এপ্রিল। প্রথম দফার ভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ৯ মার্চ। সেই অর্থে প্রথম দফার জন্য হাতে সময় খুবই কম। কিন্তু বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোনও দলই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেনি। তবে সূত্রের খবর, ২৯৪ আসনের প্রার্থীর নামই পাকা করে ফেলেছে তৃণমূল। আর সে দিক থেকে এগিয়েই থাকছে বাংলার শাসকদল। তৃণমূল সূত্রে এমনটাও জানা গিয়েছে, এ বারের তালিকায় অনেক তারকার নাম যেমন দেখা যাবে, তেমন দলের অনেক যুব নেতাও জায়গা পাবেন। সব মিলিয়ে ৪০টি নতুন মুখ থাকতে পারে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায়।
বিজেপি সূত্রে প্রথমে জানা গিয়েছিল বৃহস্পতিবারই প্রথম দুই দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। রাজ্যে সোম-মঙ্গল-বুধ টানা ৩ দিন ধরে ৬০ আসনের তালিকা তৈরির কাজ চলে। বুধবার রাতে রাজ্য নেতারা সেই তালিকা নিয়ে যান দিল্লি। বৃহস্পতিবারও দিল্লিতে দফায় দফায় বৈঠক হয়। সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার বাড়িতে সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন খোদ অমিত শাহ। দলের দুই শীর্ষ নেতার উপস্থিতিতে অনেক বাছবিচার চলে তালিকা চূড়ান্ত করা নিয়ে। এর পরে সন্ধ্যায় দিল্লির দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে দলের সদর দফতরে বসে সংসদীয় কমিটির বৈঠক।
তবে তালিকা নিয়ে অনেকটাই পিছিয়ে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোট। শুক্রবার বিকেল ৪টের সময় সিপিএমের রাজ্য দফতরে সাংবাদিক বৈঠক ডাকা হয়েছে। কিন্ত সেখানে প্রথম দুই দফারও পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ হচ্ছে না। এই দুই দফায় ৬০ আসনের মধ্যে বামেদের ভাগের আসনগুলির প্রার্থী তালিকা তৈরি বলেই জানা গিয়েছে। তৈরি আইএসএফ-এর তালিকাও। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেস তালিকা বানিয়ে ফেললেও তাতে দিল্লির অনুমোদন এখনও মেলেনি। তাই শুক্রবার জোটের সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা হাজির থাকলেও তাদের ভাগের আসন বাদ দিয়েই ঘোষণা হবে বলে জানা গিয়েছে। কংগ্রেস প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে পারে রবি বা সোমবার।
তবে বিরোধীরা যে হেতু দুই দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করছে তাই শুক্রবার শুধু ৬০টি আসনের প্রতিপক্ষের নাম জানা যাবে। আর এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজরে নন্দীগ্রাম আসন। দ্বিতীয় দফায় ভোটগ্রহণ সেখানে। ওই কেন্দ্রে তিনি নিজে প্রার্থী হবেন বলে আগেই জানিয়ে রেখেছেন মমতা। অন্য দিকে, বিজেপি-র পক্ষে কে প্রার্থী তা জানা না গেলেও এটা জানা গিয়েছে যে লড়তে চান শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে নড্ডা, শাহর কাছে তিনি নিজে সে ইচ্ছা প্রকাশ করেন বলে বৈঠক শেষে জানিয়েছেন বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দুর ইচ্ছাই যদি বিজেপি-র সিদ্ধান্ত হয় তবে নীলবাড়ির লড়াইয়ে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে বড় সমরাঙ্গন হয়ে উঠবে নন্দীগ্রাম। সেখানে জোটের পক্ষে আব্বাস সিদ্দিকি কাকে প্রার্থী করেন সেই দিকেও নজর থাকবে বাংলার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy