প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
পুরুলিয়া, খড়্গপুর, বাঁকুড়ার পর এ বার কাঁথিতে নির্বাচনী প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার কাঁথির রেলস্টেশনের প্রভূতি মাঠে জনসভা করবেন তিনি। সেই সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকে। প্রধানমন্ত্রীর সভায় আমন্ত্রণ পেয়েছেন এবং যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আগে মন্তব্য করলেও, এখনও পর্যন্ত তিনি যাবেন কি না তা স্পষ্ট করে জানাননি। ফলে প্রধানমন্ত্রীর সভার দিকে এখন নজর গোটা রাজ্যের।
শুভেন্দু অধিকারী এবং তাঁর ছোট ভাই সৌম্যেন্দু আগেই বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। শুভেন্দু প্রার্থী হয়েছেন নন্দীগ্রামে। গত ২১ মার্চ এগরায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জনসভায় বিজেপি-তে যোগ দেন শুভেন্দুর বাবা তথা কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী। অধিকারী পরিবারের তিন জনই এখন বিজেপি-তে। বাকি রয়েছেন একা দিব্যেন্দু। তিনি আগেই বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সভায় আমন্ত্রণ পেয়েছেন। সেখানে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে তাঁর। কিন্তু তিনি বিজেপি-তে যোগ দেবেন কি না তা নিয়ে হ্যাঁ বা না কোনও কিছুই বলেননি। প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চ থেকেই কি দিব্যেন্দুর ‘গেরুয়াকরণ’ হবে? সে দিকে তাকিয়েই সকলে।
অধিকারীদের গড় বলে পরিচিত পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি। তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটিও। কিন্তু এই জেলায় দলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান, প্রাক্তন সভাপতি তথা কাঁথির সাংসদ শিশির এখন বিজেপি-তে। এই দলবদল এ বারের নির্বাচনে কাঁথিতে কি বিজেপি-কে বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে, নাকি এর বিরূপ প্রভাব পড়বে ভোটবাক্সে— তা নিয়ে রাজনৈতিক সমীকরণ শুরু হয়ে গিয়েছে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এই কেন্দ্রে তৃণমূলের থেকে খুব একটা পিছিয়ে ছিল না বিজেপি। প্রায় ৪২ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী দেবাশিস সামন্ত। সেখানে প্রায় ৫০ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন শিশির অধিকারী। দলবদলের পরেও সেই ভোট যদি ধরে রাখতে পারেন শিশির তা হলে তার সুফল পাবে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদীও তাই এখান থেকেই সেই ফসল তুলে নেওয়ারই চেষ্টা করবেন। পাশাপাশি মোদী এই জনসভায় কী বলেন সেটাও আগ্রহের তালিকায়। কারণ, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঁথিতে জনসভা করলেও মোদীর মূল লক্ষ্য আসলে ৫৩ কিলোমিটার দূরের নন্দীগ্রাম। এ বারের নির্বাচনের ‘হাই ভোল্টেজ’ কেন্দ্র। যেখানে শুভেন্দুর প্রতিপক্ষ তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কাঁথিতে যে দিন মোদীর জনসভা, সেই দিনই নন্দীগ্রামে সভা করবেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা পর এই প্রথম নন্দীগ্রামে সভা করতে যাচ্ছেন তিনি। নন্দীগ্রাম-১ নম্বর ব্লকে প্রচার সভা করবেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ। নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে প্রার্থী মমতা। এর আগে মমতা সভা করেছেন এই কেন্দ্রে। গত ১০ মার্চ নন্দীগ্রামেরই বিরুলিয়ার বাজারে আহত হন তিনি। পায়ে চোট লাগে তাঁর। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি থেকে জাতীয় রাজনীতি তোলপাড় হয়। নির্বাচনী জনসভায় সে দিনের ঘটনার কথা তুলে মমতাকে বার বারই বলতে শোনা যাচ্ছে যে, ‘‘অনেক মার খেয়েছি, শরীরের নানা জায়গায় আঘাত রয়েছে। পা-টা বাকি ছিল, শেষে এটাকেও আঘাত করা হল।’’ মমতার সেই নির্বাচনী কেন্দ্রেই নির্বাচনী প্রচারে যাচ্ছেন অভিষেক এবং বিরুলিয়ার সেই ঘটনার পর। তৃণমূল সাংসদের নির্বাচনী প্রচারে সেই প্রসঙ্গ উঠে আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, মমতার প্রতিপক্ষ শুভেন্দু এবং অধিকারী পরিবার তাঁর আক্রমণের নিশানায় থাকতে পারে বলেই সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy