দুর্গাপুর পূর্ব ও পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় দেওয়ালে লেখা রয়েছে এমন সব ছড়া। ছবি: বিকাশ মশান
‘খেলা হবে’। এই স্লোগান ও তার পাল্টা ছড়ায় ভরে গিয়েছে দুর্গাপুরের দেওয়াল। ছড়া দিয়ে দেওয়াল লিখনের রেওয়াজ চলে আসছে বছরের পরে বছর ধরে। তবে একটিমাত্র বিষয় নিয়েই ছড়ার ফুলঝুরি এ বারের মতো আগে কখনও দেখা যায়নি বলে মনে করছেন দুর্গাপুরের প্রবীণ বাসিন্দারা।
এ বার ভোটের দামামা বাজার পরে তৃণমূল হোক বা বিজেপি, দু’তরফই বলছে, ‘খেলা হবে’। তবে এই স্লোগানের উৎপত্তি কবে, কার হাত ধরে তা নিয়ে বিতর্ক আছে। কিন্তু তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি, এই স্লোগান প্রথম শোনা গিয়েছিল বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের মুখে। তৃণমূলের যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্যের উদ্যোগে এই স্লোগান জনপ্রিয় হয়েছে।
এ দিকে, দুর্গাপুরে ফুটবলে মুখ্যমন্ত্রীর ভাঙা পায়ের ছবি দেওয়া তৃণমূলের দেওয়াল লিখনে ভরে গিয়েছে দেওয়ালও। একই সঙ্গে ‘খেলা হবে’ স্লোগান ব্যবহার করে অন্য ছড়াও জায়গা পেয়েছে তৃণমূলের দেওয়াল লিখনে। যেমন লেখা হয়েছে, ‘বুড়ি মায়ের স্বাস্থ্যসাথী/ ফুলিয়ে বলে বুকের ছাতি/ অপারেশন ফ্রি-তে হবে/ বন্ধু এ বার খেলা হবে।’ বা লেখা হয়েছে, ‘নেতা কিনতে লাগছে টাকা/ তেল কিনতে পকেট ফাঁকা/ মানুষ এ বার জবাব দেবে/ বন্ধু এ বার খেলা হবে’। এমন আরও বহু ছড়া নজরে আসছে শহরের নানা জায়গায়।
বিরোধীরাও হাত গুটিয়ে বসে নেই। শাসকদলের ‘খেলা হবে’ স্লোগানের পাল্টা নিয়ে হাজির তাঁরা। সংযুক্ত মোর্চার তরফে দেওয়াল লেখা হয়েছে, ‘হোক না এমন খেলা/ সবার পাতে জুটুক ভাত/ দু-মুঠো দু’বেলা’। আবার কোথাও লেখা হয়েছে, ‘শিল্প হবে/ কাজ হবে/ টাকা ছাড়া চাকুরি হবে’। বিজেপি লিখেছে, ‘চোরের মায়ের বড় গলা/ বলছে এ বার হবে খেলা/ চিট ফান্ডের কোটি কোটি/ লুঠ করেছে হাওয়াই চটি’ বা ‘মাঠে যখন নেমেছি/ মন দিয়ে খেলব/ একুশে বিজেপি/ সরকার আমরাই গড়ব’।
‘খেলা হবে’ ধরনের এই সমস্ত ছড়ায় প্রচারে, পাল্টা প্রচারে হিংসায় ইন্ধন জোগানোর অভিযোগ তুলছেন কেউ কেউ। এ বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। যদিও শহরের বাসিন্দা একটি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জইনুল হক বলেন, ‘‘ছড়ায় দেওয়া কোনও বার্তা দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠার সম্ভাবনা থাকে। তাই নির্বাচনের প্রচারে ছড়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তবে দেখতে হবে, তা যেন কোনও ভাবেই হিংসার পরিবেশ তৈরি না করে।’’ তৃণমূলের অন্যতম জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ছড়া ও স্লোগানের মাধ্যমে কর্মীরা বিভিন্ন বার্তা তুলে ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখানে হিংসার কোনও জায়গা নেই।’’ দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি প্রার্থী লক্ষ্মণ ঘোড়ুই মন্তব্য, ‘‘আমরাও বরাবর হিংসামুক্ত গণতন্ত্রের পক্ষে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটা সত্যি যে, রাজ্যের শাসকদলের ছড়ায় উস্কানিমূলক ইঙ্গিত থাকে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার মনে করেন, ‘‘রাজনীতিতে হিংসার কোনও জায়গা নেই। আমরা সে ধারা মেনে রাজনীতি করি। বাকিদেরও সংযত হতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy