এমন পাইপ বিছিয়ে দেওয়া হয় জল-সংযোগ। মহেশপুরে। নিজস্ব চিত্র।
‘জল দাও, ভোট নাও’, এই মর্মে স্লোগান উঠেছিল পশ্চিম বর্ধমানের বারাবনি বিধানসভার সালানপুর ব্লকের দেন্দুয়া পঞ্চায়েতের মহেশপুর ও বাজনডাঙা গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে দাবি, জল-সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করে স্থানীয় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত। কিন্তু ভোটে দুই গ্রাম থেকেই তৃণমূল বিজেপির তুলনায় ভোট কম পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ওই ‘জল-সংযোগ’ কেটে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসীর একাংশ। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। অভিযোগ মানেননি সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান থেকে শুরু করে সদ্য নির্বাচিত তৃণমূল বিধায়ক।
তৃণমূল পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতের দু’টি গ্রামে প্রায় ১,৩৫০ জন ভোটার রয়েছেন। তাঁরা আগে জল, পরে ভোটের দাবি জানান। এর পরেই পঞ্চায়েতের তরফে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের (পিএইচই) জল-সংযোগের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু দেখা যায়, গত মঙ্গলবার সকাল থেকে আচমকা জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই দুই গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, পাইপ পাতা রয়েছে। কিন্তু রাস্তার পাশে বসানো কলগুলি থেকে জল পড়ছে না। এর ফলে, এলাকাবাসীকে প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ উজিয়ে কল্যাণেশ্বরী রোড এলাকা থেকে জল বয়ে আনতে হচ্ছে।
কিন্তু কেন এই ঘটনা? স্থানীয় বাসিন্দা গোবিন্দ মোদী, হরি টুডুদের অভিযোগ, ‘‘জল আসায় আমরা খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের এখানে ভোটে হেরে গিয়েছে তৃণমূল। সেই রাগেই জল কেটে দেওয়া হয়েছে।’’ ঘটনাচক্রে, ভোটের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ওই দুই গ্রামেই মোট ভোটের প্রায় ৮০ শতাংশ পেয়েছে বিজেপি।
মহেশপুরের বাসিন্দা তথা সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য মাখনি মুর্মুর অবশ্য দাবি, ‘‘কেন জল বন্ধ, তা জানি না। খুবই অবাক হয়েছি। দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছি। এই গ্রামে দল হেরেছে বলে যদি জল-সংযোগ ছিন্ন করে দেওয়া হয়, তা হলে কিন্তু বাসিন্দারা রেগে যাবেন।’’ তবে দেন্দুয়া পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান রঞ্জন দত্তের দাবি, ‘‘কারিগরি ত্রুটির কারণেই বিপত্তি ঘটেছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে।’’
বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার আহ্বায়ক শিবরাম বর্মনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমাদের যাঁরা ভোট দিয়েছেন, তাঁদের নানা ভাবে সমস্যায় ফেলার চেষ্টা করছে তৃণমূল।’’ তবে সালানপুর থেকে নির্বাচিত জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ (ক্ষুদ্র শিল্প) তথা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মহম্মদ আরমান এবং বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় অভিযোগ অস্বীকার করে বিষয়টি নিয়ে খোঁজ-খবর করার আশ্বাস দিয়েছেন।
এ দিকে, স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি, ওই জল-সংযোগ ‘অস্থায়ী’ ছিল, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পাইপ ‘ফুটো করে’, পিভিসি পাইপ বিছিয়ে জল আনা হয়েছিল। যদিও, তা স্বীকার করেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। বিষয়টি নিয়ে পিএইচই-র এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আশিস নস্করের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওই দুই গ্রামে জল দেওয়া এবং পরে তা ছিন্ন করে দেওয়া, এ সব বিষয়ে আমরা কিছু জানি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy