নন্দীগ্রাম দিবসে অধিকারী পাড়ায় শহিদ-স্মরণে তৃণমূল নেতা পূর্ণেন্দু বসু ও ব্রাত্য বসু (বাঁ দিকে) এবং বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।
নন্দীগ্রাম দিবস পালন করতে গিয়ে তৃণমূল, বিজেপি দু’পক্ষকেই শুনতে হল ‘গো-ব্যাক’ স্লোগান। কার্যত ভাগাভাগির ‘শহিদ দিবসে’র সাক্ষী রইল নন্দীগ্রাম।
এতদিন ১৪ মার্চ নন্দীগ্রাম দিবস পালন করত ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি। তাতে রাশ থাকত তৃণমূলের হাতে। এ বারই তাতে ভাগ বসিয়েছে বিজেপি। নন্দীগ্রামই কার্যত এ বারের ভোটের স্নায়ুকেন্দ্র। এখানে মুখোমুখি লড়াইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী। ফলে রবিবার নন্দীগ্রাম দিবসকে কেন্দ্র করে বাড়তি উৎসাহ ছিল। এ দিন শহিদ স্মরণে দু’পক্ষই পৌঁছেছিল জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘরে। দু’পক্ষকেই শুনতে হয়েছে ‘গো-ব্যাক’ স্লোগান।
এ দিন সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ গোকুলনগরের অধিকারীপাড়ায় শহিদ বেদিতে মালা দেন ব্রাত্য বসু, পূর্ণেন্দু বসু, দোলা সেনেরা। সঙ্গে ছিলেন আবু তাহের ও ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি শেখ সুফিয়ান প্রমুখ। তৃণমূলের তরফে নীল-সাদা সামিয়ানা টাঙিয়ে কীর্তনের মাধ্যমে শহিদ স্মরণ করা হয়। করা হয়েছিল ছোট প্যান্ডেল। সেখানে রাধাকৃষ্ণের পুজো করা হয়। ব্রাত্য বলেন, ‘‘২০০৭ সালে কোন নির্দিষ্ট পরিবারকে এখানে দেখা যায়নি। আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ তৃণমূলের কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর খুলে নেওয়া হয় নীল সামিয়ানা। সোনাচূড়ার ভাঙাবেড়ার দিকে রওনা হন তৃণমূল নেতৃত্ব। এই সময়ই ব্রাত্য-সহ অন্যদের উদ্দেশ্য করে ‘গো-ব্যাক’ স্লোগান দেন বিজেপি সমর্থকেরা। তবে পুলিশি হস্তক্ষেপে বাধা ছাড়াই ভাঙাবেড়া ব্রিজের কাছে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির মঞ্চে পৌঁছন ব্রাত্যেরা। ভাঙাবেড়ায় প্রতিরোধ কমিটির শহিদ বেদিতে আরেক দফা মালা দেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
গোকুলনগরে তৃণমূলের শহিদ-স্মরণ শেষ হওয়ার পরেই জয় শ্রী-রাম স্লোগান দিতে দিতে সেখানে পৌঁছয় বাইক বাহিনী। গঙ্গাজল দেওয়া হয় অধিকারীপাড়ার শহিদ বেদিতে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বাইক বাহিনীর অধিকাংশই এলাকার বাসিন্দা নন। কিছুক্ষণ পর হাজির হয়ে গোকুলনগরের শহিদ বেদিতে মালা দেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু। এরপর তিনি রওনা দেন সোনাচূড়ার শহিদ মিনারের দিকে। তবে শুভেন্দু সেখানে যাওয়ার আগেই শহিদ মিনারের সামনে তৃণমূল সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিক্ষোভরত তৃণমূল কর্মীদের দাবি, ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগসূত্র নেই। তাই বিজেপি নেতা শুভেন্দুর শহিদ মিনারে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। শুরু হয় ‘গো-ব্যাক’ স্লোগান। তৃণমূল সমর্থকেরা দাবি করতে থাকেন, মিরজাফর, গদ্দারদের জায়গা নেই শহিদ মিনারে। কিছুক্ষণ পরেই সেখানে পৌঁছন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কিছুক্ষণের মধ্যে অবশ্য পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়। শেষপর্যন্ত সোনাচূড়া শহিদ মিনারে গিয়ে মালা দেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘যাঁদেরকে নন্দীগ্রামের মানুষ এখন দেখতে পাচ্ছেন, গত বছর তাঁদের দেখা যায়নি। আগামী বছরও
তাদের দেখা যাবে না।’’ এর পাশাপাশি তিনি যোগ করেন, ‘‘যে সরকার অরুণ গুপ্তা ও তন্ময় রায়চৌধুরী মত গুলি চালানো পুলিশ অফিসারদের পদোন্নতি করে সেই সরকারের নন্দীগ্রামে শহিদ দিবস পালন করার অধিকার নেই।’’
দু’টি অনুষ্ঠানই হয়েছে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে। এতদিন সেই কমিটির মধ্যে ছিল না বিজেপি। শুভেন্দুর হাত ধরে কমিটির মধ্যে এল গেরুয়া শিবির। কমিটির সভাপতি শেখ সুফিয়ান শুভেন্দুর নাম না করেই বলেন, ‘‘আমরা নন্দীগ্রামের মানুষ হিন্দু মুসলিম ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলন করেছি। আজকে আমাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে আগুন জ্বালাতে চাইছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy