দুবরাজপুরের মাদৃক সঙ্ঘের মঞ্চে দিলীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
ক্ষমতায় এলে স্তর ভিত্তিক শাস্তির ব্যবস্থা হবে জেলার তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে, এমনই নিদান দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রবিবার কীর্ণাহার, সিউড়ি, দুবরাজপুরে প্রায় একই সুরে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘শেষ দফায় সবথেকে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে বীরভূমে। প্রত্যেক বুথে আটজন কেন্দ্রীয় সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ান থাকবেন,
পর্যবেক্ষকরা থাকবেন। এদিক থেকে ওদিক হলে অভিযোগ করুন, কেউ চোখ দেখালে অভিযোগ করুন এবং আমাদের জানান। বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে জেলের ভাত খাওয়াবে সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’’ এ দিন জেলায় এসে নানা বিষয়ে তৃণমূল সরকারকে বিঁধেছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীও।
এ দিন কেএসএ মাঠে নানুর কেন্দ্রের প্রার্থী তারকেশ্বর সাহা এবং লাভপুর সিনেমা হলে লাভপুর কেন্দ্রের প্রার্থী বিশ্বজিৎ মণ্ডলের সমর্থনে সভা ছিল বিজেপির।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কীর্ণাহারের সভায় চারশোর কিছু বেশি চেয়ার বরাদ্দ থাকলেও সব মিলিয়ে লোক হয়েছিল হাজার দেড়েক। ফলে অনেককেই দীর্ঘক্ষণ গায়ে গায়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। হেলিপ্যাডের ধারেও ভিড় হয়। মাস্কের বালাই ছিল না।
এ দিনের সভায় বিজেপিতে যোগ দেন লাভপুর এলাকার তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান গোপাল চট্টোপাধ্যায় এবং কংগ্রেসের জেলা কমিটির সদস্য প্রদ্যুৎ মণ্ডল। দু’টি দলের পক্ষ থেকেই অবশ্য দীর্ঘদিন দলের সঙ্গে তাঁদের কোনও সম্পর্ক ছিল না বলে জানানো হয়েছে। দু’টি সভাতেই তৃণমূলের দুর্নীতির ব্যাপারে বেশি সরব হন দিলীপবাবু। তিনি বলেন, ‘‘জনগণের টাকা খেয়ে কাউকে হজম করতে দেব না। পেট থেকে বের করা হবে। যে যেমন সাইজের ইঞ্চি, ফুটের নেতা তাকে সেইরকম জেলে পাঠানো হবে। পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির নেতারা থাকবেন বীরভূম জেলেজেলা পরিষদের নেতা, এমএলএ'রা দমদম সেন্ট্রাল জেলে। আর সাংসদ, মন্ত্রীদের ভুবনেশ্বরে জগন্নাথ দর্শন করতে পাঠিয়ে দেব। দিদিও বাদ যাবেন না। জেলে বসে ভাইদের সঙ্গে মিটিং করবেন।’’
দুবরাজপুরের সভাতেও তিনি বলেন, ‘‘আজকে পুলিশের মেরুদণ্ড নেই। বিজেপি ক্ষমতায় এলে পুলিশের মেরুদণ্ড ঠিক করে দেবে। সোজা হয়ে হাঁটবে। তাঁদের অশোক স্থম্ভ ও ইউনিফর্মের সম্মান ফিরিয়ে দেব। কোনও মোটা নেতা, পাতলা নেতার হিম্মত হবে না পুলিশকে চমকানোর। বোম মারব বলার। ইউপি বিহারে এই সাহস কেউ করতে পারে না।’’
এ দিনই বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী রামপুরহাট, হাঁসন, ময়ূরেশ্বর এই তিন বিধানসভা নির্বাচন কেন্দ্রে প্রচারে আসেন।
রাজ্য সরকারের বিরদ্ধে তাঁর অভিযোগ, ‘‘গত দশ বছরে শিল্পায়ন, বেকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজের ক্ষেত্রে কী কী কাজ করেছেন দশ বছরের কোনও রিপোর্ট কার্ড করতে পারেননি। দু কোটি বেকার তৈরি করেছেন। স্কুল সার্ভিস কমিশনের কোনও পরীক্ষা হয় না। সাড়ে আট লক্ষ ছেলে মেয়ে ডিএড পাশ করে রাস্তায় ঘোরে।’’
স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়েও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন শুভেন্দু। এ দিন রামপুরহাটের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে তিনি বলেন, ‘‘আপনি তো ঢাকঢোল পিটিয়ে
দুয়ারে সরকার প্রকল্পে
স্বাস্থ্য সাথী কার্ড বিলি করেছিলেন এবং বলেছিলেন ৫ লক্ষ টাকা এই কার্ডে চিকিৎসার সুবিধা পাবেন। আপনি মনে করেছিলেন স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় জাগরণ ঘটিয়েছেন। কিন্তু আজকে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড কোথায় লাগছে? আজকে আপনার রাজ্যে হসপিটালে বেড নেই।’’
করোনা পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচনের প্রাক্কালে পুনরায় ক্ষমতা আসার লক্ষ্যে গত
ছ’মাসে মুখ্যমন্ত্রী নানান রকম কর্মসূচি বিতরণের কাজ করে চলেছেন। কিন্তু কোভিড নিয়ে কোনও মিটিং করেননি। গত মাসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোভিড নিয়ে রিভিউ মিটিংয়ে তিনি অংশগ্রহণ করেননি। গত পরশুদিন তিনি রিভিউ মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেননি।”
তাঁর কথায়, ‘‘নন্দীগ্রামে গাড়ির দরজা লেগে পায়ে আঘাত লাগল। তিনি নন্দীগ্রামে আট কিলোমিটার দূরে যে হসপিটাল আছে সেই হসপিটালে চিকিৎসা না
করিয়ে সাড়ে তিন ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার জার্নি করে কলকাতায় এসে এক্স রে করালেন। তার কারণ হল তিনি ভালভাবে জানেন ওই হসপিটালে এক্স-রে মেশিনটা খারাপ। রেডিয়োলজিস্ট নেই। এই হচ্ছে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্যব্যবস্থা।’’
এ দিনের প্রতিটি সভায় অবশ্য সভাস্থলে কোভিড বিধি পালন করার ক্ষেত্রে মাস্কের ব্যবহার দেখা গেলেও গা ঘেঁষাঘেঁষি করে কর্মীদের হেলিপ্যাডে শুভেন্দুর কপ্টার দেখতে ভিড় করেন কর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy