প্রতীকী ছবি।
প্রার্থী নিয়ে গ্রামীণ হাওড়ায় উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্র যদি তৃণমূলের মাথাব্যথার কারণ হয়, তা হলে হুগলিতে তা সিঙ্গুর-সহ আরও কিছু কেন্দ্র। হাওড়ার মতো হুগলিতে প্রার্থী নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও প্রতিবাদ শনিবার হয়নি ঠিকই। কিন্তু নানা কেন্দ্র থেকেই অসন্তোষের কথা সামনে আসছে। তার জেরে আজ, রবিবার দলের কারা ব্রিগেডে নরেন্দ্র মোদীর সভায় যান, সে দিকেও কড়া নজর রাখা হচ্ছে বলে জেলা তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে।
সিঙ্গুরের বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য টিকিট পাননি। প্রার্থী হয়েছেন দলে তাঁর বিরোধী বেচারাম মান্না। ক্ষোভ গোপন করেননি রবীন্দ্রনাথবাবু। শনিবার তাঁর কথায় স্পষ্ট, রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে তিনি কিছুটা দোলাচলে রয়েছে। তিনি একইসঙ্গে ‘রাজনৈতিক সন্ন্যাস’-এর কথা ভাবছেন বলে জানিয়েছেন। আবার, বিজেপিতে যাওয়ার রাস্তাও খোলা রাখছেন।
রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘রাজনীতি থেকে অবসর নিতে পারি। আমার শুভাকাঙ্ক্ষী ও অনুগামীরা বিজেপিতে যাওয়ার বিষয়ে কী পরামর্শ দেন, সেটাও ভেবে দেখব। বিজেপির লোকজন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তবে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি।’’
হরিপালে বেচারামের পরিবর্তে তাঁর স্ত্রী করবীকে তৃণমূল প্রার্থী করেছে। সেখানেও তৃণমূলের অন্দরে ক্ষোভের আঁচ জ্বলতে শুরু করেছে। হরিপালে বেচারামের ঘনিষ্ঠ এক নেতার বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে গাছ বিক্রির অভিযোগ তুলেছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য শম্পা দাস। সেই কারণে দলে তাঁকে কোণঠাসা করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি দুই কেন্দ্রে মান্না দম্পতি টিকিট পাওয়ায় ক্ষুব্ধ শম্পা বলেন, ‘‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় দল আমাদের বাদ দিয়ে দিয়েছে। বিচার পাইনি। যাঁদের বিরুদ্ধে আমাদের ক্ষোভ, তাঁদেরই প্রার্থী করা হয়েছে। এই দলে যোগ্য সম্মান নেই। অন্য দল থেকে প্রস্তাব এলে যাওয়ার ভাবনাচিন্তা করব।’’
বলাগড়ে এ বার তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন সাহিত্যিক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। তিনি সোনারপরের বাসিন্দা। স্থানীয় প্রার্থী না-হওয়ায় সেখানে দলের নেতাদের কেউ কেউ অসন্তুষ্ট বলে শোনা যাচ্ছে। একই ছবি উত্তরপাড়া, চন্দননগর, শ্রীরামপুরেও। চাঁপদানি কেন্দ্রের প্রার্থী নিয়েও নেতাদের একাংশের ক্ষুব্ধ বলে জানা গিয়েছে। নানা কথা ভাসছে পাশের রিষড়ার বিদায়ী পুরপ্রধান তথা বর্তমান পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান বিজয়সাগর মিশ্রকে ঘিরেও। তাঁর নাম প্রার্থী হিসেবে শাসক দলের বিবেচনায় ছিল বলে খবর। তবে এ বারেও শ্রীরামপুর কেন্দ্রের (রিষড়া এই কেন্দ্রেই) প্রার্থী হয়েছেন চিকিৎসক সুদীপ্ত রায়। এই পরিস্থিতিতে বিজয়ের অনুগামীরা ক্ষুব্ধ। মান-অভিমান নিয়ে বিশেষ কোনও কথা বলতে চাননি বিজয়সাগর মিশ্র। তিনি শুধু বলেন, ‘‘আমি দলের একনিষ্ঠ কর্মী।’’
ভোটের ময়দানে ঘরের এই ক্ষোভ কী ভাবে সামাল দেওয়া যায়, শাসক দলের এখন সেটাই মাথাব্যথা। বিজেপির একটি সূত্রের খবর, তাদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই শাসক দলের বেশ কিছু নেতা এবং জেলা পরিষদ সদস্য যোগাযোগ করেছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন জেলা যুব তৃণমূলের এক নেতা এবং জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পুড়শুড়ার এক বিক্ষুব্ধ নেতাও।
বিজেপির এক জেলা নেতা বলেন, ‘‘জেলা পরিষদের একাধিক কর্মাধ্যক্ষ-সহ আগ্রহী অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। সৌজন্যের খাতিরে আমরা তাঁদের নাম প্রকাশ্যে আনব না।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘এ বিষয়ে আমার অন্তত কিছু জানা নেই। আমার দলের জেলা পরিষদ সদস্যদের উপর পূর্ণ আস্থা আছে। এই সব রটনা আদতে বিজেপির ফাঁদ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy