প্রতীকী ছবি।
যোগী আদিত্যনাথের সভাস্থল বদল হওয়ায় চাপানউতোরের অবসান হল। আগামী মঙ্গলবার দুপুরে বাঁকুড়ার রাইপুরের সবুজ সঙ্ঘের মাঠে জনসভা করার কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেখান থেকে বারো কিলোমিটার দূরে, ফুলকুসমার বালি ময়দানে ওই দিনই সভা করার কথা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের।
সবুজ সঙ্ঘের মাঠে দু’টি সভাই হওয়ার সম্ভাবনা ঘিরে শুক্রবার বিকেল থেকে চাপানউতোর শুরু হয়েছিল। শনিবার দুপুরে যোগীর সভা রাইপুরের বদলে ফুলকুসুমায় করার কথা জানান জেলার বিজেপি নেতৃত্ব। জেলা পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাইপুরে একটি ও ফুলকুসুমায় একটি সভা রয়েছে। দু’টি জায়গাতেই নিরাপত্তার সব ধরনের বন্দোবস্ত রাখা হচ্ছে।’’
রবিবার বাঁকুড়া জেলার তিনটি কেন্দ্র— শালতোড়া, ছাতনা ও রাইপুরে সভা করার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তৃণমূলের দাবি, সভার জন্য সবুজ সঙ্ঘের মাঠ ‘বুক’ করে প্রাথমিক প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু গত বুধবার নন্দীগ্রামে জনসংযোগ করার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী আহত হওয়ায় সভা পিছিয়ে যায়। তবে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, মাঠের ‘বুকিং’ বাতিল করা হয়নি।
এ দিকে, সোমবার থেকেই লাগাতার জেলায় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের কর্মসূচি স্থির হয়েছে। দলের তরফে জানানো হয়, মঙ্গলবার রাইপুরে আসতে পারেন যোগী আদিত্যনাথ। সেই সভার জন্যও প্রথমে রাইপুরের সবুজ সঙ্ঘের মাঠ বাছা হয়। বিজেপির দাবি, দিন দুয়েক আগে ক্লাবের থেকে মাঠ ব্যবহারের অনুমতিও নেওয়া হয়।
শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা তৃণমূলের তরফে জানানো হয়, মুখ্যমন্ত্রীর স্থগিত হয়ে যাওয়া সভাগুলি হবে মঙ্গলবার। ছাতনার সভা হবে কমলপুরে, শালতোড়ার সভা মেজিয়ার স্কুলমাঠে এবং রাইপুরের সভা সবুজ সঙ্ঘের মাঠে। এ দিকে বিজেপি ওই দিন, রাইপুরের একই মাঠে সভা রাখায় শুরু হয়েছিল চাপানউতোর। রাইপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি জগবন্ধু মাহাতো বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচি নতুন করে ঠিক হওয়ার পরেই দ্রুত ক্লাব ও প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করি।”
শনিবার বিকেল পর্যন্তও বিজেপির খাতড়ার নেতারা জানতেন, সবুজ সঙ্ঘের মাঠেই সভা হতে চলেছে। সন্ধ্যায় বাঁকুড়ার সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার সভাস্থল বদলের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘‘যোগীজির সভায় যে পরিমাণ জনসমাগম হতে চলেছে, তা সবুজ সঙ্ঘের মাঠে কুলোনো সম্ভব ছিল না। তাই বালি ময়দানকেই আমরা বেছে নিয়েছি।”
জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরার অবশ্য দাবি, “ওই মাঠটি বিজেপির চাওয়াই উচিত হয়নি। অনেক আগে থেকে সেখানে আমাদের মঞ্চ বাঁধা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য।” বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকারের দাবি, ‘‘তৃণমূলের সভা বাতিল হয়ে যাওয়ার পরে মাঠে মঞ্চ বেঁধে রাখাটাই অনুচিত কাজ।’’
২০১১ সালে বাঁকুড়ার বাকি কেন্দ্রগুলি বামেদের হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে পারলেও জেলার জঙ্গলমহলের তিন বিধানসভা রানিবাঁধ, রাইপুর ও তালড্যাংরায় হেরেছিল তৃণমূল। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ওই তিনটি কেন্দ্র তৃণমূলের দখলে আসে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে আবার তিন কেন্দ্রেই তারা বিজেপির থেকে পিছিয়ে যায়। সুভাষবাবুর দাবি, “লক্ষাধিক মানুষ উপস্থিত থাকতে চলেছেন যোগীজির সভায়।” শ্যামলবাবুর দাবি, “রাইপুরে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় ঐতিহাসিক ভিড় হতে চলেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy