অসীমা বন্দ্যোপাধ্যায়
বাড়িতে স্কুলপড়ুয়া ছেলেকে রেখে ভোটের কাজে আসানসোলের ডিসিআরসি কেন্দ্রে এসেছিলেন অসীমা বন্দ্যোপাধ্যায় (৪৫)। রবিবার সেখানেই আচমকা অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হল তাঁর। ওই কেন্দ্রে আসা ভোটকর্মীদের একাংশ ও রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের নেতৃত্ব সেখানকার স্বাস্থ্যশিবিরের পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে নির্বাচন কমিশন।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, সালানপুরের পিঠাইকেয়ারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা অসীমাদেবী সকাল ১০টা নাগাদ আসানসোলে এক বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ওই ডিসিআরসি কেন্দ্রে পৌঁছন। ভোটের সামগ্রী নেওয়ার লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। দুপুর সাড়ে ১২টায় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলে থাকা ভোটকর্মীরা জানান, অসীমাদেবীর মাথায় জল দেওয়া হয়। তাঁকে কেন্দ্রের স্বাস্থ্যশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়। ভোটকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, তখন সেখানে স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকের দেখা মেলেনি। ছিল না অ্যাম্বুল্যান্স, স্ট্রেচারও। মিনিট পনেরো পরে তাঁকে পুলিশের গাড়িতে চাপিয়েই আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান কয়েক জন পুলিশকর্মী। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানান।
এর পরেই ঘটনাস্থলে থাকা ভোটকর্মী সোমা সাহার অভিযোগ, ‘‘ওখানে প্রচণ্ড গরম ও ভিড়ের চাপে দমবন্ধ করার মতো পরিস্থিতি হয়েছিল। তার মধ্যেই লুটিয়ে পড়েন ওই মহিলা।’’ বিষয়টি নিয়ে সরব হয় বিভিন্ন শিক্ষক-সংগঠন। ঘটনাটির জন্য কমিশনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার ও পরিবারকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ, পরিবারের এক জনের চাকরির দাবি জানিয়েছেন ‘শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ’-র রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী। ‘অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক চন্দন গড়াইয়ের অভিযোগ, ‘‘কমিশনের সমস্ত ব্যবস্থা অগোছাল। এর জন্যই ওই ভোটকর্মী মারা গেলেন।’’ ‘মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি’-র তরফে অনিমেষ হালদার-সহ অন্য শিক্ষক নেতৃত্ব ডিসিআরসি কেন্দ্রগুলিতে কোভিড-বিধি রক্ষিত হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন। কমিশন অবশ্য তা মানেনি।
যদিও, কেন ও কী ভাবে ওই ভোটকর্মীর মৃত্যু হয়েছে, তা ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে বলে জানান কমিশনের কর্তারা। জেলা নির্বাচনী আধিকারিক তথা জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, মহিলার পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’’ তবে কমিশনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখেছি, ওই শিবিরে স্বাস্থ্যকর্মীরা ছিলেন। এর পরেও কেন এমন অভিযোগ উঠছে, দেখা হবে।’’
খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, অসীমাদেবীর বাড়িতে শুধু রয়েছে নবম শ্রেণির পড়ুয়া ছেলে চণ্ডীম। সে কথা বলার মতো অবস্থায় ছিল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy