বয়ালের ৭ নম্বর বুথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নগেন্দ্র ত্রিপাঠী। নিজস্ব চিত্র।
নন্দীগ্রামের বয়ালে বুথে প্রবেশ করে পুলিশকে একের পর এক প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নবাণের মুখে পড়ে ‘নমনীয়’ নয়, বরং তাঁর চোখে চোখ রেখে একের পর এক উত্তর দিচ্ছেন এক আইপিএস অফিসার। নিজের উর্দির কলার টেনে তিনি বলেছেন,‘‘ম্যাডাম, খাকি পরে দাগ নেব না।’’ ওই আইপিএস কর্তার নাম নগেন্দ্র ত্রিপাঠী। বৃহস্পতিবার এমনই দৃশ্যের সাক্ষী হল নন্দীগ্রাম।
বৃহস্পতিবার ভোট চলাকালীন তৃণমূল অভিযোগ তোলে নন্দীগ্রামের বয়ালে, বয়াল মক্তব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭ নম্বর বুথে জোড়াফুল শিবিরের এজেন্টকে বার করে দেওয়া হয়েছে। ওই বুথে ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগও ওঠে বিজেপি-র বিরুদ্ধে। দুপুর সওয়া ১টা পর্যন্ত নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়ায় নিজের অস্থায়ী আস্তানা থেকে বেরিয়ে মমতা সোজা চলে যান বয়ালে। হুইলচেয়ারে বসে গ্রামের রাস্তায় ঢুকতেই নেত্রীকে কাছে পেয়ে বুথ দখলের নালিশ জানান শুরু করেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। বুথে ঢুকে পড়েন মমতা। তখন বুথের বাইরে তৃণমূল এবং বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে।
বয়ালের ওই বুথের ভিতরে মমতার মুখোমুখি হন নগেন্দ্র। তাঁকে সামনে পেয়ে মমতা প্রশ্ন করেন, ‘‘আমাকে একটা কথা বলো, ২০০ মিটারের মধ্যে কেউ থাকতে পারে না। তবে ওরা কী ভাবে ২০০ মিটারের মধ্যে আছে?’’ নগেন্দ্র উত্তর দেন, ‘‘এখন নেই ম্যাডাম। আপনি চেক করতে পারেন।’’ পরক্ষণেই মমতার তোপ, ‘‘২০০ মিটারের মধ্যে কী করে আছে? ওরা তো এই খানে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিচ্ছিল? সকাল থেকে সুনীলকে অনেকবার বলা হয়েছে। তোমাকেও অনেকবার বলা হয়েছে। কিন্তু...’’ পাল্টা নগেন্দ্র বলেন, ‘‘আমি এখানে পার্সোনালি ঘুরে দেখে গিয়েছি ম্যাডাম।’’ উত্তর শুনে কিছুটা উত্তেজিত গলাতেই মমতা পাল্টা বলেন, ‘‘কিছু লাভ নেই। ও সব তোমরা শিখিয়ে দাও। আমরা এখানে যাচ্ছি, সরে যা। অবজার্ভার যাচ্ছে, সরে যা। ফর নাথিং নন্দীগ্রামটাকে তোমরা ইস্যু করলে কিন্তু।’’ মমতার চোখে চোখ রেখেই জবাব দেন নগেন্দ্র। কয়েক পা এগিয়ে গিয়ে বলেন, ‘‘ম্যাডাম, এই খাকি পরে দাগ নিই না। আমি আপনাকে আশ্বস্ত করছি। এই পরে দাগ নেব না।’’ মমতাও নাছোড়। তিনি পাল্টা বলেন, ‘‘দাগ তো সবাই নিয়ে নিয়েছে।’’ নগেন্দ্রর জবাব, ‘‘আমি নেব না ম্যাডাম। আমি এখানে পার্সোনালি দেখে গিয়েছিলাম। এখানে এমন কোনও সমস্যা ছিল না। হতে পারে পরে জড়ো হয়েছে। সরিয়ে দিয়েছি। আপনাকে আশ্বস্ত করছি যে আমরা শান্তিপূর্ণ ভোট করাব। যে ভোটার আছে ওরা ভোট করাবে।’’
নগেন্দ্রর সঙ্গে কিছু ক্ষণ এমন টানটান কথোপকথন চালানোর পর, বুথ ছেড়ে বেরিয়ে যান তৃণমূলনেত্রী। পরে কমিশন বিবৃতি দিয়ে জানায়, প্রায় ঘণ্টা দেড়েক বয়ালের ওই বুথে কাটানোর পর, বেরিয়ে যান মমতা। তাঁকে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট পরিচলনার আশ্বাস দেন নগেন্দ্রও। এর আগে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও ‘দাবাং’ ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল নগেন্দ্রকে। তখন তিনি ছিলেন কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy