নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাংলায় ‘দাঙ্গাবাজ’দের পাশে কে দাঁড়িয়েছে, ‘তোষণ’-এর নীতি কে নিয়েছে, কেন পুলিশ ‘দাঙ্গাবাজ’দের সমর্থন করেছে— রাজ্যে পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণের দিনে এমনভাবেই তৃণমূলকে ‘দাঙ্গা অভিযোগ’-এ বিঁধলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মুখ্যমন্ত্রী বরাবর ‘বিজেপি স্বৈরাচারী দাঙ্গাবাজদের দল’ বলে আক্রমণ করেন। নীলবাড়ির লড়াইয়ে প্রচারে এমন কথা অনেকবারই বলতে শোনা গিয়েছে মমতাকে। শনিবার আসানসোলের জনসভা থেকে সেই আক্রমণেরই যেন জবাব দিলেন মোদী।
শনিবার মোদী তাঁর বক্তব্যে ৩ বছর আগে আসানসোল-রানিগঞ্জ এলাকায় হওয়া গোষ্ঠী হিংসার কথাও মনে করান। সমাবেশে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনাদের ৩ বছর আগের রামনবমীর কথা মনে আছে? আসানসোল, রানিগঞ্জের দাঙ্গা কে ভুলতে পারে? এই সব দাঙ্গায় শত শত মানুষের জীবনের পরিশ্রম পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি গরিবের হয়েছে। রাস্তায় দোকান লাগানো ছোট ব্যবসায়ীদের হয়েছে।’’ এর পরেই ৩টি প্রশ্ন তোলেন মোদী। বারবার সেই প্রশ্নগুলি করে উত্তর চান জনতার থেকে। মোদী বলেন, ‘‘দাঙ্গাকারীদের কে সমর্থন দিয়েছিল? তোষণের নীতি কে গ্রহণ করেছে? কার জন্য পুলিশ দাঙ্গাবাজদের পাশে দাঁড়িয়েছে?’’ বারবার প্রশ্ন করে জনতার উত্তর শুনে মোদী বলেন, ‘‘সবার একটা জবাব। সবাই বলছে। দিদির কারণে, দিদির কারণে।’’
শনিবার মোদীর ভাষণের অধিকাংশ অংশ জুড়েই ছিল মমতাকে আক্রমণ। তিনি মমতাকে ‘অহঙ্কারী’ বলে উল্লেখ করে জাবি করেন, কেন্দ্রের ডাকা বৈঠকে উনি আসেন না। করোনা পরিস্থিতি সামলাতে সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে ডাকা বৈঠকে বাকিরা উপস্থিত থাকলেও উনি গরহাজির থাকেন। নীতি আয়োগ থেকে গঙ্গার সৌন্দর্যায়ন নিয়ে কেন্দ্রের বৈঠকে মমতার অনুপস্থিতি নিয়ে অভিযোগ তুলে মোদী বলেন, ‘‘এক আধবার না এলে বোঝা যায় যে কাজে আটকে গিয়েছেন। কিন্তু বারবার না আসায় একটা জিনিস বোঝা যায়, উনি বাংলার মানুষের উন্নয়নের জন্য সময় দিতে চান না।’’ মমতা নিজেকে সংবিধানেরও উপরে বলে মনে করেন অভিযোগ তুলে মোদী বলেন, ‘‘দিদির চোখে অহঙ্কারের পর্দা।’’ সেই সঙ্গে বলেন, ‘‘এ বার এমন সার্টিফিকেট দেবে যেটা সারা জীবন ঘরে ঝুলিয়ে রাখতে পারবেন দিদি। ‘প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী’ সার্টিফিকেট দেবে বাংলা। দিদি সেটা নিয়ে ঘুরবেন।’’
শুক্রবারই মমতার একটি অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ্যে এনেছে বিজেপি। সেই অডিয়োতে শীতলকুচিতে মৃতদের নিয়ে মিছিলের কথা বলা হয়েছে। তৃণমূল এ নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগও তুলেছে। শনিবার সেই প্রসঙ্গও টেনে আনেন মোদী। বলেন, ‘‘মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি মমতার পুরনো অভ্যাস। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে ক্ষমতায় থাকতে দিদি মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছেন। অডিয়ো ক্লিপেই সেটা স্পষ্ট।’’
মমতাকে আক্রমণ করতে মোদী শনিবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য’-কে বদলে বলেন, ‘‘দিদির আমলে বাংলায় ‘চিত্ত যেথা ভয়াক্রান্ত’ হয়ে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy