উজ্জ্বল কুমার। —ফাইল চিত্র
পুরুলিয়ার জয়পুর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমারের মনোনয়ন পত্র বাতিল করল নির্বাচন কমিশন। সরকারি সূত্রের খবর, ত্রুটিপূর্ণ মনোনয়ন পত্রে পেশের কারণেই তা বাতিল করা হয়। কমিশনের ওয়েবসাইটেও উজ্জলের মনোনয়ন বাতিলের কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে মাত্র এক সেট মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন উজ্জ্বল। মনোনয়ন পেশের শেষ দিন পেরিয়ে যাওয়ায় তাঁর পক্ষে আর নতুন করে মনোনয়ন জমা দেওয়া সম্ভব হবে না।
তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে দল ছেডে় জয়পুরে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন দলে যুবনেতা দিব্যজ্যোতি সিংহ। তাঁকে এ বার ওই কেন্দ্রে সমর্থন জানানো হতে পারে বলে তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে।
উজ্জল ছাড়াও জয়পুর কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থী নৃপেন মাহাতো। জনতা দল (ইউনাইটেড)-এর কালী শঙ্কর মাহাতো এবং ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার বাহাদুর কুশওয়াহা কুইরির মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে বুধবার।
তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হচ্ছে কি না, তা নিয়ে বুধবার পুরুলিয়ার জয়পুর কেন্দ্র সরগরম হয়ে রইল। উদ্বেগে রইলেন জেলা জুড়ে তৃণমূল কর্মীরা। জেলার রাজনৈতিক মহলে চলল চর্চা। শেষে রাতে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে ঘোষণা করা হল, পুরুলিয়ার জয়পুর কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী হতে চেয়ে আবেদনকারী উজ্জ্বল কুমারের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
যদিও তবে রির্টানিং অফিসার তথা এসডিও (ঝালদা) সুবর্ণ রায় এ নিয়ে রাত পর্যন্ত মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনকে যা জানানোর, তা জানাব।’’ জেলাশাসক তথা জেলা রির্টানিং অফিসার অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়কে বার বার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। জবাব
আসেনি মেসেজ়ের।
জয়পুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা জয়পুর কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী হতে চেয়ে আবেদনকারী উজ্জ্বল কুমার বলেন, ‘‘আমার মনোনয়নপত্র কেন গ্রহণ করা হল না, যাঁরা দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁরাই এর কারণ
জানাতে পারবেন।’’
পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি গুরুপদ টুডু বলেন, ‘‘কিছু সমস্যার জন্য জয়পুর কেন্দ্রে আমাদের প্রার্থীর মনোনয়ন গ্রহণ করা হয়নি বলে শুনেছি। বিস্তারিত খোঁজ নেব। তবে সেখানে অভিমান করে আমাদের দলের এক জন নির্দল হিসেবে মনোনয়ন করেছেন। তাঁকে সমর্থন করা যাবে কি না, তা নিয়ে জেলার সঙ্গে কথা বলে রাজ্য নেতৃত্বের মত নেব।’’
জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি স্পষ্ট নয়। খোঁজ নিচ্ছি।’’
যদিও পর পর দু’বার ভুল হয় কী করে হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। কারণ রাজ্যের শাসকদলের এক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে সাধারণত দলের তরফে তা গুরুত্ব দিয়ে যাচাই করার কথা। অনেক সময় দলের ঘনিষ্ঠ আইনজীবীরাও প্রার্থীর ঘোষণাপত্র তৈরির দেখভাল করেন।
তা হলে এখানে ভুলের পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা নিয়েও রাজনৈতিক মহলের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, ওই কেন্দ্রেই (তৃণমূলের এক যুব নেতা, যিনি প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরে দলত্যাগ করেছেন বলে নিজে দাবি করেন) নির্দল হিসেবে এক জন মনোনয়ন জমা করেছেন। যাঁর তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে সমর্থন কম নয় বলে তিনি দাবি করেন।
এ নিয়ে রাতে যোগাযোগের চেষ্টা করেও উজ্জ্বলবাবু বা গুরুপদবাবুকে ফোনে পাওয়া যায়নি। উজ্জ্বল কুমারের প্রস্তাবক শরৎ কুমার মন্তব্য করতে চাননি। এক সময়ে জয়পুর ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি পদে থাকা তথা নির্দল প্রার্থী দিব্যজ্যোতি সিংহ দেও-র মন্তব্য, ‘‘আমি এখন নির্দল প্রার্থী। তৃণমূল সমর্থন করতে চাইলে, তা নিয়ে আগে অনুগামীদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।’’
প্রথম দফায় নির্বাচন হতে চলা পুরুলিয়া জেলার ন’টি কেন্দ্রে এ দিনই ছিল মনোনয়নপত্র স্ক্রুটিনির দিন। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার উজ্জ্বলবাবু তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দেন। কিন্তু পরে তাঁর ঘোষণাপত্রে ত্রুটি ধরা পড়ে। প্রশাসন সংশোধন করতে বলার পরে এ দিন তিনি নতুন করে ঘোষণাপত্র জমা দেন। কিন্তু তাতেও নতুন করে ত্রুটি ধরা পড়ে বলে খবর। ততক্ষণে দুপুর গড়িয়ে গিয়েছে। এরপরেই খবর, ছড়িয়ে পড়ে উজ্জ্বল কুমারের মনোনয়ন গ্রহণ করা হচ্ছে না। যদিও প্রশাসনের তরফে কোনও বক্তব্য মিলছিল না।
এ দিকে, তৃণমূল নেতৃত্বও গোড়ার দিকে তা নিয়ে কিছু ভেঙে জানাতে চাননি। ফলে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে। অনেকে ঝালদা মহকুমাশাসকের অফিসের বাইরে জড়ো হন। অন্য দলের অনেক কর্মীও কৌতূহলে সেখানে চলে এসেছিলেন। বাড়ানো হয় পুলিশের সংখ্যাও। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy