প্রতীকী ছবি।
রাত ফুরোলেই ভোট। গ্রামের রাস্তায় টহলদারি চালানো কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দেখে গ্রামবাসী খানিকটা আশ্বস্ত হলেও ভোট না মেটা পর্যন্ত গোলমালের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা।
ঘটনাস্থল শাসন। কাল, শনিবার সেখানে ভোট। হাড়োয়া বিধানসভার অধীনে ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে শাসন, কীর্তিপুর (১) ও (২), ফলতি, বেলিয়াঘাটা, দাতপুর— এই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাগুলি সব সময়ে সন্ত্রাস ও গোলমালের নিরিখে স্পর্শকাতর বলেই চিহ্নিত হয়ে এসেছে।
ওই পঞ্চায়েত এলাকাগুলির অধীনে থাকা বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, এ বারেও ভোটের আগে চাপা সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে আইএসএফ এবং বিজেপি— দুই বিরোধী দলই শাসানি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে। আরও অভিযোগ, তৃণমূলের মধ্যে ‘সন্দেহজনক’ নেতা-কর্মীদেরও ভোট না দেওয়ার জন্য শাসানো হয়েছে। এমনকি, এক পঞ্চায়েত সদস্য এবং একটি গ্রাম কমিটির এক প্রাক্তন সভাপতি যাতে ভোট দিতে না যান, সে জন্য তাঁদের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
শাসন, সর্দারহাটি, ডেওপুকুর, মজলিশপুর, খামারনওয়াত, দাতপুর, দক্ষিণ ফলতি, ষন্ডালিয়া, বাদা, বরদেসিয়ার মতো গ্রামগুলিতে বুধবার রাত থেকেই বিরোধী দলের এজেন্টদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শাসন-সহ পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েতের দায়িত্বে থাকা আইএসএফের আহ্বায়ক আবু বক্কার বিশ্বাস বৃহস্পতিবার জানান, শাসন অঞ্চলের ১৩৩টি বুথের অধিকাংশেরই এজেন্টদের ভয় দেখানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দলীয় নেতৃত্ব পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানালেও সুরাহা হচ্ছে না। প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, ২ মে-র পরে দেখে নেওয়া হবে।’’
বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য ভাস্কর মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘শাসন ও কামদুনির ভোটারেরা যাতে ভোট দিতে না যান, তার জন্য তাঁদের শাসানি ও খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা এলাকাছাড়া, তাঁরা ভোট দিতে আসতে চাইলেও প্রশাসন তাঁদের ফেরানোর ব্যবস্থা করছে না।’’ যদিও বারাসত জেলা পুলিশের সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘হুমকি কিংবা শাসানি দেওয়া নিয়ে কোনও অভিযোগ এখনও আসেনি।’’
তবে বারাসত ব্লক (২)-এর তৃণমূল সভাপতি শম্ভুনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘বিরোধীরা যা খুশি তাই বলছেন। ওঁদের এজেন্ট দিতে কেউ বারণ করেননি। কিন্তু ওঁদের সঙ্গে তো লোকই নেই।’’
ভোটে বরাবরই স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত শাসন। স্থানীয় সূত্রের দাবি, বোমা এবং আগ্নেয়াস্ত্র মজুত থাকে এখানে নানা জায়গায়। মূলত ভেড়ির দখল নিয়ে দুষ্কৃতীদের মধ্যে সারা বছর গোলমাল লেগে থাকে। সেই সব অস্ত্রই ভোটের সময়ে ব্যবহার হয়।
গ্রামবাসীদের একাংশ মনে করছেন, যে কোনও সময়ে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠতে পারে। তাঁদের ব্যাখ্যা, শাসনে তৃণমূলের হয়ে যারা নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের একটি অংশ বিজেপি এবং আইএসএফের দিকে চলে গিয়েছে। তাই যখন-তখন দু’পক্ষের গোলমাল বাধতে পারে। যদিও গ্রামবাসীদেরই আর একটি অংশের ধারণা, তিন পক্ষ সমান বলীয়ান হওয়ায় হয়তো তেমন কিছু ঘটবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy