—ফাইল চিত্র।
এ বার দুয়ারে কমিশন।
বিরোধীদের আশঙ্কা, নির্বাচনের আগেই শুরু হতে পারে ‘সন্ত্রাস’। এই রাজ্যে তা নতুন নয়। ভয়ে সন্ত্রস্ত হয়ে অনেকেই লুকিয়ে থাকবেন বাড়িতে।
কমিশনের প্রতিনিধি হয়ে সেই ‘ভীত’ ভোটারদের আস্থা বাড়াতে জেলাশাসক-পুলিশ সুপারদের তাঁদের দুয়ারে যাওয়ার নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশন। বলা হল, তাঁদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে হবে। ভোট দিতে আসার জন্য ফেরাতে হবে আস্থা। এক জেলা-কর্তার কথায়, ‘‘নির্ভয়ে সবাই যাতে ভোট দিতে পারেন, সেই পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে কমিশন। লোকসভা ভোটে যেখানে মানুষ ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ, সেখানে বাড়তি নজর রাখতে হবে।’’
বৃহস্পতিবার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, পুলিশ কমিশনারদের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠক করেন উপনির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। সূত্রের খবর, তাঁর নির্দেশ, ভোটের আগে কেউ দুষ্কৃতীদের হুমকির কথা জানালে তাঁর সঙ্গে কথা বলে আস্থা বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে জেলাশাসক-পুলিশ সুপারদের। ভোটে অনেক বেশি মহিলা-ভোটকর্মী থাকবেন। তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও বাড়তি জোর দিয়েছেন তিনি।
সূত্রের খবর, জৈন বৈঠকে জানান, ভোট ঘোষণার আগেই ‘ভীত’ ভোটারদের চিহ্নিত করতে হবে। তাঁদের ফোন নম্বর রাখতে হবে জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের। স্থানীয় অফিসারদের ফোন নম্বর তাঁদের দিয়ে রাখতে হবে, যাতে বিপদের শঙ্কা ভোটারদের মন থেকে মুছে যায়। বিডিও বা থানার ওসি-দের পাঠিয়েও এ কাজ করা যেতে পারে। প্রাথমিক ভাবে প্রায় ছ’হাজার বুথকে অতি স্পর্শকাতর মনে করছে কমিশন।
মুর্শিদাবাদের নিমতিতা স্টেশনে রাজ্যের মন্ত্রী জাকির হোসেনের উপরে হামলায় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন এ দিন কমিশন-কর্তার প্রশ্নের মুখে পড়ে। জৈন সরাসরি জিজ্ঞাস করেন, ভোটের আগে এই পরিস্থিতি হলে, নির্বিঘ্নে ভোট কী করে হবে? বিস্ফোরণের পরে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, জেলা প্রশাসন সেই ব্যাখ্যা দিতে গেলে কমিশন কর্তা তাতে সন্তুষ্ট হননি বলেই সূত্রের খবর। উল্টে জৈন জানতে চান, তাঁদের কারও কাজ করতে কি অসুবিধা হচ্ছে?
সূত্রের দাবি, স্পর্শকাতর এলাকার সংখ্যা বা চিহ্নিতকরণের সঙ্গে বিরোধী দলগুলির দেওয়া তথ্য কেন ভিন্ন হচ্ছে, তা জানতে চান উপ নির্বাচন কমিশনার। জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করার গতি কেন মন্থর, একাধিক পুলিশ সুপার এবং কমিশনারের কাছে তা-ও জানতে চান কমিশন-কর্তা। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক অফিসার জানাচ্ছেন, কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপর বাড়তি জোর দেওয়া হয়। সব ধরনের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কলকাতা পুলিশ কেন ‘পিছিয়ে’ রয়েছে, তা জানতে চান কমিশন-কর্তা। কলকাতার পুলিশ কমিশনার সামগ্রিক প্রস্তুতির ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন কমিশন-কর্তাকে।
রাজ্য প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া কমিশন সুষ্ঠু ভোট পরিচালনা করতে পারবে না তা স্পষ্ট করার পাশাপাশি প্রত্যেক অফিসারের দায়বদ্ধতা এবং নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে চেয়েছেন কমিশন-কর্তা। সে ক্ষেত্রে ভোটের সঙ্গে যুক্ত কোনও অফিসারের উপর কোনও ধরনের অবাঞ্ছিত চাপ এলে কমিশন সংশ্লিষ্টকে রক্ষা করতে ‘ঢাল’ হয়ে দাঁড়াবে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু অফিসারের ইচ্ছাকৃত গাফিলতি বা নিরপেক্ষতার অভাব প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টকে কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে বলে ঈঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে কমিশন অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারেও জোর দিয়েছে। ভোটকেন্দ্র থেকে রাজনৈতিক দলগুলির বুথের দূরত্ব একশো মিটার থেকে বাড়িয়ে দু’শো মিটার করার কথাও ভাবছে কমিশন। জেলা-কর্তারা জানাচ্ছেন, কবে ভোট ঘোষণা হবে, এ দিন তেমন ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। কমিশনের ফুল বেঞ্চের ফের রাজ্যে আসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy