Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Sitalkuchi

Bengal polls: তুলে আছাড় মারা হয় তাকে, দাবি জাহেদুলের 

কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশ জানিয়েছে, জাহেদুলের মৃত্যুর গুজবেই গন্ডগোল ছড়িয়ে পড়েছিল।

মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে মায়ের সঙ্গে জাহেদুল হক। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে মায়ের সঙ্গে জাহেদুল হক। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নমিতেশ ঘোষ
মাথাভাঙা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২১ ০৭:৫৮
Share: Save:

এক জন বলেছিল, “বাচ্চা আছে, ছেড়ে দাও।” আর এক জন কথা শোনেনি। প্রথমে লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। পরে তাকে তুলে আছাড় দেওয়া হয়— সোমবার মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে এমনই দাবি করেছে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র জাহেদুল হক। গত শনিবার শীতলখুচি বিধানসভার জোড়পাটকির আমতলি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের ১২৬ নম্বর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ জনের মৃত্যু হয়। ওই শিক্ষাকেন্দ্র থেকে কয়েক হাত দূরেই জাহেদুলদের বাড়ি। কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশ জানিয়েছে, জাহেদুলের মৃত্যুর গুজবেই গন্ডগোল ছড়িয়ে পড়েছিল। তাদের দাবি, কেউ তাকে মারধর করেনি। সে অসুস্থ হয়ে পড়লে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। জাহেদুলের মা রাহিলা বিবি বলেন, “আমার ছেলেকে মারধর করা হয়। তবে শেষে পুলিশ আর জওয়ানরাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’’
ঘটনার পর তিন দিন কেটে গেলেও জাহেদুলের চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। কথা বলতেও যেন ‘ভয়’ হচ্ছিল তার। তাঁকে গ্রামে সবাই মৃণাল বলেই ডাকে। বোচাগাড়ি হাইমাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সে। তার কথায়, ওই দিন মা রাহিলা বিবি, বাবা মজিদ মিয়াঁ ভোট দিতে বেরিয়ে যায়। হট্টগোল শুনে দাদা আজিজুল মিয়াঁর খোঁজ করতে বলে যান মা। জাহেদুল দাদার খোঁজে বার হয়। ওই সময় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা বুথের আশপাশ থেকে সবাইকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছিল। জাহেদুল বলে, “আমি দেখছি কয়েক জন জওয়ান সবার দিকে লাঠি নিয়ে তেড়ে যাচ্ছে। আচমকাই আমাকে এসে ধরে। আমি বারবার বলি, আমি ছোট, আমাকে ছেড়ে দিন। বাড়ি যাব। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি।” তার দাবি, এক জন তাকে ছোট ছেলে বলে ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু আর এক জওয়ান তা শোনেনি।
জাহেদুলের অভিযোগ, তাকে লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। কোমরে ও ঘাড়ে আঘাত লাগে তার। এর পরেই তার গলার কাছে চেপে ধরে তুলে আছাড় দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে জাহেদুল। তার পরে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তার কথায়, “আমার ওজন ৩৬ কেজি। খুব সহজেই আমাকে শূন্যে তুলে ফেলেছিল এক জওয়ান।” পরে সেখান থেকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
গ্রামবাসীরা প্রশ্ন তুলেছেন, একটি ১৪ বছরের কিশোরকে এমন ভাবে মারধর করার কারণ কী? কেন্দ্রীয় বাহিনী অবশ্য আগেই জানিয়ে দিয়েছে, ওই কিশোরকে মারধর করার অভিযোগ ঠিক নয়। ওই সময় এক দল যুবক ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের আশেপাশে গন্ডগোল করছিল। ভোটদানে বাধা দিচ্ছিল। সেই অভিযোগ পাওয়ার পরে বুথ ও তার আশপাশ থেকে সবাইকে সরিয়ে দিচ্ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। তখন ওই কিশোর অসুস্থ হয়ে পড়ে। হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, “এখন ওই কিশোর অনেকটাই সুস্থ। তবে তার কোমরে ও ঘাড়ের কাছে চোট-আঘাত ছিল।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE