Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
flower market

Bengal Polls: ‘আমরা কি ভোটার নই’, প্রশ্ন ক্ষুব্ধ ফুলচাষিদের

শনিবার রাজ্যে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। ভোট আসে, নতুন সরকার তৈরি হয়।

মল্লিকঘাট ফুলবাজারে পরিকাঠামোর অভাব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফুলচাষিরা।

মল্লিকঘাট ফুলবাজারে পরিকাঠামোর অভাব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফুলচাষিরা। ফাইল চিত্র

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২১ ০৭:২২
Share: Save:

কোভিড পরিস্থিতিতেও গিজগিজে ভিড়ের ঘিঞ্জি মল্লিকঘাট ফুলবাজারের ছবি একাধিক বার উঠে এসেছে সংবাদমাধ্যমে। অথচ সরকার সচেষ্ট হলে রাজ্যের সর্ববৃহৎ এই ফুলবাজারের হাল বদলে যেতে পারত বলে মনে করেন এই বাজারের সঙ্গে যুক্ত ফুল চাষি ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অভিযোগ, কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয়ের অভাবে এই ফুলবাজার আজও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে অপরিকল্পিত ভাবেই পড়ে রইল।

কাল, শনিবার রাজ্যে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। ভোট আসে, নতুন সরকার তৈরি হয়। কিন্তু এই রাজ্যের ফুল চাষ ও ফুলের ব্যবসায় জড়িত মানুষগুলির কথা কেউ ভাবে না বলেই অভিযোগ ফুল ব্যবসায়ীদের। তাঁদের কথায়, বাম আমল বদলের পরে এক দশক পেরিয়ে গেলেও মল্লিকঘাট ফুলবাজারের হাল বদলাল না। ফুল বিক্রির ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধাও পেলেন না ফুলচাষি এবং ফুল ব্যবসায়ীরা। সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির দাবি, প্রায় এক কোটি মানুষ এই ব্যবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে জড়িত। ভোটের আগে তাঁরা নিজেদের দুর্দশা নিয়ে ক্ষুব্ধ বলেই দাবি করেছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ নায়েক।

ফুল উৎপাদনের নিরিখে এই রাজ্যের অন্যতম দু’টি গুরুত্বপূর্ণ জেলা পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুর। যেখানে রজনীগন্ধা, গাঁদা, জবা, দোপাটির মতো ফুলের চাষ হয়। শনিবার ওই দুই জেলায় ভোট।

ফুলচাষিরা জানান, মল্লিকঘাট ফুলবাজার সংস্কার করে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা হয়েছিল সেই ’৯২ সালে। ’৯৮ সালে বাজার পুড়ে যায়। তার আগে পর্যন্ত ওই বাজার ছিল কলকাতা বন্দরের জমির উপরে। চাষিদের থেকে ভাড়া নিত বন্দর। কিন্তু বাজার পুড়ে যাওয়ার পরে ’৯৯ সালে বামফ্রন্ট সরকার ফুলবাজারের ওই জায়গা বন্দরের থেকে ৯৯ বছরের লিজে নেয়।

পূর্ব মেদিনীপুরের ফুলচাষি সনাতন দাস এবং হাওড়ার ফুলচাষি শ্রীমন্ত ধাড়া জানান, বাম আমলে এই ফুলবাজারকে ঢেলে সাজানোর একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রের সঙ্গে যৌথ ভাবে ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ছিল। কেন্দ্র থেকে পাঁচ কোটি টাকাও এসে গিয়েছিল। কাজ না হওয়ায় সেই টাকা ফেরত চলে যায়। অবশ্য আধুনিক বাজার তৈরির জন্য সাময়িক ভাবে অন্যত্র সরে যাওয়া এবং পরে নিজেদের পুরনো জায়গায় ফিরতে পারার বিষয় নিয়ে চাষিদের তরফেও কিছু জটিলতা তৈরি হয় বলে খবর।

চাষিদের দাবি, মল্লিকঘাট ফুলবাজারের হাল ফেরাতে এবং তাঁদের নানা সমস্যা নিয়ে তৃণমূলের সরকারের কাছে একাধিক বার দরবার করা হয়েছিল। কিন্তু কোনও সাহায্য পাননি বলেই অভিযোগ ফুলচাষিদের।

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে সম্প্রতি ফুলবাজারের পরিচালন সমিতির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা। তিনি বলেন, “কলকাতা পুরসভা প্রকল্পের জন্য বাড়ি তৈরির অনুমোদন দিয়েছিল। কিন্তু ওই প্রকল্প রূপায়ণে যে বিপুল খরচের প্রয়োজন, তত বাজেট সরকারের ছিল না। কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। সাড়া মেলেনি।”

ফুলচাষিরা জানাচ্ছেন, বীরভূম, নদিয়া, দুই ২৪ পরগনা, দার্জিলিংয়ের মতো জেলাগুলিতে প্রচুর মানুষ ফুলচাষে জড়িত। তাঁদের অভিযোগ, নদিয়ায় ফুলের চাষ খুব বড় আকারে হয়। অথচ কোথাওই ফুলচাষি বা ব্যবসায়ীদের জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। কোথাও তাঁরা রেলের জমিতে বসে ব্যবসা করছেন, কোথাও জাতীয় সড়কের উপরে ব্যবসা করেন।

সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ নায়েকের অভিযোগ, “করোনা ও আমপানে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমরা এ বিষয়ে স্মারকলিপি দিয়েও সাহায্য পাইনি।” তাঁর প্রশ্ন, “আমরা কি ভোটার নই? তা হলে কোনও দলের ইস্তাহারেই আমাদের সমস্যা সমাধানের চিন্তাভাবনার উল্লেখ নেই কেন?”

অন্য বিষয়গুলি:

flower market West Bengal Polls 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy