দেবদূত ঘোষ —ফাইল চিত্র
এই বিধানসভা নির্বাচনেই আমি প্রথম রাজনৈতিক প্রার্থী হয়েছিলাম। তবে এর আগেও নির্বাচনের কিছু অভিজ্ঞতা ছিল। টালিগঞ্জে আমাদের ইউনিয়নের অনেক বার প্রার্থী হয়েছি। সেখানেও যথেষ্ট আলোড়ন আর উত্তেজনা ছিল। প্রতি বছর অনেক চ্যানেল সেই নির্বাচনের সরাসরি সম্প্রচারণ করে। কিন্তু রাজনৈতিক লড়াই সম্পূর্ণ আলাদা। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমে আমার বেশ একটা শিক্ষা হল। পরাজিত হলেও সেই শিক্ষা কাজে লাগবে।
শিক্ষা এই যে, স্টুডিয়ো পাড়ার বাইরেও যে একটা টালিগঞ্জ আছে, সেটা পায়ে হেঁটে দেখলাম। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে অভিনয় সূত্রে টালিগঞ্জ যাচ্ছি। সেখানকার ঝোড়ো বস্তি, করুণাময়ী কালীমন্দির চিনি শ্যুটিং এলাকা হিসেবে। প্রচারে গিয়ে দেখেছিলাম, সেখানকার মানুষের বিস্তর দুঃখদুর্দশা। তাঁরা সেগুলো নিয়েই রোজের জীবন যাপন করেন। দলের নির্দেশ ছিল, পায়ে হেঁটে সকলের কাছে পৌঁছতে হবে। সে কথা মেনে কানাগলি, কালভার্ট পেরিয়ে, মাথার উপর মাকড়সার জালের মতো ঝুলতে থাকা গাছের ডাল, কেব্ল লাইনের তার পেরিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলাম মানুষের কাছে। রাতের অন্ধকারে সেই সব পথ পেরোনোর উপায় ছিল কমরেডদের মোবাইলের আলো। তার পরেও যখন বাসিন্দাদের কাছে গিয়ে দাঁড়িয়েছি, তাঁরা উচ্ছ্বসিত হয়েছে। তারা বিশ্বাস করেছিলেন, ভরসা করেছিলেন।
প্রচারে দেখলাম টালিগঞ্জের দুই রূপ। রানিকুঠি, নারকেল বাগান, নেতাজি নগর-সহ খালের এ পারে শিক্ষিত, বিত্তবান মানুষের ভিড়। ওপারে দরিদ্রদের বসতি। দেশের সমস্ত খেটে খাওয়া মানুষদের যা যা সমস্যা, সে সব তাঁদেরও বিব্রত করে। ওষুধ, গ্যাস, পেট্রলের আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি। সঙ্গে পানীয় জল, বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা। রাস্তাঘাট পাকা নয়। আমাকে এ সবই জানিয়েছিলেন ওই এলাকার মানুষ। তাঁদের কথা দিয়েছিলাম, আমি জিতলে বা দল সমষ্টিগত ভাবে জিতলে পদক্ষেপ করব। টালিগঞ্জে বেশ কিছু গঠনগত ত্রুটি রয়েছে। যেমন, পরিকল্পনা ছাড়া বহুতল। পরিবেশ দূষিত। কারণ, ফাঁকা জমি থাকলেও গাছ নেই। এলাকা যে খুব সুন্দর করে সাজানো তেমনও নয়। যেহেতু তিন দশক বাম বিধায়ক ছিলেন না, তা-ই অনেক কাজই সুষ্ঠু ভাবে হয়নি। মনে হয়েছিল, গাছ লাগাতে খুব বেশি খরচ হয় না।
টালিগঞ্জের প্রাণকেন্দ্র স্টুডিয়োপাড়া। অতিমারিতে ছোট পর্দা, ওটিটি প্ল্যাটফর্মের প্রাধান্য এবং প্রাবল্য বেড়েছে। অভিনেতা-কলাকুশলী সহ কমবেশি ১০ হাজার কর্মীর সংসার বাঁচাতে নতুন বিনিয়োগ আনার চেষ্টা করা উচিত। আমাদের সংগঠন মুম্বইয়ের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছিল ভোটের আগেই। টলিউডের বাম ইউনিয়নও সেই প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy