তনুশ্রী, যশ, পায়েল ও অঞ্জনা
এক পক্ষ লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়েছে পূর্ণ প্রস্তুতিতে। আর এক দল দফায় দফায় প্রার্থী ঘোষণা করছে। রবিবার তৃতীয় ও চতুর্থ দফার প্রার্থীর নাম ঘোষণা করল বিজেপি। সদ্য রাজনীতিতে পা রাখা তারকা প্রার্থীদের ময়দানে নামানোয় পিছিয়ে নেই গেরুয়া শিবিরও। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে তারা দাঁড় করিয়েছে পায়েল সরকার, তনুশ্রী চক্রবর্তী, যশ দাশগুপ্তর মতো ‘নবাগত’দের। পাশাপাশি টালিগঞ্জে অরূপ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বাবুল সুপ্রিয়র মতো ‘হেভিওয়েট’দের লড়াই ঘিরেও আগ্রহ তুঙ্গে। অন্য দিকে, বেহালার ‘ঘরের মেয়ে’ রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে দাঁড়াচ্ছেন পায়েল, যেখানে রত্নার স্বামী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নাম আশা করেছিলেন অনেকে। রাজনীতির ময়দানে তুলনামূলক ভাবে ‘নতুন’দের ভেবেচিন্তেই দল টিকিট দিলেও তাঁদের অনেকে নিজেরাই জানতেন না, কোন কেন্দ্রের প্রার্থী হবেন। বেহালা পূর্বের বিজেপি প্রার্থী পায়েল সরকার যেমন বললেন, ‘‘কোন কেন্দ্র থেকে লড়ব, সে ব্যাপারে আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করা হয়নি। তবে বেহালার মতো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রের দায়িত্ব নিশ্চয়ই ভেবেচিন্তেই দেওয়া হয়েছে।’’ বেহালার জলনিকাশি ও যানজট সংক্রান্ত সমস্যার কথা পায়েল জানেন। জয়ী হলে অভিনেত্রী চেষ্টা করবেন সেই সমস্যা সমাধানের। শোভন-জায়া রত্নার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে পায়েলের বক্তব্য, ‘‘রাজনীতিক হিসেবে রত্না চট্টোপাধ্যায়কে আমি সম্মান করি।’’ রত্নার বিরুদ্ধে শোভনকে প্রার্থী করা হলে তা পারিবারিক কেচ্ছার আকার নিতে পারত, তাই পায়েলের মতো গ্ল্যামারাস মুখকে দাঁড় করিয়েছে বিজেপি, মনে করা হচ্ছে এমনটাই।
হাওড়ার শ্যামপুর থেকে প্রার্থী হয়েছেন আর এক অভিনেত্রী তনুশ্রী চক্রবর্তী, যিনি মাত্র কয়েক দিন হল বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। প্রার্থী হয়েই নির্বাচনের হোমওয়র্ক শুরু করে দিয়েছেন তিনি। ‘‘আমার বাবা ও মায়ের দিকের বেশ কিছু আত্মীয় থাকেন ওই এলাকায়। আমি যে টিকিট পাব, সেটা আগে থেকে জানতাম না। দায়িত্ব পাওয়াটা সম্মানের,’’ বলছেন তনুশ্রী। জানালেন, গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার সময়েই তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন বন্ধু মিমি চক্রবর্তী এবং নুসরত জাহান। তবে নির্বাচনে লড়ার প্রসঙ্গে তাঁদের সঙ্গে আর কোনও কথা হয়নি তনুশ্রীর।
তিনি টিকিট পেতে পারেন, এমনটাই শোনা যাচ্ছিল। বিজেপি হতাশ করেনি যশ দাশগুপ্তকে। হুগলির চণ্ডীতলা থেকে বিজেপির হয়ে দাঁড়াচ্ছেন যশ। সদ্য রাজনীতিতে পা রাখা অভিনেতার কথায়, ‘‘চণ্ডীতলা এলাকার মানুষদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার কথা শুনেছি। ক্ষমতায় এলে সেই সমস্যার সুরাহার চেষ্টা করব প্রথমে।’’ এ ব্যাপারে নুসরতের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে যশের জবাব, ‘‘ওর কাছ থেকে কোনও শুভেচ্ছা পাইনি এখনও। কেন উইশ করেনি, সেটা ও-ই বলতে পারবে। ওকে দিদির পাশে, আমাকে মোদীর পাশে পাবেন।’’ প্রসঙ্গত, চণ্ডীতলায় যশের প্রতিদ্বন্দ্বী সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের মতো পোড়খাওয়া রাজনীতিক।
সোনারপুর দক্ষিণ থেকে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়েছে যখন খবর পেলেন অঞ্জনা বসু, তখন তিনি খড়্গপুরে, প্রচারে। ‘‘লক্ষ লক্ষ মানুষের দায়িত্ব এখন আমার কাঁধে। গত দু’বছর ধরে বিজেপি করার ‘অপরাধে’ ছোট পর্দা থেকে সরে আসতে হয়েছে, সেটাও খুবই যন্ত্রণার। ক্ষমতায় এলে এটা পাল্টানোর চেষ্টা করব।’’ অঞ্জনার বিপরীতে লাভলি মৈত্রও তাঁর মতোই ছোট পর্দার পরিচিত মুখ, তবে অভিজ্ঞতায় নতুন। বৃহত্তর লড়াইয়ের প্রেক্ষিতে লাভলিকে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সে অর্থে দেখছেন না অঞ্জনা। বললেন, ‘‘ও আমার স্নেহের। সুযোগ পেলে ও হয়তো নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করতে পারত ভবিষ্যতে, কিন্তু এই নির্বাচনের পরে সেই সুযোগটাই হয়তো আর পাবে না।’’ অন্য দিকে, তৃণমূলের নবীন প্রার্থী লাভলি বললেন, ‘‘এলাকায় গিয়ে বুঝেছি, এখানকার মানুষ বিজেপিকে আনবে না। তাই অঞ্জনা বসুকে নিয়ে একেবারেই ভীত নই।’’ খড়্গপুর থেকে প্রার্থী হয়েছেন হিরণ, সে ঘোষণা আগেই হয়েছে।
বিজেপি-র সম্পূর্ণ প্রার্থীতালিকা এখনও প্রকাশিত হয়নি। অন্য দিকে তৃণমূল ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু করে দিয়েছে। রবিবার দেব টুইট করে জানিয়েছেন, দলের হয়ে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন তিনি। নতুন-পুরনো মিলিয়ে লড়াই ইতিমধ্যেই জমজমাট, যার শেষ দেখা যাবে ২ মে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy