প্রতিপক্ষ: শ্যামপুকুর কেন্দ্রের রাজা রাজবল্লভ স্ট্রিটে তৃণমূল-বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে মারামারি। বৃহস্পতিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
শেষ দফায় আর পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ থাকল না কলকাতার ভোট। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই গোলমাল শুরু হয় বিভিন্ন জায়গায়। জোড়াসাঁকো কেন্দ্রের অন্তর্গত একাধিক জায়গায় বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। বেলেঘাটায় সংঘর্ষে রক্তাক্ত হয়েছেন রাজনৈতিক দলের সমর্থকেরা। মানিকতলায় দফায় দফায় বচসা হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে। মারাত্মক গোলমাল হয়নি ঠিকই, কিন্তু যেটুকু গোলমাল হয়েছে সেটাই লালবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার পক্ষে যথেষ্ট বলে নাগরিকদের একাংশের দাবি।
এই পরিস্থিতিতে অনেকে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে আনছেন। শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ ভোটের জন্য সে বার সৌমেন মিত্রকে পুলিশ কমিশনার হিসেবে নিয়োগ করেছিল কমিশন। সেই সৌমেনবাবুই এ বারও পুলিশ কমিশনারের পদে রয়েছেন। নাগরিকেরা বলছেন, কলকাতা পুলিশের ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে প্রশ্ন না উঠলেও পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ ভোট কাম্য ছিল। সেই দিক থেকে পুরো পাশ নম্বর পাবে না লালবাজার। তবে
লালবাজারের পুলিশকর্তাদের দাবি, ভোট শান্তিপূর্ণই হয়েছে। সামান্য কয়েকটি রাজনৈতিক বচসা হয়েছিল। কিন্তু তা বড় আকার নেওয়ার আগেই থামিয়ে দেওয়া হয়।
এ দিন কাশীপুর-বেলগাছিয়া, শ্যামপুকুর, জোড়াসাঁকো, মানিকতলা, বেলেঘাটা, এন্টালি ও চৌরঙ্গি কেন্দ্রে ভোট ছিল। সাতসকালেই মহাজাতি সদনের সামনে বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। পরে বিধান সরণি এলাকাতেও বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। যদিও পুলিশের দাবি, চকলেট বোমা ফাটানো হয়েছিল সেখানে। বেলেঘাটার মথুরবাবু লেন-সহ একাধিক ওয়ার্ডে গোলমাল হয়েছে। এক বিজেপি কর্মীর মুখ ফেটে রক্ত ঝরতে দেখা গিয়েছে। পুলিশের দাবি, জোড়াসাঁকোর বিজেপি প্রার্থী মীনাদেবী পুরোহিতের গাড়ি লক্ষ্য করেও শব্দবাজি ছোড়া হয়েছে।
প্রশ্ন উঠেছে, আগে থেকে ধরপাকড়, দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা সত্ত্বেও এ দিন একাধিক জায়গায় গোলমাল কেন হয়েছে? এ দিন অন্যান্য এলাকা থেকে ‘বহিরাগতেরা’ মানিকতলা, বেলেঘাটা এলাকায় ঢুকেছিলেন কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। গোলমাল দমনের ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা আলোচনা করতে গিয়ে কেউ কেউ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ২০১৬ সালে ভোট মিটতেই কলকাতা পুলিশের একাধিক অফিসার দূরবর্তী জেলায় বদলি হন। ঘটনাচক্রে, ভোটের দিন তাঁদের অনেককেই ‘সক্রিয়’ হতে দেখা গিয়েছিল। সেই কারণেই কি এ বার ‘সাবধানী’ পুলিশের একাংশ? লালবাজার সূত্রের অবশ্য পাল্টা দাবি, এ দিন যাঁরা গোলমালে জড়িয়েছেন তাঁরা দুষ্কৃতী নন, রাজনৈতিক দলের কর্মী। পুলিশের সক্রিয়তায় কোনও খামতি নেই বলেও দাবি ওই সূত্রের।
তবে এ দিন প্রবীণ পুলিশকর্তাদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, সকাল থেকে গোলমাল দমনে সামান্য হলেও যেন পিছিয়ে ছিল লালবাজার। কিন্তু বেলা বাড়তেই রাশ হাতে নেয় তারা। তাই গোলমাল হলেও অশান্তির মাত্রা ছাড়ায়নি।
পুলিশেরও দাবি, ২০১৬ সালের বিধানসভা এবং ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও গোলমাল হয়েছিল। এ দিনের ঘটনাগুলি সেই গোলমালকে ছাপিয়ে যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy