Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Narendra Modi

Bengal Polls: বক্তৃতার জল গড়ানো শুরু

জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান শান্তিরাম মাহাতো যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

প্রশান্ত পাল 
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২১ ০৮:০১
Share: Save:

পুরুলিয়ায় নির্বাচনী প্রচারের শুরুতেই পানীয় জলের প্রসঙ্গ টেনে আনলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার ভাঙড়ার নবকুঞ্জ ময়দানের সভায় তিনি বলেন, ‘‘এখানে অযোধ্যা পাহাড়ে সীতাকুণ্ড রয়েছে। কথিত আছে, বনবাসের সময়ে মা সীতার তেষ্টা পেয়েছিল। শ্রীরাম জমিতে তির চালিয়ে জলের ধারা বের করেছিলেন। ভেবে দেখুন, সে সময়ে পুরুলিয়ায় ভূগর্ভের জলের কী পরিস্থিতি হতে পারে? আক্ষেপের বিষয়, আজ পুরুলিয়ায় জল সব থেকে বড় সমস্যা।’’

প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, পুরুলিয়ার চাষি এবং আদিবাসী-বনবাসী মানুষ জলের অভাবে ঠিক ভাবে চাষ করতে পারেন না। মহিলাদের জল আনতে অনেক দূরে হেঁটে যেতে হয়। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে বামপন্থী ও পরে তৃণমূলের সরকার জল প্রকল্প, কাজের সুবিধা তৈরিতে বাধা দিয়েছে। এরা পুরুলিয়ার মানুষকে জলকষ্টে ভরা জীবন দিয়েছে, পালাতে বাধ্য করেছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘এরা কেমন কাজ করে, তার বড় উদাহরণ পুরুলিয়া পাইপলাইন জল সরবরাহ প্রকল্প। আট বছর পার হলেও কাজ শেষ হয়নি।’’

জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান শান্তিরাম মাহাতো যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘গরম পড়ার আগেই জলের দাবিতে পথ অবরোধ হত। মহিলারা পুরসভা ঘেরাও করতেন। সেই দৃশ্য এখন দেখা যায় না।’’ তাঁর দাবি, পুরুলিয়া শহরের পাশে, কংসাবতীর গর্ভে বিশেষ ‘ইনফিল্টেশন গ্যালারি’ তৈরি করে জলের সংস্থান বাড়ানো হয়েছে। জেলা জুড়ে সৌরবিদ্যুৎচালিত ছোট জলপ্রকল্প হয়েছে অনেক।

পুরুলিয়ায় ২০১৩ সালে জাইকা জল প্রকল্পের অনুমোদন মেলে। এখনও সেই কাজ শেষ হয়নি। অনেকে মনে করছেন, জাইকা নিয়েই মোদী কাজে বিলম্বের অভিযোগ করেছেন এ দিন। শান্তিরামবাবু বলেন, ‘‘জাপান সরকারের সঙ্গে যৌথ ভাবে জাইকা প্রকল্পের কাজ হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী দেরির ব্যাপারে ওয়াকিবহাল। তিনি সব রকম ভাবে চেষ্টাও করছেন।’’ তাঁর দাবি, ২০২২ সালের মার্চের মধ্যে জেলার প্রায় অর্ধেক মানুষের নলবাহিত জলপ্রকল্পের আওতায় চলে আসার কথা।

শান্তিরামবাবুর দাবি, জেলায় আড়াইশোর বেশি চেকড্যাম তৈরি হয়েছে গত এক দশকে। মাটির সৃষ্টি প্রকল্পে জল ধরা এবং কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে এক সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী জেলায় বৈঠক করতে এলেই নিয়ম করে জলের খোঁজ নেন। প্রধানমন্ত্রী হয় পুরনো তথ্য নিয়ে কথা বলেছেন, নয়তো তাঁকে ঠিক তথ্য দেওয়া হয়নি।’’

সিপিএমের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়ের দাবি, রঘুনাথপুরে ইন্দো-জার্মান জল প্রকল্প বাম আমলে হয়েছিল। তৃণমূলের আমলে উদ্বোধন হওয়া বেশ কিছু জল প্রকল্পের কাজও শুরু হয়েছিল সিপিএম রাজ্যের ক্ষমতায় থাকার সময়ে। তিনি বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে জল থাকলেও দলিতরা অনেক জায়গায় তা নিতে পারেন না। বিজেপি এলে এ রাজ্যের পরিস্থিতিও সে দিকে গড়াতে পারে বলে আমাদের আশঙ্কা।’’ বিজেপির এসটি মোর্চার জেলা সভাপতি পার্শী মুর্মুর পাল্টা প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমরা গুজরাত বা উত্তরপ্রদেশ দেখতে যাব না। রাজ্যের মানুষ ও রাজ্যের সংস্কৃতির ঐহিত্য বজায় রেখেই রাজনীতি করি।’’

পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের এক শিক্ষক জানান, ভূস্তরের নানা রকমের প্রকৃতির জন্য পাহাড়ের অনেক জায়গায় অল্প খুঁড়লেই জল মিলতে পারে। তবে পুরুলিয়া জেলার মাটির নীচের স্তর মূলত পাথুরে। তিনি বলেন, ‘‘বয়ে যাওয়া বৃষ্টির জল ধরে রেখেই এখানকার সমস্যা মেটানো সম্ভব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Drinking water
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy